• Uncategorized
  • 0

সিরিজ কবিতায় নৈঋত সরকার

প্রভু নষ্ট হয়ে যাই – ১

তুমি প্রচন্ড গরমে তেতে পুড়ে এসেছ ঘরে
ঘামে সপসপ করছে শরীর!
আমার তখন ইচ্ছে হয় তোমার নোনতা বুকে আলতো চুমু দিয়ে, শরীরের উগ্র গন্ধটা গায়ে মেখে নিতে।
ধরো তুমি স্নান করছো কুয়োতলায়, পরনে লাল রঙের গামছা
বালতির পর বালতির জল ছুয়ে যাচ্ছে পুরুষ্টু শরীরটা,
দরজায় হেলান দিয়ে দেখছি আমি
তখন আমার ইচ্ছে হয় পিছন দিক থেকে তোমায় জড়িয়ে ধরতে, আলতো কামড় বসাতে ইচ্ছে হয় ঘাড়ে গলায়!
তুমি স্নান সেরে ঘরে এসেছ, চুল থেকে জলের ফোটা পড়ছে মুখে, ছুয়ে যাচ্ছে ঠোঁট।
তখন আমার ইচ্ছে হয়, ইচ্ছে হয়
বলতে ভীষণ লজ্জা হচ্ছে
ইচ্ছে হয়
নষ্ট হয়ে যেতে।

প্রভু নষ্ট হয়ে যাই – ২

ঝড়ের রাত,দুর্যোগের ঘনঘটা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কৃষ্ণাচতুর্দশীর কালো নিশি
প্রবল বৃষ্টি হাওয়ার সঙ্গতে সেধেছে রাগ মালকোশ
যেন প্রকৃতিসতী উদাত্ত কন্ঠে গাইছে আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার।
আমি জানালা খুলে বসে আছি, তাকিয়ে আছি পথের পানে,
আর শিহরিত হচ্ছি বৃষ্টির ছিটের সাথে শীতল বাতাসের কামুক স্পর্শে।
এমন সময়,
ঝড়ের বুকচিড়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলে তুমি
ভিজে সপসপে হয়ে যাওয়া শরীর নিয়ে ঝড়ের সাথে মুখোমুখি হয়ে তোমার যুদ্ধ, আমি অবাক চোখে দেখছিলাম।
পোস্টের অন্ধকার মাখানো বৃষ্টিভেজা আলোয় আমি লক্ষ্য করেছিলাম তোমার ভেজা চুল, ঠোঁট চুইয়ে পড়া বারিধারা, গোটানো প্যান্ট, সেই লোমশবুক।
আমি লক্ষ্য করেছিলাম তোমার ব্যাস্ততায় ভরা ব্যাকুল অথচ তীক্ষ্ণ দুটি চোখ।
মনে আছে?
ক্ষণিকের তরে চোখাচোখিও হয়েছিল আমাদের।
মেঘের ছাদনাতলা আর বিদ্যুৎতের আলো সাক্ষী ছিল আমাদের শুভদৃষ্টির,
বাজ পড়ার শব্দে চমক ভেঙেছিল দুজনার,অব্যক্ত চোখের ঈঙ্গিতে বিদায় নিয়েছিলে তুমি।
আমি তখন কিছুই বলতে পারিনি।
জানো? আমি সারারাত ঘুমোইনি! হাতড়ে বেড়িয়েছি তোমার বৃষ্টি মাখা সেই মুখ!
পেতে চেয়েছি সেই অর্ধনগ্ন ভিজে শরীরের উষ্ণ স্পর্শ!
নষ্ট হয়ে যেতে চেয়েছি রাতের প্রতিটি ক্ষণে।

প্রভু নষ্ট হয়ে যাই – ৩

বৈশাখের অন্তিম লগন, গনগনে আঁচে জ্বলতে থাকা সূর্য স্বয়ং বিরাজমান অম্বর মাঝে।
নিস্তব্ধ গাছেরা চুপচাপ মাথা নুইয়ে দাড়িয়ে আছে
মহাকালের নীরব সাক্ষীদার হিসেবে!
ধূ ধূ মাঠ! দুধারে,পিচঢালা কালো রাস্তা চলে গেচে দিগন্তরেখার ধার ঘেষে।
জনহীন রাস্তায় একহাতে সাইকেল, আরেক হাতে ছাতাকে সঙ্গী করে আমি পাড়ি জমাচ্ছিলাম
সুদূরের পথে
একঝলক দেখেই আমি থমকে গিয়েছিলাম, দাড়িয়ে পরেছিলেম রাস্তার ঠিক মাঝখানে
রাস্তার গা ঘেষে থাকা বড় পুকুরের ধারে বু্ড়ো বটের নীচে বসে ছিলে তুমি
অনেকক্ষণ চোখ ফেরাতে পারিনি বিশ্বাস করো!
রোদে পুড়ে তামাটে হয়ে যাওয়া আদুল গা, সেই ভ্রমর কালো জোড় ভ্রু,
গোলাপি কালো ঠোঁটের সেই টান চাইলেও এড়াতে পারিনি।
আমি অবাক বিস্ময়ে দুচোখ ভরে দেখছিলাম তোমায়
বিধাতার নিপুণ হাতে গড়া, যেন স্বয়ং মনোহর কাম
হঠাৎই চোখে চোখ ঠেকিয়ে তুমি তাকালে আমার দিকে
বললে কে? কি চাই?
আমি কিছু বলতে পারিনি সেদিন, কেবল দ্রুতপদে প্রস্থানকালে মনে মনে বলেছিলাম, তোমায় চাই
তোমার ওই সর্বনেশে আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়ে যেতে চাই!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।