অবশেষে পুলিশের গাড়ি ঢুকলো।দরজা ভেঙে দেখা গেল সিলিং ফ্যান এ দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।গ্রামের বহু মানুষের জমায়েত-অনেকেই হা হুতাশ করতে থাকে।কিছুক্ষণ পর লাশটাকে বার করা হলে,ভেতরে পুলিশ তেমন কিছু না পেলেও একটা মূল্যবান ডায়েরী আর একটা মোবাইল পেলেন।পুলিশ উনার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীকে বললেন-ভদ্রলোকের পরিবারকে খবর দিতে।তারা কুম্ভিরাশ্রু ঝরিয়ে মোবাইলে খবর দিলেন।এবার পুলিশ পোষ্টমর্টেম করতে নিয়ে যাওয়ার আগে স্হানীয়দের একটু জিজ্ঞাসা বাদ করে ডায়েরী ও মোবাইল টা দেখছিলেন।
সুব্রত রায় একজন খুব ভালো ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার।ছোটবেলায় খুব একটা সচ্ছলতা না থাকলেও খাওয়া পড়ার অভাব হতো না।বাবা একজন সম্পন্ন চাষী।পড়াশোনা ছোটবেলায় খুব ভালো ছিল বলে শিক্ষক মহাশয়রা খুবই ভালোবাসতেন।গ্রামের চারটি ছেলে-সুব্রত, অরূপ, রাজা ও জীবন।প্রত্যেকেই একে অপরের প্রাণের বন্ধু ছিল।সকাল হলেই এরা ফুটবল খেলে ফেরার পথে গ্রামের মোড়ে নরেনদার দোকানে গরম গরম রুটি ও এক ভাঁড় চা নিয়ে পরম তৃপ্তিতে খেতে খেতে জীবনের যত আলোচনা পর্ব সারতো।কোনো দিন পয়সা দিত,আবার কোনোদিন ধারে খেয়ে পরে ম্যানেজ করে দিয়ে যেত।
এইভাবেই জীবনে বড় হয়ে সুব্রত ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার হয়ে পাড়ি দিয়ে দিল ব্যাঙ্গালোর, অরূপ একটা মুদির দোকান, রাজা কিছু না পেয়ে চাষাবাদ ,আর জীবন পাশের গ্রামের একটা প্রাইমারি স্কুলে যোগ দিল।ওদের সময়ে মোবাইল তেমন ছিল না বলে,পরস্পরের সাথে যোগাযোগ ও তেমন ছিল না।তবে কালেভদ্রে পূজো, অনুষ্ঠানে এলে জমিয়ে আড্ডা হতো।এখন নরেনদার চায়ের দোকান ও নেই।তার মৃত্যুর পর ছেলেটা একটা কারখানাতে কাজে ঢুকেছে।
সুব্রত চাকরি পাওয়ার বছর দুয়েকের মধ্যেই বউকে নিয়ে পাড়ি দেয় ব্যাঙ্গালোর।প্রথম প্রথম ভীষণ সুখের ছিল সেই দিনগুলো-সপ্তাহের একটা দিন বউ-রমাকে নিয়ে সিনেমা দেখা,বাইরে খাওয়া, ঘোরানো কিছুই বাকি রাখেনি সুব্রত।রমা ও নিজেকে খুব সৌভাগ্যবতী মনে করত।একদিন তো আবেগের বশবর্তী হয়ে জিজ্ঞাসা ই করে ফেললো–আচ্ছা তুমি আমাকে এত ভালোবাস,এইরকম সারাজীবন একইভাবে এত ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবে তো?সুব্রত মৃদু হেসে কাছে এসে বুকে টেনে নিয়ে বলে–পাগলি একটা!হ্যাঁ, সারাজীবন আমি বটবৃক্ষের মতো তোমাকে ও আমাদের সন্তানকে আগলে রাখবো,একইভাবে ভালোবাসবো।কিন্তু তুমি যেন সারাজীবন এমনই শান্ত নদীর মতো ধীর, স্হির হয়ে আমার জীবনে প্রবহমান থাক।
সেবার দুর্গাপূজাতে ওরা গ্রামে এলোনা, কারন ওদের একটা ফুটফুটে মেয়ে হয়েছে কয়েকদিন আগে।তার আগমনে যেন সংসার সমুদ্র আরো বেশি উচ্ছল,প্রাণবন্ত হয়ে উঠলো।দুজনে মেয়েকে নিয়ে প্রেমের জোয়ারে গেল ভেসে।দেখতে দেখতে চারবছর অতিক্রান্ত-মেয়ে স্নিগ্ধার আধ আধ বুলিতে বাড়ি সরগরম হয়ে উঠতো।এইসময় ই হঠাৎ আবার দ্বিতীয় সন্তান–ছেলে হওয়ায় স্নিগ্ধা ও খুব খুশি ভাইকে পেয়ে।কিন্তু প্রবহমান জীবনের গতিতে রমার ব্যস্ততা গেল বেড়ে।ছেলে, মেয়ে মানুষ করা, স্বামী, সন্তান, স্কুল, টিফিন এইসব করতে করতে কালের প্রবাহে সে যেন একটা যন্ত্রমানবী হয়ে গেল।সুব্রত ও সারাদিনের পরিশেষে বাড়ি ফিরে বাচ্চার হোমওয়ার্ক এইসব নিয়ে বেশ একরকম চলে যাচ্ছিল।
কিন্তু মাঝেমধ্যে রমার এত লাক্সারি জীবনযাত্রা সুব্রতকে কষ্ট দেয়।সেই সদ্য বিবাহিত রমা আর আজকের রমার মধ্যে যেন আকাশ পাতাল পার্থক্য।ছেলেমেয়েদের এত লাক্সারি ভাবে মানুষ করার প্রবণতা দেখে সুব্রত র নিজের ছোটবেলার কথা মনে পড়ে।ওরা তিন ভাইবোনে কষ্ট করে মানুষ হলেও মনে আনন্দ ছিল, একে অপরের সঙ্গে ভাগ করার মানসিকতা ছিল।কিন্তু স্নিগ্ধা ও ঋকের মধ্যে এই জিনিসের বড় অভাব।কোনো কিছু ভাগ করা নেই, নতুন জিনিস পাওয়ার আনন্দ বা সেটা যত্ন করে রাখার মানসিকতা ও নেই।সুব্রত রমাকে অনেকবার বলেছে––-এত এত জিনিসপত্র না চায়তেই ওদের দিওনা।ওরা এর মর্যাদা দিতে শিখবে না।ওরা পেয়ে পেয়ে এমন হয়ে গেছে, না পাওয়ার কষ্ট জানে না বলে হয়তো এমন একদিন আসবে,না পেলে তখন অন্য রূপ নেবে।তাই বলছি সাবধান হও।
রমা একথা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে উড়িয়ে বলে–কী যে বলো না তুমি? এমন কিছু ই করবে না আমার সন্তানেরা।তাছাড়া আমরা কষ্ট করেছি বলে কি ওদেরকে ও সামর্থ্য থাকা স্বর্তে ও কষ্ট দেব?
সুব্রত বুঝতে পারে–‘স্নেহ অতি বিষম বস্তু’!তারপর আবার অন্ধ স্নেহ তো আরো ভয়ংকর।তাই আর কথা না বাড়িয়ে নীরবতা ই শ্রেয় মনে করে নীরব থাকা শুরু করলেন।
এইভাবে জীবনের বহু সময় চলে গেল ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে।ছেলে বর্তমানে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ছে।আর মেয়ে এম এস সি কমপ্লিট করে-এম ফিল ফর্মফ্লাপ করেছে।এদিকে নেটে ও কোয়ালিফাই করেছে।
এবার পূজোতে গ্রামে যাওয়ার কথা রাতে খেতে বসে বলাতে সুব্রত দেখলো, সবাই চুপ।কেউ একটা কথা ও না,এমন কী রমা ও না।আজ ছেলে মেয়ের, রমার এ আচরণ বডড পীড়াদায়ক।রাতে শুয়ে শুয়ে তিনি ভাবছে -রমা ও কী করে ভুলে গেল সেই সোঁদামাটির গন্ধ! শরতের ভোরে শিউলির সুভাষ!শীতের সেই সকালের গরম গরম আখের রস,খেজুর গুড় আজও অমৃত।সকালে খেলে ফেরার পর চায়ের দোকানের সেই গরম গরম চা,রুটি আজ ও তিনি মিস করেন।
আ হা কত স্বপ্ন ছিল এবছর পূজোতে সবাই মিলে গিয়ে খুব আনন্দ করে আসবে।তারপর ভবিষ্যতে ছেলেমেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে, তাদের বিয়ে থা দিয়ে, বাকীজীবনটা গ্রামে গিয়ে কাটিয়ে দেবে।কিন্তু জানি না,রমা যাবে না।হয়তো শেষজীবনটা একাই কাটাতে হবে ওখানে।এইসব ভাবতে ভাবতে ঘুম আসে একটা সময়।
অবশেষে পূজোর একমাস আগে রিটায়ার্ড হলেন তিনি।এতে অবশ্য খুব একটা দুঃখ নেই, গ্রামে গিয়ে বেশি দিন থাকতে পারব ভেবে।এর মাঝে টাকা পয়সা সব যথাস্থানে রেখে রমাকে সব বুঝিয়ে পূজোর তিনদিন আগে গ্রামের বাড়িতে উপস্থিত।ভাই,ভাইয়ের বউ এত জিনিসপত্র আনা দেখে যতটা খুশি হলো,ততটাই চুপসে গেল এবার মাসখানেক থাকবে জেনে।তাদের মুখগুলো দেখে সুব্রত বাবু ফন্দি করে বলে–আমি থাকব বৌমা।কিন্তু আমি নিজে রান্না করে খাব।
ওদের কথাটা শুনে আনন্দ হলেও উপরে বলে –মানে?
—-মানে আর কিছুই নয় ভাই।আমি সারাদিন করবো কী?তাই নিজের মতো একটু ফুটিয়ে নিতে আমার কোনো অসুবিধা হবে না।ছোট গ্যাসটা আছে-দিব্যি হয়ে যাবে।
ভাই বললো –কিন্তু দাদা লোকে বলবে কী?আমরা থাকতে তুমি কষ্ট করবে?
–ওসব লোকের কথা ছাড় তো!তাছাড়া আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো।এ নিয়ে তোরা মন খারাপ করিস না।
কথাটা ভাই ও ভাই বউয়ের খুব মনে ধরলেও বাইরে প্রকাশ না করে ছোট বৌমা বলে–সে কি দাদা!আমি থাকতে আপনি কেন রান্না করবেন?তাছাড়া দিদিকে কী জবাব দেব যে,আমি দাদাকে দুটো রান্না করে খাওয়াতে পারলাম না?
-ওসব নিয়ে ভেবনা।তাছাড়া তোমার দিদি জানবে কী করে?
এরপর আর কেউ কোনো দ্বিরুক্তি না করে যে যার মতো মেনে নেয়।সুব্রত নিজে বাজার করে আনে–তা থেকে মাছ,সব্জি মাঝেমধ্যে ভাইকে দেয়।এতে ওরা ভীষণ খুশি।এইভাবে শুরু টা করে এবার পুরাতন বন্ধুদের দেখা করে,আবার তারা চায়ের দোকানে বসে সেই পুরোনো আড্ডায় ফিরে যায়।বেশ আনন্দে কাটছিল দিনগুলো-যেন আবার সংসারের ঘেরাটোপ থেকে নবজন্ম হলো।ক্রমে দেখতে দেখতে পূজো ও চলে এলো।এ কদিন সুব্রত দারুণ ব্যস্ত-সমস্ত দায় দায়িত্ব নিজ কাঁধে নিয়ে যেন সেই যৌবনের সুব্রত।সমস্ত খরচাপাতি দিয়ে এবার পূজোকে যেন, অন্যমাত্রা দিয়েছে-যার জন্য সবাই তার নামে জয়ধ্বনি করছে।এইভাবে চারদিন কেটে গেল, সুব্রতর আবার বাচ্চা বয়সের মতো মন খারাপের পালা শুরু হলো।কারণ তার যাওয়ার দিন ও তো ঘনিয়ে আসছে।কালিপুজার পরই যাওয়ার সময় যেন খুব তাড়াতাড়ি ই চলে আসছে।এবার কালিপুজার আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে পড়ে,মাঝে একদিন দিদিকে ও নিমন্ত্রণ করে আসে এবং ভাইফোঁটা নিতে যাওয়ার কথা ও দিয়ে আসে।এইভাবে রমাকে,ছেলেমেয়েদের একবার ফোন করে খোঁজ নিয়ে বিন্দাস জীবন-বন্ধুদের সাথে একবার আড্ডা, সারাদিন হৈ হুল্লোরে বেশ চলছিল।
একদিন মর্নিং ওয়াকে গিয়ে ফেরার সময় দেখে একটা সাত আট বছরের বাচ্চা চা রুটি খাচ্ছে।সুব্রত সেই বাচ্চাটার চায়ে ডুবিয়ে ডুবিয়ে রুটি খাওয়া দেখে –সেই ছোট্ট বেলায় নিজের কথাই স্মৃতিপটে ভাসছে।হঠাৎ চেতন হতেই দেখে বাচ্চাটা ভেতরে ঢুকে গেছে।পরদিন ফেরার পথে একই দৃশ্য দেখে কিচ্ছক্ষণ দাঁড়িয়ে বাচ্চাটাকে জিজ্ঞাসা করে–এই চা রুটি তোমাকে কে করে দেয় বাবু?
বাচ্চাটা প্রথমে চমকে গেলেও পরে উত্তর দেয়–মা।
–তোমার মা কোথায়?
–মা ভেতরে কাজ করছে।ডাকবো?
–হ্যাঁ ।ডাক তো! বলার আগেই বাচ্চাটা ছুটে মাকে ডাকতে চলে গেছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখে সবুজপাড় সাদা শাড়িতে
একজন চল্লিশোর্ধ্ব মহিলাকে আঁচল ধরে টানতে টানতে আনছে।মহিলাটি সুব্রতকে দেখে তাড়াতাড়ি ঘোমটা টা আরেকটু টেনে জিজ্ঞাসা করে–কিছু বলছেন আমায়?
–হ্যাঁ মা।তোমার স্বামী কতদিন হলো গত হয়েছেন?বাড়িতে আর কে কে আছেন? এই প্রশ্ন গুলো করছি বলে কিছু মনে করলে না তো?
–না না,কিছু মনে করিনি।আমার স্বামী দুবছর হলো মারা গেছে।আমি বাড়ি বাড়ি রান্না করে এই ছেলেটাকে মানুষ করছি।
-ও আচ্ছা।তোমাকে আঘাত দিয়ে ফেললাম—–এভাবে কেন বলছেন?কিন্তু আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না,আগে এইগ্রামে দেখেছি বলেও মনে পড়ছে না!
–আমি সুদামের দাদা।আমি এখানে থাকি না।পূজোতে একবার করে আসি।তাই তোমার না চেনার ই কথা।যাই হোক তোমার সাথে একটা কথা ছিল ।
–কী কথা বলুন?হ্যাঁ ,চলুন তার আগে ভেতরে এই টুলটাতে বসুন।এবার বলুন।
সুব্রত আমতা আমতা করে বলে –না,মানে বলছিলাম কী যে,এই যে বাচ্চাটি চা রুটি খাচ্ছিল।তুমি কী মা আমায় প্রতিদিন এই চা রুটি বানিয়ে দিতে পারবে?
ভদ্রমহিলা শহরে বাবু চা রুটি খাবে শুনে আকাশ থেকে পড়ে।নিজের মনেই ‘হা’হয়ে যায় কিছু ক্ষণ।
–কী মা!তুমি কী এটা বলায় অসন্তুষ্ট হলে?আসলে সেই ছোট্ট বেলায় আমি খুব চা রুটির ভক্ত ছিলাম।আজ ও ইচ্ছে করে,কিন্তু বাড়িতে ওখানে তো এসবের বালায় নেই।তাই ভাবছিলাম তুমি যদি??
–কী কিন্তু মা?আমি টাকা দিয়ে দেব ।
–না,না তা বলছি না।আমি আসলে সকাল দিকে সময় পাইনা রুটি করার,বাড়ির কাজ সেরে রান্না করার কাজে যেতে হয়।তাই বলছিলাম যদি সন্ধ্যায় করেদি আপনার কি অসুবিধা হবে?
–না,না।আমি বরং সন্ধ্যায় এসে খেয়ে যাব।কেমন।
-বেশ।ঠিক আছে।
এরপর থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় এসে চা,রুটি খেয়ে যায়।ব্যস কয়েকদিন যেতে না যেতেই শুর হয়ে গেল কদর্য আলোচনা।একজন বিধবা মহিলার বাড়ি উনি সন্ধ্যায় কী জন্য আসেন?নিশ্চয়ই কিছু ব্যাপার আছে!শুরু হয়ে গেল রটনা, অনুসন্ধান।ভাই,বৌমার হাজার কৈফিয়ত এর জেরা পর্যন্ত শুনতে হলো।খবরটি একেবারে নিমেষের মধ্যে ব্যাঙ্গালোর অবধি পৌঁছে গেল।স্ত্রী, ছেলে মেয়ে কেউ কথা শোনাতে বাকি রাখলো না?রমার কথা তো কুরুচিতে পরিপূর্ণ! ছিঃ ছিঃ এইবয়সে এসে এসব কথা?এমন কী রমাও?রমার ওই কথাগুলো ইকো হচ্ছে আর শরীরটা ঘিনঘিন করছে।
–এই বুড়ো বয়সে ভিমরতি তোমার?যেই একটা বিধবা মেয়ে দেখেছ অমনি সব রস বেরিয়ে পড়লো?
ছি:ছিঃ এগুলো রমার কথা? এতদিন এরা আমার সবছিল প্রিয়জন !আর আজ এদের এই কথাবার্তা?আমি কী শুধু ই প্রয়োজন ছিলাম-প্রিয়জন না? মানুষের মন এত নিচ হতে পারে?মানুষ বড় বেইমান, বিশ্বাসঘাতক, স্বার্থপর, সমালোচক এইসব ভেবে ভেবে জীবনের প্রতি চরম বিতৃষ্ণা এলো।
পরদিন সকালে পুলিশ এসে লাশ বের করলো।প্রচুর মানুষের জমায়েত ।বিচিত্র মানুষ চরিত্র- মৃত মানুষের ও সমালোচনা।এমন সময় সেই বাচ্চা ও তার মা ও এসে হাজির।ওই বিধবা মহিলাটি দেখেই কাঁদতে শুর করে–এ কী করলে বাবা!কেন এই মেয়েটার কথাও ভাবলে না?আর কাকে আমি চা,রুটি খাওয়াবো?
সকলে প্রায় একসঙ্গে চিৎকার করে ওঠে–মানে?মহিলাটি তখন কাঁদতে কাঁদতে সব কথা বলে যে,উনি প্রতিদিন সন্ধ্যায় আমার কাছে চা,রুটি খেতে আসতেন।
কথাটা শুনে সবাই স্তম্ভিত।একে অপরের দিকে ‘হা ‘করে তাকায় সবাই।ভাই,ভাইবৌমা শুনে চুপ।
পুলিশ অফিসার বিজনবাবু ডায়েরী টা নিয়ে বাইরে এসে বলেন–হ্যাঁ।সব সত্যি।এই ডায়েরী টা তার প্রমাণ।আমি যেটুকু শেষটা পড়লাম – তাইই!