গুচ্ছকবিতায় প্রভাত মণ্ডল
তুমি মোর দ্বারে
গহন নিশি সাথে ঘুমঘোর
আঁধো আঁধো জাগা নয়ণে ,
জীবন প্রভু তুমি মোর দ্বারে
আসিলে নধর নগ্ন চরণে ।
কি কহিলে এবে ক্ষণিকের তরে
জুড়ায়ে বক্ষ ব্যথা ,
স্মিতমুখে হাসো লাজুক বদনে
মোর ভরিল আঁখির পাতা ।
ধরণী পরেতে তোমার তরণী
ভীড়িয়াছে মোর দ্বারে ,
উঠিবারে কও ডাকিয়া বারেক
লয়ে যাবে বুঝি ওই পারে ।
যেথা নাহি ব্যথা দুঃখ ও শোক
মানব জনম নিশি ,
নাহি হিংসা দ্বেষ আর কপট চাতুরী
ঘৃণার সুপ্ত রাশি ।
লয়ে যাও মোরে তুমি কোলে করে
হে মোর জীবন দেবতা ,
ডাকি বারে বারে ক্ষণিকের তরে
যদি পাই তোমা বারতা ।
খুঁজিবে সেদিন কায়া
স্তব্ধ দুপুর ,
রবির কটাক্ষে উড়িছে ধূলি
শুকনো মাটির পরে ,
আনিছে শত অজানা বেদন
দেহ মৃত্তিকা ঘরে ।
শুকনো পাতার নুপুর ধ্বনি
আনিছে ঝড়ের আবহ বাণী ,
চুপচাপ সবে নাহি কথা কয়
বনস্পতির বুকে বড় ভয় ,
এই বুঝি এল রুষিয়া দানব
সে দানবই তো এ মহা মানব ,
কভু নাহি প্রাণে দয়া ।
রুষিছে দানব তব ভুলে ভরা
ইমারতের ওই পাহাড় গড়া ,
নামিছে বুকে তব অভিশাপ
ভাঙিতে তোমা লোভ রূপী পাপ ,
সে পাপে বিনাশ হইবে ধরণী
পাইবেনা তোমা পুণ্য তরণী ,
খুঁজিবে সেদিন কায়া ।
তুমি বেদুঈন
তোমা স্বপ্নের শহরে তুমি বেদুঈন মরুভূমির
মরীচিকাকে জল ভাবি ছুটিবে আজীবন ,
মোর স্বপ্নেরা প্রতিদিন সাঁঝবাতি জ্বালায়ে
প্রতীক্ষায় প্রহর গুনবে অনুক্ষণ ।
ঝকঝকে তকতকে আলো সবই ক্ষণিকের
নিভে গেলে তমসা ঘিরিবে চারিধার ,
নিভু নিভু প্রদীপের স্বল্পালোকই
চতুর্দিকে আঁধার করিবে সবই পার ।
তুমি সেথা এলোকেশী গগন বক্ষে শশী
গাঁথিবে পৃথ্বীমাঝে হৃদি প্রেম হার ,
হোক না সে ব্যথা ভরা হৃদয় আকুল করা
ভিজায়ে আঁখি তারা কণ্ঠ করুক ভার ।