মেহেফিল -এ- শায়র রীতা আক্তার (নির্বাচিত কবিতা)
রোদ্দুর
অচেনা এক রোদ্দুর এসে উকিঁ দিলো, ঘাম ভেজা দুপুরে।
জং ধরা জানালার কাঁচ ভেদ করে,
আমি দুহাত ভরে তুলে নিয়েছিলাম তার উত্তপ্ত আলো।
জানিনা কেনো!
কোন ভালো লাগায় আমি ঐ রোদ্দুরকে ভালোবেসেছিলাম?
কত কল্পনায় আমি তাকে সাজিয়েছি সাতরঙের আলপনায়।
তুলির আঁচড়ে বুঝিয়েছিলাম,
একাকী দুপুরে আমিও তো তার প্রতীক্ষা করি, বেলকুনির কার্ণিসে দাঁড়িয়ে।
সে রোজ আসতো।
ঘন কালো মেঘের কড়া শাসন ভেঙে সে রোজই আসতো।
আমার পিঠে হেলান দিয়ে সে বসে রইতো বিপরীত মুখী হয়ে।
শুয়ে পড়তো মাটিতে পাতা অগছালো আঁচলে।
আমি তার উত্তাপ নিতাম।
ঠান্ডা হয়ে যাওয়া কফির মগটা পড়ে থাকতো আনমনে।
অভিমানে বলতো – কি পাও তুমি ঐ ঘন রোদ্দুরে?
আমি বলতাম – তোমার উষ্ণতা আমার ঠোঁট ভেজায়,
আর..
ঐ রোদ্দুর আমার নেতিয়ে পড়া মনটাকে সতেজ করে।
ক্লান্ত দেহে আদর সাজায়।
আমি তার কড়া উত্তাপে রোজ একটু একটু করে বেড়ে উঠি আদরে আদরে।
তাল পাতার ফাঁক দিয়ে পড়ন্ত বিকেল বেলায় যখন
সে ঘরে ফেরার নাম করে, তখন মনটা বিষন্ন হয়ে পড়ে আমার।
রোদ্দুর তার নরম আলোয়, অভিমানী ললাটে একেঁ দিয়ে যায় গোধূলীর সিঁদুর।
কানে কানে বলে –
ঝিমিয়ে পড়ো না।
বিনিদ্র রাতে আমায় ভেবো না।
আমি আসবো..
রোজকার মতো করে আমি আসবো..
ঘুম ভাঙাতে তোমার।