• Uncategorized
  • 0

সম্পাদিকা উবাচ

কিছু কথা বলা খুব দরকার

আজ কিছু কথা বলা খুব জরুরী মনে করছি৷ বিগত কয়েকদিন ধরে ঘটে চলা মানুষের কিছু কথা এবং কার্যকলাপ আমাকে সত্যি বিস্মিত এবং একই সঙ্গে আহত করেছে৷ একে একে বলব৷ হয়ত দেখবেন আপনার সাথেও মিলে যাচ্ছে৷
এই যে বিপুল আসন নিয়ে শাসক দল আবার ক্ষমতায় এল, ঠিক তার পরেপরে কী হল! আপামর জনসাধারণ কেন পূর্বের শাসকদলকে ঢেলে ভোট দিল, এইবার শুরু বাক্যবাণে বিদ্ধ করা! কী বাকি রাখলেন বলতে তারা- নিরক্ষর, অশিক্ষিত, অকৃতজ্ঞ, নেমখারাম… এইভাবে আপামর জনসাধারণকে, রাজ্যবাসীকে গালিগালাজ করা হল, মানুষকে ছোট করা হল, এটাই কি শিক্ষার নিদর্শন ? তারা ভুলে গেলেন ইতিহাস৷ এই স্পর্ধা দেখানোর জন্যেই মানুষ তাদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল৷ কে বলতে এই স্পর্ধা দেখানোর জন্য হয়ত, মানুষ তাদের ভবিষ্যতেও নিঃস্ব করে রাখবে !
উল্টোদিকের ছবিটাও কিন্তু এক৷ এক ঝাঁক স্বপ্ন দেখা চোখে, মানুষের আরোগ্যের জন্য দিনরাত এক করে যারা খাটছেন – হ্যাঁ আমি রেড ভলানটিয়ারসদের কথাই বলছি, নির্বাচনের ফল বেরনোর সাথে সাথেই তাদের সাথে শুরু হল অশ্রাব্য কটূক্তি৷ আচ্ছা বলুন তো, ওরা তো দিনে রাতে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে! সাংগঠনিক উঁচু তলার নেতা নেতৃদের সঠিক বা বেঠিক সিদ্ধান্ত বা জয় পরাজয় যাই হোক না কেন, মানুষের প্রতি তাদের এই কর্তব্য পরায়ণ মানসিকতাকে তো কোনভাবেই তারজন্য অশ্রদ্ধা করা যায় না!! ভুল এখানেও হল, মারাত্মক ভুল হল৷ মানয়ষকে নিরক্ষর নেমখারাম বলা যেমন ঔদ্ধত্যের প্রকাশ ঠিক তেমনই এই ছেলে মেয়েগুলোকে অশ্লীল কথা বলাও কুরুচির প্রমাণ৷
আর একটা দরকারী কথা এখানে বলব বলে ঠিক করেছি৷ সাংবাদিকরা শুধু পয়সা রোজগারের জন্য কাজ করে না! যে মুহূর্তে একজন পরিপূর্ণ সাংবাদিক হয়ে ওঠেন সেই মুহূর্তে তার সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা বেড়ে যায়৷ সে শুধু তার পরিজনদেরই আপনজন মনে করে না৷ দেশের প্রতিটা মানুষ কিন্তু তখন তার আপনজন হয়ে ওঠে৷ আপনাকে কোটি টাকা দিলেও তো আপনি কোভিড হাসপাতালের ভেতরে গিয়ে কভার করবেন না৷ আপনারা দাঙ্গা দেখেন টিভিতে তাঁরা ঐ দাঙ্গার মধ্যে কভার করতে ঢোকে৷ শারিরীক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়৷ কোন কোভিড রোগীর দেহ ২০ ঘন্টা বাড়িতে পরে আছে সেই সংবাদ করা বা দেখান হয় তারপর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে, দেহ নিয়ে যায় সৎকারের জন্য৷ এই তো কিছুদিন ধরে শুনছি সংবাদ মাধ্যমগুলো নাকি ওষুধ অক্সিজেন বেড নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ৷ আরে মশাই পরিস্থিতির ভয়াবহতা আপনি না জানলে কখনও আপনার লাগাম ছাড়া জীবনটাকে নিয়ন্ত্রণ করতেন? ভাবুন একবার সংবাদ মাধ্যম যদি আপনাদের আর কোন কিছু না জানায় অর্থাৎ একেবারেই অজ্ঞানতার অন্ধকারে আপনাদের সামনের দিনগুলো কাটাতে হয়, পারবেন তো? একবার ভাববেন পরিবার পরিজনের কথা না ভেবে জীবনের তোয়াক্কা না করে আগুনের মধ্যে ঝাঁপ দিচ্ছে তাঁরা আপনাকে সচরতন করার জন্য, সামাজিক দায়িত্বেকে পালন করবার জন্য৷ ভাবুন তো এতকিছু সংবাদ মাধ্যম তুলে ধরার পরও মানুষের মুখে মাস্ক নেই, দূরত্ব বজায় রাখছে না, পরিস্থিতি হাতের বাইরে না গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিচ্ছে না, আর যদি সংবাদ মাধ্যমের এই প্রচার না থাকত, তাহলে- তাহলে মানুষের জীবন কী রকম নারকীয় হয়ে উঠত ভাবুন! যাক্ জীবন বিপন্ন করে কাজ করার পর মানুষের কাছ থেকে এমন প্রতিদান পেলে কষ্ট হয় বৈকি !
আশাকরি আজ যা যা কথা হল আপনাদের সাথে সেগুলো নিয়ে আমরা একটু ভাবব৷

রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।