মা বাবার কাছে শুনেছি শিক্ষকেরা নাকি মানুষ গড়ার কারিগর ৷ আচ্ছা মানুষ বলতে ঠিক কি বোঝায় ? চোখ নাক কান মুখ…… এগুলো তো সবার থাকে ৷ তবে ? দুটো হাত, দুটো পা, অর্থাৎ দুটো পা মাটির থেকে তুলে দুটো হাত করে নিতে পারলেই মানুষ হয়ে যায় ৷ এমনটাই বিশ্বাস বা বিজ্ঞানসম্মতও বটে ! কিন্তু বিজ্ঞানের বাইরে মানুষের মান আর হুশ সে দুটো কোথায় যাবে ? যত দূর জানি ঐ দুটো জিনিসের জন্যই নাকি মানুষ অন্য প্রাণী থেকে আলাদা, ভিন্ন ৷ কিন্তু বর্তমান পটভূমি কি তা বলছে ! কোথায় যেন নদীর পার ভাঙছে ৷ অন্ধকার কৃষ্ণ গহ্বরে পৃথিবীটাকে কেউ হাত পা বেঁধে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে ৷ ক্ষয়িষ্ণু মূল্যবোধ আর বর্ধিষ্ণু কাম লালসায় মানুষই এখন সর্ব নিকৃষ্ট প্রাণীকূল ৷ মানুষ গড়ার কারিগর ??????? এতগুলো প্রশ্ন চিহ্নের মুখোমুখি আমরা ৷ খবরের কাগজে যখন প্রতিনিয়ত শিক্ষক অধ্যাপকদের দ্বারা নিগৃহীত ছাত্রীর খবর ফলাও করে বেরোয়, তখন মনে হয় এত অন্ধকার এত দুর্গন্ধ এত নীচতা নিয়ে এ কোন, এ কী সৃষ্টির বার্তা দিতে চাইছেন তারা ! সেই মুহূর্তে নিজেকে শিক্ষক হিসাবে ভাবতে গা গুলিয়ে ওঠে, মনে হয় কত মানুষের ধিক্কৃত চোখে আমাকে বিদ্ধ করছে ৷ এক এক সময় মনে হয় অতীতের গুরুগম্ভীর গুরুগৃহ, বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের চারিদিকে ঘিরে থাকা রাসভারি বলয়, তাই বোধহয় বেশ ছিল ! সময়ের দাবিতে এই যে শিক্ষক আর ছাত্রের মধ্যে বদলে যাওয়া নতুন রসায়ন, ক্রমে দূরত্ব ছোট হয়ে আসা, লঘুকরণ সম্পর্কের মধ্যেকার গাম্ভীর্যের, একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নতুন ঘ্রাণ, এইসব আধুনিকতার প্রলেপগুলো কোথাও একটা সীমাকে অতিক্রম করে গেছে ৷ বরাবরই এমন হয়ে এসেছে, মানুষ অপব্যবহারে করেছে সুযোগের ৷ নীতির জায়গায় অনৈতিক পদক্ষেপ চুরমার করে দেয় সমস্ত শালীনতা, সম্ভ্রম, পদের গরিমা ৷ নারীকে শুধুমাত্র নারী শরীর ভাবা, যৌন খেলনা ভাবা ! বরাবরই ক্ষমতায়ণ সমাজের একটা ব্যাধি ৷ আর এই ব্যাধি যদি শিক্ষকতার মুখোশের আড়ালে চলে তবে আগামী প্রজন্ম শিক্ষক নামক প্রজাতির প্রতি তাদের মনে ঘৃণা ছাড়া আর কিছুকেই জায়গা দিতে পারবে না ৷ সমাজের মেরুদণ্ড শিক্ষক শিক্ষিকা বা অধ্যাপকেরা ৷ এইভাবে তারা কলুষিত হলে গোটা সমাজটাই ভেঙে পড়বে একদিন ৷ তখন হাত কামড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না ৷ আচ্ছা যারা ছাত্রীদের যৌন হেনস্থা করছে, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছে, তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হওয়া উচিত নয়, আপনি কী বলেন ?
আজ বিশ্ব শিক্ষক দিবস ৷ বিশ্বকে নয় ! Charity begins at home, বাড়ি থেকে, আমি বলব নিজের থেকেই প্রথম শুরু হোক শুদ্ধি কর্ম ৷ না হলে অদূর ভবিষ্যতে সভ্যতার চাকা বন্ধ হল বলে!!