“নীল সুনীলে দিন যাপন” সম্পাদকীয়

নভঃ নীল আস্কারায় থুতনির সুডৌল অশ্বখুরে তুমি বিন্দু বিন্দু শ্বেত বারি হয়ে লেগে থাকো ৷ চিবুক পেরিয়ে অলোকানন্দার মত বয়ে যাও মতিঝিল শরীরের বাঁকে বাঁকে ৷ আমি অবলা নই ! তবু সম্মোহনের অঘোর নাব্যতায় শীতলপাটির মত বিছয়ে দিই নিজেকে ৷ অস্থির আগুন গিলেছি ৷ কপালের চুল সরিয়ে দেবে বলে তোমার আঙ্গুল বীণার মত বেজে উঠছে মহুল মহুল ছন্দে ৷ তুমি তখন গলনাঙ্কে দাঁড়িয়ে, নাকি টগবগ করে ফুটছ ! আমার রক্তে নীলের বারবারি ৷ ক্রমে আরো নীল, ঘন নীল, সু-নীল হচ্ছে আরও ৷ চামড়ার তলায়, হাতের চেটোতে, ওষ্ঠের কোন থেকে গড়িয়ে পড়া ওমে, তুমি খেলা করছ আমি দেখতে পাচ্ছি ৷ সহস্র বছর ধরে পৃথিবীতে যতবার তুমি সুনীল হয়েছ ততবার আমি নীরাকে ধারণ করেছি শরীরে ৷ মধুযামিনী আশাবরীতে বুঁদ হয়েছে ততবারই ৷ প্রতিজন্মে তোমার উচ্চারিত দায়ভার, আগামী জন্মের জাতিস্মর হয়েছি ৷ তবুও ” অনেক গোপন কথা আছে, এই এক জীবনে কিছই হবে না বলা ৷” ” বাতাসে কীসের গন্ধ” – পাই ? আমের মুকুলে, শীতর কুয়াশায়,ভরা কোটালে, আউটট্রাম ঘাটে, বাজারে, বাসে, মেট্রোতে তোমার শরীরের গন্ধ, আমার শ্বাস দিয়ে প্রবেশ করে, স্পর্শ করে আমার জঠর, নিতম্ব, পিন পয়োধর ৷ আমি ধীরে মরালী হয়ে উঠি ৷ তুমি বলে চল ” আমার ভালোবাসার কোন জন্ম হয় না, মৃত্যু হয় না/ কেননা আমি অন্যরকম ভালোবাসার হীরের আংটি নিয়ে জন্মেছিলাম ৷”
“ভালোবাসা অসহিষ্ণু, বারবার ফিরে ফিরে আসি / অতৃপ্তির পাত্র হাতে তোমার চোখের কাছে, নীরা !” যতবার তোমার কন্ঠস্বরে এ উচ্চারণ ধ্বনিত হয়েছে ততবার শপথ নিয়েছি নিয়েছ নিজের নিজের ফিরে ফিরতি জন্ম নেব তোমার নীরা হয়েই, সুনীল ! তাই পৃথিবীর শেষ আহ্নিক গতির মুহূর্ত পর্যন্ত প্রতি জন্মে আমি নীরা হয়েই বাঁচতে চাই ৷
শুভ জন্মদিন প্রিয় কবি ৷

 

রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।