অনুভব করি তোর স্পর্শ, শায়িত লোমের ফাঁকে ফাঁকে। তোর অভ্যাসগুলো অনুভূতির অশ্রুধারা হয়ে বয়ে চলে আমার মনের আঁকে বাঁকে। তোর কথাগুলোর শব্দতরঙ্গের ঢেউ ওঠে আমার নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে। তোর ছবি হয়ে ওঠে উদ্ভাসিত আমার হৃদয়ের আয়নাতে। তোর উপস্থিতি প্রতিদিনই হয়ে ওঠে আমার কাছে অনুভূতিশীল। কাজের প্রতি একাগ্রতার বাধা হয়ে দাঁড়ায় তোর পায়ের আহট – ঐ বুঝি তুই ডাকতে আসছিস্ বেড়াতে যাবার জন্য! ঐ তো ! সে…ই…. দিনটার কথা! তিরিশ বছর আগেরই তো কথা – হ্যাঁ তিরিশ বছরই তো! মনে পড়ে তোর? বসে ছিলাম তুই আর আমি আমাদের গ্রামের প্রিয় আড্ডার জায়গা – ঐ শিবের মঠের চত্বরে। চুপচাপ, কোনো কথায় ছিল না বলার; তবুও বসে ছিলাম। আপাতদৃষ্টিতে কোনো গুরুত্বপূর্ণ না হলেও, অতি প্রয়োজন যে ছিল বসে থাকার, আর তার কারণ হলো, বন্ধুত্বের বন্ধনকে সজাগ রাখা, যেটা নাকি ছিল মনের একটা স্বতঃস্ফুর্ত ভাব। ভালো লাগত। চুপ থাকার মাঝে ও অনেক কথা থাকতো ; বুঝে নিতাম আমরা একে অপরে। থাকতো লুকিয়ে আনন্দের অনেক উপকরণ, যেটা অনুভব করতে পারতাম, তাইতো আনন্দ পেতাম! একসঙ্গে বসে না থাকলে হয়তো মনে হতো দিনের কোনো একটা কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। বন্ধু যে আমরা, তাই! তারপর, মনে পড়ে? ফিল্ডের ঐ বটগাছের ডালে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে বসে আড্ডা জমানোর কথা; ক্লাব ঘরে সন্ধ্যাবেলায় তাস খেলার (ব্রীজ) আড্ডা আর ছাত্র জীবনের কতো কৌতূহল গল্পের মাধ্যমে খুশমেজাজের বহিপ্রকাশ! স্বরস্বতী পূজার রাত্রি জাগরণ আর খুশির প্লাবনে ভেসে যাওয়া! মনে পড়ে? আরো কতকিছু ছিল আমাদের বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতার সুত্রধার! সবই তো এখন ভাবনার জালে আশ্রিত, কিন্তু বাস্তবিক। আসলে কি জানিস, যখন আমরা ঐসব ভাবি, তখন আমাদের অনুভূতির স্নায়ু গুলো এতটাই সক্রিয় ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে মনে হয় আমরা একে অপরের সাথে কথোপকথনে ব্যস্ত। চলতে থাকে ভাবনার আঁচলে বাস্তব সত্যির বিনোদন। তাই, আজ তুই দূরে… তবুও, ভাবনার স্রোতে আমার কাছেই আছিস।