সেদিনেই অনলাইন ক্লাসে পড়াতে পড়াতে একটি ছাত্রকে বকলাম যে হিন্দি, বাংলা, ইংরেজি মিলিয়ে মিশিয়ে তুই খিচুড়ি বানাচ্ছিস কেন? একটি বাক্যে কতটা বাংলা প্রয়োগ করবি, কতটা হিন্দি, কিভাবে পুরোটাই ইংরেজিতে বলবি, সেটার উপর অনেককিছু নির্ভর করছে। ছোটদের এবং বড়দের উভয় ক্ষেত্রেই প্রাঞ্জল ভাষা, নিজেকে সকলের সামনে বোধগম্য করে তোলা, মানুষের সাথে ভাষার মাধ্যমে আদানপ্রদান এটাই তো ভাসার সঠিক প্রয়োগ হওয়া উচিৎ। ভাষা নিয়ে কোনো নীতিকথা অবশ্যই আমি বলছিনা, সাধু, কথ্য, চলিত সবগুলো স্কুলের সিলেবাসের বাইরে গিয়েও দেখা যায় কোথায়, কিভাবে আলোচনার মাধ্যমে উঠে আসছে, বা বাড়িতে অথবা পার্কে কথাবার্তার মাঝখানে উঠে আসছে। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজির বাইরেও স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং সার্বজনীন ভাষা বলতে গেলে ইংরেজি। ইংরেজিতে কথা, ইংরেজি মাধ্যম স্কুল, ইংরেজির প্রয়োগ, রোজকার জীবনে ইংরেজি পড়া, লেখা, সমস্যার জায়গা সেটা অথবা হিন্দি অথবা বাংলা নয়। স্কুল, কলেজ, বাড়িতে, চাকরিতে সব ক্ষেত্রেই একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, এই সমস্তরকম ভাষার অতিপ্রয়োগ এবং সঞ্চালনা কোনোভাবে কোনো একটি ভাষার জন্ম অথবা মৃত্যুর কারণ যাতে না হয়ে দাঁড়ায়।
সাহিত্য হইচই-তে আমরা তাই কোনো না কোনোভাবে চেষ্টা করি বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি অথবা অন্য কোনো ভাষা থেকে বাংলা বা ইংরেজি অনুবাদকে কিছুটা হলেও তুলে ধরতে। একটি ভাষার গ্রহণযোগ্যতা এবং বোঝার ক্ষমতা সকলের মধ্যে সমানভাবে থাকেনা। শিশুদের সরল ভাষা, শিশুতোষ ছড়া, কিশোরদের লেখার অন্যরকম ভাষা এবং বড়দের ক্ষেত্রে অবশ্যই ভাষার তারতম্য ঘটে। কোনো একটা দুটো তিনটে ভাষা এইভাবে ভাগ-বাঁটোয়ারা নয়, কিন্তু আমাদের এটা অন্তত বুঝে দেখতে হবে যে একটি ভাষায় কিছু শব্দপ্রয়োগ বা বাক্যগঠন করলেও যদি সম্ভব হয় সেই বাক্যটি ওই একটি ভাষাতেই শেষ করা। এখন এসএমএস ল্যাঙ্গুয়েজ, কোড, ডিজিটাল ল্যাঙ্গুয়েজ, এনক্রিপ্টেড ল্যাঙ্গুয়েজ, শর্ট মেসেজ ইত্যাদি অনেকককিছুই লেখার মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়। যেটা চিন্তার বিষয়, এবং প্রায়ই এটা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সাথে আলোচনায় উদ্যত হই, যে তাহলে পিউরিটি অফ ল্যাঙ্গুয়েজ বা বিশুদ্ধতা বলে কি কিছু আছে? কিভাবে সেটাকে ধরে রাখা সম্ভব?
এই নিয়ে বিস্তর আলোচনা চলতেই থাকবে, হয় এই পাতায়, নয়তো আমাদের লেখকদের কলমেই উঠে আসবে। আপনারাও লেখা, ছবি, কমেন্টস, ভ্রমণবৃত্তান্ত আমাদের পাঠিয়ে দিন: