।। ত্রিতাপহারিণী ২০২০।। T3 শারদ সংখ্যায় সৌমিত্র চক্রবর্তী

আজানমারির উপাখ্যান

(১)
ভরসন্ধেয় দোতলার ছাদে শ্যাওলা আর নোনাধরা ইঁটের গিমিকে কাটাকুটি খেলেছ কখনো, অসংলগ্ন?
আমার সামনের গলি প্রাণীজ হাঁটাচলা বন্ধ হলেই বিঠোফেন হয় মধ্যযুগীয় অনুরাগে।
(২)
ছতিছন্ন আঁকাবাঁকা সুরাইয়া তালে শাঁখের গলা সাধা আর অফিস ফেরতা গুনগুন অনুযোগ ফিতে কাগজে টিকটক গ্রাফ আঁকে।
দু চার চালের পরেই কিস্তির শ্লীল খিস্তি এখন মিউজিয়ামি ভালোবাসা।
(৩)
কয়েলের গুসসা ধোঁয়া তুড়িতে উড়িয়ে মশা খলখল হাসে পিশাচী ইচ্ছেঘুড়ি সপাটে ভাসিয়ে।
এ সময়েই বিন্তিরিং ভাবনা, মেহেরজান খাঁটি স্কচের সুগন্ধি ককটেল চুমু খায় মেমরং ঠোঁট।
(৪)
ভালো হাসি, ভালো গান, ভালোভালো কথাজুড়ি সাতপাক অভিমান উড়ে এসে জুড়ে বসে শুচিস্মিতা ডাকে।
ঠুনকো যত হেজিপেজি স্ট্যাটাসের বন্ধ্যাগান দুহাতে ঠেলে গভীর জলের কালো খুঁজে ডোবে প্রান্তিক যাযাবরী কথা।

ছিন্নবিচ্ছিন্ন কারিকুরি

মকাইবাড়ীর চায়ের ঠোঁটে আলতো চুমু দিলেই বাঁকুড়া পুরুলিয়ার ছোটনাগপুর মালভূমির শেষ প্রান্ত চলকে উঠে গায়ে ঢলে পড়ে। লালচে বাদামী মাটির ভাঁড় এক বুক মহুয়া নিয়ে টইটম্বুর গত শতাব্দীর টপ্পা ধরে অনায়াসে। জয়চণ্ডী পাহাড়ের ন্যাড়া চুড়ো লাজবন্তী প্রথম প্রেমিকার ভার্সান গায়ে গলিয়ে ঈষৎ মাথা ঝুঁকিয়ে একাকী আমন্ত্রণের সচিত্র কার্ড উড়িয়ে দেয় রুক্ষ রাঢ়ের দুশ্চরিত্র হাওয়ায়। দেখতে দেখতে সকাল টুপ করে সূর্য প্রসব করে প্রসূতি আলস্যে অকাল ঘুমের তলায় তলিয়ে যায় কোনো আগাম নোটিশ ছাড়াই। অভিশপ্ত মরা ঘাসের হলুদ রূপকথার মাঠে আচমকা হৈ রৈ করে হাজির হয় একতাল কালো মেঘ। গিরগিটি আর তক্ষক আড়াল খোঁজে। বিষ বাষ্প যত্নে বয়ে বেড়ানো কুচকুচে কালো খরিশ সামনের সহজলভ্য শিকার ফেলে মেতে যায় পিয়ানোর টুংটাং রিডে। থইয়া থইয়া নাচ জমা জলের বেড়ে ওঠা স্পর্ধায়। ডিপ্রেশন ছিঁড়ে ওপার থেকে ভেসে আসে অখণ্ড যৌন ইচ্ছার পোড়া মাটির সুতনুকা ক্লিওপেট্রা। কয়েক শতাব্দীর কুমারী পাথরের খাঁজে লাজবন্তী উঁকি এক বালিকা সবুজ পাতার। মালভূমির পাঁজরের খাঁচার নীচে জমিয়ে রাখা কালো পোড়া অভিমান ভাসিয়ে ঝমঝম বৃষ্টি নামে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।