১৭.
একুশদিনের লকডাউন ঘোষিত হয়েছে। কাজকর্ম এখন নেই। আজ আরণ্যক নিয়ে বসেছি। পড়তে পড়তে মগ্ন হয়ে গেছি প্রকৃতির রঙে, রূপে,রসে। শুনলাম লকডাউনের আর একটা ভাল দিক উন্মোচিত হয়েছে। প্রকৃতির খোলা হাওয়ায় পশুপাখি ঘুরছে। পৃথিবী নির্মল হচ্ছে।
আবার আজ সকালে দেখলাম বইগুলো গুছিয়ে রাখতে হবে। ধুলোবালি ঝেড়ে বইগুলি তাকে আবার সাজিয়ে রাখলাম।
সপরিবারে টিভি দেখলাম। ভেঙে যাওয়া সম্পর্কগুলো সাজিয়ে নেওয়ার সময় পেয়েছি। করোনা আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। কিছু মানুষ অনুগত নয়। তারা বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে পুলিশের মার খাচ্ছে। করোনার ভয় কি তাদের নেই। তাদের বোঝা উচিত এটা একার ব্যাপার নয়। দশ ও দেশের সমস্যা।রোগ ছড়িয়ে পড়লে আর নিয়ন্ত্রণ করা মুস্কিল হয়ে যাবে।
আজও দেখলাম কিছু লোক মশারি টাঙিয়ে জঙ্গলে তাস খেলছে।
আজকে সকালে উঠে আমি নিজে চা বানিয়ে খেলাম। স্ত্রী ও পুত্রকে বেড টি দিলাম। কিছুতেই নেবে না। শেষে রাজী করালাম।
আজ তরকারিটা আমি রান্না করলাম। ছেলে বলল,বাবা আমিও শিখব রান্না। সেও আমাকে হেল্প করল।
পুলিশ তার ডিউটি করছে যতটা পারছে। জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে।
১৮.
মানুষ শক্তিশালী প্রাণী। কিন্তু প্রকৃতির বিচার নিরপেক্ষ। তাই আজ উল্টোচিত্র। প্রকৃতি কি হাসছে? জানি না তবু এটুকু বলতে পারি, ভাবার সময় এসেছে। কল কারখানা, ধোঁয়া আবর্জনায় পৃথিবী কলুষিত। তাই আজ এই প্রতিশোধ।চারিদিক নিস্তব্ধ। খাওয়া আর ঘুমানো ছাড়া কোন কাজ নেই। বাজার করা, মাছ কেনা, স্কুল যাওয়া সব বন্ধ। একটা কোকিল গান শুনিয়ে চলেছে। ফিঙেটা ইলেকট্রিক তারে বসে ডাকছে। ওরা মানুষের মত স্বার্থপর নয়। তাই হয়ত গান শুনিয়ে চলেছে এই দুর্দিনে। আজকের খবরে শুনলাম, করোনাভাইরাসের জেরে ধাক্কা লেগেছে অর্থনীতিতে। লকডাউনের জেরে উৎপাদন বন্ধ হয়েছে ছোট থেকে বড় সংস্থায়।
১৯.
দুই হাজার কুড়ি সালের ৮ এপ্রিল দেখা গেছে সুপার পিঙ্ক মুন বা বৃহত্তম গোলাপি চাঁদ। এতে নাকি করোনাভাইরাসের নিধন ঘটবে বলে অনেকে মনে করছেন।
যদিও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যবর্তী গড় দূরত্ব ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। চাঁদের গোলাপি আভা দেখা যাবে পৃথিবী থেকে ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৯০৭ কিলোমিটার দূর থেকে।
অর্থাৎ ওইদিন পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কমে যাবে ২৭ হাজার ৪৯৩ কিলোমিটার এবং দেখা যাবে এই নান্দনিক দৃশ্য। জানা গিয়েছে, অন্যান্য দিনের তুলনায় এইদিন চাঁদের আকার ৩০ শতাংশ বড় হয়ে যায়। সুপার মুনের কক্ষপথ পৃথিবীর নিকটতম হয়। গ্রহ থেকে এই নিকটতম দূরত্বের কারণেই চাঁদকে অনেক বড় এবং উজ্জ্বল দেখায়। তবে পূর্ণিমা হলেই যে সুপার মুন হবে তা কিন্তু নয়। কারণ চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে ঘোরে। পৃথিবী থেকে আরও অনেক দূরে থাকলেও পূর্ণিমার পূর্ণ চাঁদ দেখা যেতে পারে।পূর্ণিমা’র চাঁদের নামকরণের বিষয়টি সাধারণত আমেরিকান অঞ্চল এবং ঋতুগুলির ওপর নির্ভর করে। ‘গোলাপি চাঁদ’ নামটি গোলাপি ফুলের নামের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া। এই ফুল উত্তর আমেরিকার পূর্ব দিকে বসন্তকালে ফোটে এবং এটি মোটেও চাঁদের রঙ নয়। পুরো গোলাকার চাঁদকে স্প্রাউটিং গ্রাস মুন, এগ মুন এবং ফিশ মুন নামেও ডাকা হয়। তবে, লকডাউন পুরোপুরি তোলার ক্ষেত্রে কোভিড–১৯ সংক্রমণ কী অবস্থায় রয়েছে, সেটাই যে নির্ণায়ক হবে তা স্পষ্ট হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর গড়া টাস্ক ফোর্সের সদস্য রামন আর গঙ্গাখেড়করের কথায়। তিনি জানান, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সংক্রমণের শৃঙ্খলকে ছিন্ন করা।