• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক কোয়ার্ক ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব – ৭২)

বাহাত্তর

আর্জমার সঙ্গে পরামর্শ করে ফিরছি । অনেক প্ল্যানিং হল। আর্জমা আমায় কিছু স্ট্রাটেজি মেনে চলতে বলেছে ও এখন সব ঘটনায় জানে । মোবাইল বেজে উঠল । লুলিয়ার নাম্বার । আর্জমার ইন্সট্রাকশন আছে যে লুলিয়া যেন ঘুনাক্ষরেও টের না পায় যে আমি ওর স্বরূপ জেনে গেছি । আমি স্বাভাবিক স্বরেই বললাম, “বলুন ম্যাডাম “। লুলিয়া ফোনে অনেক ন্যাকামি করলো । ওর অভিযোগ আমি কাল থেকে ওর ফোন ধরিনি । মিসড কল দেখেও কলব্যাক করিনি । যাইহোক ও আমার সঙ্গে দেখা করতে চায় । আমি বললাম বাইরে কোথাও দেখা করতে। ও বললো ওর বাড়িতেই চলে আসতে । আমি ট্যাক্সিটাকে ওর বাড়ির দিকেই ঘুরিয়ে নিলাম । বাড়ির দরজা খোলাই ছিল । আমি সোজা দোতলায় চলে গেলাম । রাস্তা থেকে একটা ফুলের তোরাও নিলাম ওর জন্য । আমাকেও তো নাটক করতে হবে । আমি যেতেই হাত ধরে আমাকে বেডরুমে নিয়ে গেল । মেয়েটা এক বুকচেরা হাউসকোট পড়েছে । ব্রা ছাড়া কোনো ইনার নেই ভেতরে । বুঝলাম আমায় যৌবন দিয়ে মাতাল করে পেট থেকে সব কথা বের করতে চায় । নিজেকে ক্রমশ উত্তাল করে তুললো । কাল ফোন ধরিনি কেন তাই নিয়ে বার বার অনুযোগ করতে লাগলো আমার হাত ধরে ।আমি পাশ কাটানো উত্তর দিতেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করে,”তুমি কি রাগ করেছো আমার ওপর “। আমি ওকে আটকালাম না । ও যা চায় তাই হতে দিলাম । আমার মন না চাইলেও যৌবনের ধর্ম অস্বীকার করি কি করে । ফলে পরিণতি যা হওয়ার তাই হল । মন সঙ্গ না দিলেও শরীর তার ধর্ম পালনে লেগে গেল । দুটো শরীর মিশে gelo। দেহ মিলনের পর দুজনে খাটে শুয়ে আছি । লুলিয়া আমায় আদর করে জিজ্ঞাসা করলো শ্রেয়ানের কোনো খোঁজ পেলাম কিনা । ডায়েরি পড়ে কি জানতে পারলাম । আর ধাঁধার উত্তর পেয়েছি কিনা । আমি লুলিয়ার দিকে তাকালাম । মনে মনে হাসলাম । ভাবলাম হায়রে অবোধ নারী এই কথা গুলো জানার জন্য কি নিজেকে বিলোনোর দরকার ছিল? নিজেকেও কেমন যেন অপরাধী মনে হচ্ছে । মহিলা যৌন কর্মীর কষ্টটা যেন আজ প্রথম বার অনুভব করলাম । মন চায়না তবুও প্রেম ভালোবাসা হীন সহবাস করতে হয়। আগের তুলনায় এবারের অনুভূতিটা পুরো আলাদা । পরিস্থিতি মানুষের মনকে কতটা পাল্টে দিতে পারে । এই লুলিয়ার সান্নিধ্য পাওয়া ছিল আমার কাছে পরম পাওয়া । এই সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য ছিল আকুতি । উষ্ণ সান্নিধ্যের পড়ে মনে এক অপার তৃপ্তি বিরাজ করতো । কিন্তু আজ নিছকই এক জৈবিক প্রবৃত্তির নিরসন । শরীর ও মনের কোনো তৃপ্তি হয়না ।
লুলিয়া যে প্রশ্ন গুলো করেছে তা একে একে সবগুলোরি জবাব দিলাম । ডায়েরি থেকে পাওয়া সব তথ্যের কথাই ওকে বললাম । আমি জানি এগুলো ও বা ওর দলের লোক আগে থেকেই জানে । শ্রেয়ানের খোঁজ পাইনি । আর গোকুল কুন্ডুর কোথাও বললাম । আমার হাতে যে আর দুটো দিন আছে শ্রেয়ানকে উদ্ধার করার জন্য সেটা আশা করি ওরও জানা আছে । ধাঁধার উত্তর পাইনি তাও জানালাম । লুলিয়া উত্তর গুলো শুনে শান্ত হয়েই বসলো । আবার কি মনে হতে বলল, “আচ্ছা কাল রাতে তোমার বাড়ি কিছু হয়েছে?”আমি অবাক হওয়ার ভান করে,”কি হওয়ার কথা বলছো? কোই কিছুতো হয়নি । আমি তো ডায়েরি নিয়েই বেশি রাত অব্দি পড়েছি ।”লুলিয়া একথা শুনে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লো ।আবার বললো,”আচ্ছা বাল্মীকি কি কিছু বলেছে তোমাকে? কোনো চোর ঢুকেছিলো বাড়িতে?”আমি অবাক হয়ে বললাম,”কোই নাতো এসব কথা বলছো কেন? বাল্মীকির সাথে কোনো কথা হয়েছে তোমার?”এবার লুলিয়া কথা ঘোরানোর চেষ্টা করলো । বলল,”আচ্ছা বাল্মীকি তোমার খুব বিশ্বস্ত তাই না? কবে থেকে ও তোমার সঙ্গে আছে?”আমি বাল্মীকির পুরো বায়োডাটা দিয়ে দিলাম সংক্ষেপে । লুলিয়া কিন্তু বিশেষ সন্তুষ্ট হল না । বললো,”ওকে একটু চোখে চোখে রেখো । কেন জানিনা আমার ওকে খুব সুবিধের মনে হয়না”। আমি জোর দিয়েই বললাম বাল্মীকি বেশ বিশ্বস্ত লোক আর ভালো । যাই হোক ধাঁধা নিয়ে ভাববো বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম । এবার একটা জিনিস বুঝলাম কাল রাতে যে লোক দুজেছিলো লুলিয়া আর বাল্মীকির রাইভাল গ্রুপের লোক । তাই বাল্মীকি লোকটাকে মেরে ট্রাঙ্ক এ করে পাচার করে দিয়েছে । হঠাৎ ফোন বেজে উঠল । আননোন নাম্বার । ওই. শয়তানটার গলা গোকুল কুন্ডু । চড়া গলায় আমায় শাসাল। ওর লোককে নাকি আমি গুন্ডা দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছি । ও আমার ফোন না পেয়ে লোক পাঠিয়েছিল আমার খবর নিতে। তাকে নাকি আমার লোক দিয়ে আটকে রেখেছি । আমি যেন ওর লোককে ছেড়ে দিই আর ধাঁধার উত্তর বের করার আর আটচল্লিশ ঘন্টা আছে । তানাহলে শ্রেয়ানের সাথে আমাকে ও আমার পোষা গুন্ডা বাল্মীকিকেও মেরে ফেলবে ঘোরে ঢুকে ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।