|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় সুপ্রিয়া মণ্ডল
by
·
Published
· Updated
মা
গাছে গাছে কচি পাতার সমাগম আর কোকিলের কুহুতান জানান দিল বসন্ত এসে গেছে। রাধাকান্তপুরের বৃদ্ধাশ্রমের দরজাতেও বসন্ত কড়া নেড়েছে। সুমিতাদেবীর এই প্রথম নিজের বাড়ি ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে দোল উৎসবে সামিল হওয়া। সাত মাস প্রায় হয়ে গেল, এখানেই এখন তাঁর নতুন আবাস। স্বামী মারা গিয়েছেন তাও প্রায় বছর তিনেক হবে। সুমিতাদেবী মাঝে-মধ্যে নিজের বাড়ি, ছেলে, নাতির কথা ভেবে কষ্ট পান, মন খারাপ করেন; বাকিরা তখন তাঁকে সান্ত্বনা দেন। আশ্রমের সকলে মিলে একটা বড় পরিবার। দোল উৎসবের জন্য আগের দিন বিকেলেই আবির, রং, লাড্ডু, মিষ্টি ইত্যাদি কিনে আনা হয়েছে; ডায়াবেটিস থাকলেও এই বিশেষ দিনগুলোতে আশ্রমের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা মিষ্টিমুখ করেন। দেখভালের জন্য রাজু নামের ছেলেটিই সব করছে। রাজু অনাথ, এখানে সবাই ওর আপনজন। সুমিতাদেবী জানালার গরাদ ধরে দাঁড়িয়ে একদৃষ্টে বাইরের দিকে চেয়েছিলেন আর চোখের জল ফেলছিলেন। রাজু ডাকতে এসে দেখতে পেয়ে ধীর পায়ে কাছে গিয়ে বললো, “আমার তো কোনো মা নেই, পারবে না আমাকে নিজের ছেলে করে নিতে?” সুমিতাদেবী রাজুকে সন্তানস্নেহে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।