সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব – ১৬)

রেকারিং ডেসিমাল

১৬
রসা রোডের বাড়িতে সুন্দর চেহারা প্রচুর।
লম্বা চওড়া , টানা টানা চোখ, এবং গলার কি জোর, বাবা।
এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়।
বিয়ের দিন মায়ের বাড়ির লোক সবাই বর‍যাত্রী দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছিল।
বউয়েরাও কম নয়।
বাড়ি একেবারে হইচই।
বরং নতুন বউই সাইজে ক্ষুদ্র।
সে এ বাড়ির বড় নাতবউ।
তাকে দিদা উডল্যান্ড নার্সিং হোমে আই সি সিউতে প্রথম দেখে মঞ্জুর করেছেন।
আশি পেরোলেও তাঁর রসের কোন খামতি নেই।
বেডে শুয়ে শুয়েই তিনি মুচকি হেসে গান শুনিয়েছেন, যমুনে এই কি তুমি সেই যমুনে প্রবাহিনী।
অচেনা হবু নাতবউ গলায় স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে ডাক্তার হিসেবে গটগট করে ঢুকে ছিল।
আর তারপর নাতি ভিজিটিং কার্ড দেখিয়ে ভিতরে এসে, কি দিদা কি রকম বুঝছ?
বলে নতুন ডাক্তারের পাশে দাঁড়াতেই, দিদা কুলকুল করে হেসে বললেন, আরে এ যে অমিতাভ বচ্চন জয়া ভাদুড়ী!
বাস্তবিকই হবু বর ছয় ফুট আর হবু কনে পাঁচ ফুটিয়া।
ততক্ষণাৎ এই বুড়ো মানুষটিকে খাসা লাগলো নতুন ডাক্তারের।
আর তিনি মারাত্মক অসুস্থতা কাটিয়ে বাড়িতে ফিরেও এলেন।
ব্যস, সেই জন্যই তাড়াতাড়ি বিয়ে ফাইনাল হয়ে গেল ।
বাড়ি ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না, মাত্র এক মাস সময়ে প্রস্তুতি নিতে অসুবিধে, এই সব আপত্তি ছাপিয়ে বরপক্ষ অনুরোধ রাখলেন, একটু আয়োজন কমই হোক, কিন্তু মায়ের এত শরীর খারাপ, এ বছরের প্রথম বিয়ের তারিখেই বউ নিয়ে যেতে চাই।
বাইশে অগাস্ট প্রথম দেখতে আসা থেকে আঠারোই অক্টোবরে রেজিষ্ট্রেশন, আর তেইশে নভেম্বরে মালাবদল।
তিন মাস ঝড়ের গতিতে চলে গেল।
নাতবউয়ের মাথায় থাকল দিদিশাশুড়ির হাসিমাখা কমেন্ট, এত অমিতাভ বচ্চন আর জয়া ভাদুড়ী!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।