ফাল্গুন শেষ হয়ে এলো। চৈত্র আসছে। হিন্দুরা শিব পুজোয় মন দিচ্ছেন সারা দেশ জুড়ে। সঙ্গে অন্য ধর্মের মানুষরাও যোগ দিচ্ছেন আনন্দে।
আশুতোষ, বিধিনিষেধ না-মানা ভোলানাথ বহু মানুষকে টানেন।
ঝরা পাতার ঘূর্ণি ওড়া পথে বেরিয়ে পরে মন গাজনের সন্ন্যাসী হয়ে।
পুরোনো গান ভেসে আসে মনে।
” চৈত্র দিনের ঝরা পাতার পথে, দিনগুলি মোর কোথায় গেলো বেলা শেষের শেষ আলোকের রথে —
নিয়ে গেল কতই আলো কতই ছায়া
নিল কানে কানে ডাকা নামের মনে মনে রাখা মায়া –”
ছোটবেলা ছুঁয়ে যায় টুকি দিয়ে। বাবার গলায় পঙ্কজ মল্লিকের গান।
শচীন কর্তা মনে করান, কাঁদিব না ফাগুন গেলে।
এই সব দেখতে দেখতে কীর্তনের ধরতাইয়ের মত আমার ফাজিল মন ফের প্রেমে ঘুরে আসে।
যাই বলো, সিংহাসনে রাজমুকুট তারই মাথায়।
সেই যে বারাণসীতে গিয়ে দেখে এলাম।
সোনার অন্নপূর্ণা পাশে রজতগিরিনিভ রুপোর শিব ঠাকুর দাঁড়িয়ে। কি অপূর্ব সুন্দর।
কিন্তু সেই ত পিণাকপাণি চির ভিখারি। ভিক্ষাপাত্র হাতে দাঁড়িয়ে আছেন।
বড় অহংকার করে বলে গেছিলেন, আমি মহাদেব। সারা পৃথিবী জুড়ে ফ্যান ফোলোয়িং। তুমি না ডাকলেও চলবে।
ভারতচন্দ্র রায় গুণাকরের অন্নদা মঙ্গল পড়ে মুগ্ধ হয়ে থাকি।
সারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শংকর। কোথাও অন্ন নেই।
” আর আর দিন ইথে হাসেন গোঁসাই
ওদিন ওদন বিনা ভালো লাগে নাই.. ”
অবশেষে ওদন মানে অন্নের খোঁজে অন্নপূর্ণার কাছে এসে দাঁড়িয়েছেন দিন শেষে।
আমায় নইলে ত্রিভুবনেশ্বর তোমার প্রেম হত যে মিছে…
না হয় তুমি ভিখারিই হলে।
প্রকৃতি বসন্তের নতুন পাতায় ফুলে সেজে উঠে মহারানী হলেন তোমার আলো নিয়েই বারবার।
ভালবাসাকে জিতিয়ে না দিলে, তাঁকে আর মহাদেব বলি কি করে ?