অনেকক্ষণ চুপ করে বসে থাকার পর চটকা ভাঙে। ঘড়ি বলছে পাঁচটা পনেরো। এতো দেরী অথচ চা দিলো না। গুটি গুটি এগোই রান্না টীমের তাঁবুর দিকে। আরে ঐ তো পরিমল, কেষ্টদা সবাই আছে, মহানন্দে তাস পিটছে। গিয়ে প্রশ্ন করাতে সামনের সার সার লঙ্গর দেখিয়ে দেয়। এই ক্যাম্পে আর কেউ রান্না করবে না, সবাইকে লঙ্গরখানা তে গিয়ে খেতে হবে। বিকেলের চা, টিফিন, ডিনার, সকালের নাস্তা.. সবকিছু। এক পয়সাও খরচা নেই, সব ফ্রী অফ কস্ট। আমি এর আগে কখনো লঙ্গরে খাইনি, কি পাবো জানিও না। সরেজমিনে তাই তদন্ত করতে এগোই।
একধার দিয়ে সার সার তাঁবু। সবার সামনে পতাকা ঝুলছে। দেওয়ালে ঠাকুর দেবতার পাশাপাশি যে ব্যবসায়ী সমিতি খরচা দিচ্ছে তাদের কর্তা ব্যক্তিদের হাসিমুখ। আমরা যাচ্ছি দেব দর্শনে পূণ্যার্জন করতে আর ওনারা করছেন তীর্থ যাত্রীদের খাইয়ে। বাহ বেশ তো। গরম সিঙাড়া ভাজা হচ্ছে দেখে ঢুকি সামনের তাঁবুতে। একটা ভেঙে মুখে দিয়েছি, আহ, খাঁটি ঘিয়ে ভাজা। স্বাদ নিতে নিতেই শুনি দেবনাথদার গলা। আরে এখানে কি করছিস, এটা ছেড়ে ঐ লঙ্গরে যা, বেড়ে গোলাপজামুন বানিয়েছে। তাইই? সিঙাড়া একটা খেয়ে ওখানে গিয়ে খাই। ব্যপক তো। অনেকেই দেখি ঘুরে ঘূরে নানা কিছু খাচ্ছে। আমিও লেগে পড়ি তাদের সাথে। চাট খাই, দহিবড়া, সব কিছুই মারকাটারি। মনটা ভালো হয়ে যায়। রাতে এর ওর থেকে খবর নিয়ে খেতে যাই এক জায়গায়। সব জায়গায় বুফে। দেরাদুন চালের ভাত, ডাল, ভাজি, কড়ির সব্জি, পনির মসলা। যে যত পারো খাও কিন্তু একবিন্দু ফেলা চলবে না। খাওয়ার শেষে এক গ্লাস কেশর দেওয়া গরম দুধ আর এক প্যাকেট টফি উপহার পাই। পরিতৃপ্ত মনে তাড়াতাড়ি এসে স্লিপিং ব্যাগে ঢুকি। ঘড়িতে রাত সাড়ে আট। কাল ভোর দুটোয় উঠে গুহার দিকে যাত্রা।