৮ই জুলাই ছিলো আমার কিন্নর যাত্রার দিন। ৯ই জুলাই এলো এক মর্মান্তিক খবর। কালকা মেল অ্যাক্সিডেন্ট করেছে কানপুর স্টেশনের কাছে। বহু যাত্রী হত ও আহত হয়েছেন। খবরটি শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। কিন্নরের সিট পেয়ে গেলে ঐ ট্রেনেই আমার যাবার কথা ছিলো। কি বড়ো বিপদ থেকে যে দেবতা রক্ষা করেছেন সেটি বুঝতে পারলাম। করজোড়ে প্রণাম জানালাম বাবা অমরনাথের উদ্দেশ্যে। নিজের কাছে ডাক পাঠিয়ে আজ বাঁচিয়েছেন আমাকে।
এই খবরের রেশ কাটতে না কাটতেই এসে গেলো ১২ তারিখ। ১১ তারিখেই সব চেক করে নিয়েছিলাম যে প্রয়োজনীয় সব কিছু নিয়েছি কি না। অন্য সব কিছুর পাশাপাশি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ছিলো একটি কাগজ, যাতে ১৮-২০ পরিবারের নাম গোত্র লেখা। আমার অমরনাথ যাবার খবর পেয়ে সবাই পুজো দিতে বলেছেন যার যার পরিবারের নামে। সবার আদেশ শিরোধার্য করে রুকস্যাক কাঁধে ঝুলিয়ে ১২ তারিখ রাত নয়টায় ট্যাক্সি ধরলাম। গন্তব্য হাওড়া স্টেশন।
হাওড়া তে সহযাত্রীদের সাথে আলাপ হলো। এক কাকিমা, আগের বছর ও অমরনাথ গেছিলেন, বললেন যে এবারো বাবা ডাক পাঠিয়েছেন। এক বয়স্ক জেঠু জেঠি আলাপ হওয়া মাত্র আমাকে নিজের ছেলে বানিয়ে নিলেন। পরিস্কার বলে দিলেন বাকি ট্রীপ ওনারা আমার সাথেই থাকবেন। এছাড়াও আরো অনেক জন। শুধু বাংলা থেকে নয়, আমাদের সাথে যাবেন দুই ত্রিপুরাবাসী বাঙালি পরিবার। এছাড়াও কোলকাতার এক বড়ো ব্যবসায়ী, আমার গত বছরের চারধাম যাত্রার সাথী, সেও আসছে খবর পেলাম, তবে সে ডাইরেক্ট জম্মু তে আমাদের সাথে যোগ দেবে। আলাপ পরিচয় সাঙ্গ হলে বাবা অমরনাথের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে আমরা চড়ে বসলাম হিমগিরি এক্সপ্রেসে। আমাদের যাত্রা হলো শুরু।