প্রবন্ধে শম্পা সাহা

যৌনতা ও আমরা

যৌনতা শব্দটা এখনো আমরা উচ্চারন করতে ভয় পাই, লজ্জা পাই, কুন্ঠা তো অনেক ছোট কথা। তারমানে এই নয় যে সারাক্ষণ সর্বদা কথা বার্তা বা জীবন চর্চায় যৌনতার চাষ করতে হবে কিন্তু যদি এর সঠিক সংজ্ঞা, ব্যাখ্যা, ব্যবহার, ও উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে অন্তত সন্তানের ভালোর জন্য সঠিক তথ্য দেওয়া যায় তাহলে হয়ত কিশোর বয়সের অনেক ভুলের হাত থেকে তারা বাঁচাতে পারে, বা মধ্য বয়সের একাকীত্বের হাত থেকে। কিশোর বয়স না হয় বোঝা গেল কিন্তু মাঝ বয়স। হ্যাঁ এই বয়সে মেয়েরা যতই সংসার বা ছেলেমেয়েদের নিয়ে ব্যস্ত থাক কখনো কি মনে হয় না, আমার স্বামী আমাকে আর ভালবাসে না বা স্বামীর কথা অনুযায়ী চাল , ডাল , নুন, তেল বা ছেলে মেয়ে ছাড়া বা সংসার ছাড়া আর কি কথা বলব। ফলে মনের সুকুমার প্রেম, গভীর গুরুত্ব পাবার আকুতিটা চাপা পড়ে আর তা প্রকাশিত হয় কখনো দীর্ঘশ্বাস কখনো বিরক্তি আবার কখনো বা বিষাদে। আমরা যদি জীবনের প্রতিক্ষেত্রে সবকিছু কে যথাযথ কাজে লাগাতে পারি, তাহলে হয়ত বিষন্নতার রোগটা আমাদের এত সহজে গিলে ফেলত না। বাবা মা শুধু যে আমাদের বাবা মা নন, তাদের নিজেদের যে একটা প্রেমজ সম্পর্ক আছে বা থাকা উচিত তা আমরা কজন ভাবি? বড় হয়ে নিজেরা প্রেমে ব্যস্ত হয়ে পড়ি কিন্তু সিঙ্গল মাদার, বা ফাদার হলে ও তাদের শারীরিক বা মানসিক চাহিদার কথা কজন ভাবি? বরং মাঝরাতে ঘুম থেকে উঠে তাদের একটু অন্যভাবে দেখলে মনে মনে অপরাধ বোধে ভুগি, আর তাদের ও ভুগতে বাধ্য করি। আর যৌনতা হীন জীবন তো আদর্শ, তা তাকে পূজনীয় করে তোলে কিন্তু নিজের বেলা? আসুন আমরা একটু বড় হই, কিশোর বয়সী ছেলেমেয়েদের বন্ধুদের বা ভুলভাল মাধ্যমে যৌনতার শিক্ষা পেতে না দিয়ে শেখাই যা ঠিক, যা ন্যায়, দরকারে টিন এজ কাউন্সেলিং এর সাহায্য নিই, কিন্তু ওদের ঠিক ঠাক ভাবতে, ঠিকঠাক বাঁচতে শেখাই। এটাও শেখাই যৌনতা কোন পাপ নয়, তা হলে সমস্ত জীব সমাজই পাপী। বরং খিদে তেষ্টা বা প্রাতঃক্রিয়ার মতই স্বাভাবিক কিন্তু চাইলেই যেমন কারোর বাড়ির উঠোনে, বা, জনসমক্ষে তা করা উচিত নয়, নির্দিষ্ট সময় ও স্থান চাই যৌনতা ও তাই তাতে মনে হয় ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কিশোর কালীন দূরত্বের অনেকটা পার করতে পারব।
(সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামত)
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।