চাষাবাদের দায়িত্ব সব আষাঢ়েরই কাঁধে,
ধার্মিকও খুব জগন্নাথের রথের দড়ি বাঁধে।
কাজের চাপে ব্যস্ত ভীষণ সদায় মাথা ভার
মা বসুধার ভরসা অনেক বড় ছেলে তার।
শ্রাবণ ভীষণ বাউন্ডুলে এই আছে, এই নেই,
বর্ষা সাথে পিরিতে মজে নাচে যে ধেই ধেই।
অতিরিক্ত হলেই মায়ে বলে- ‘এবার থামা…..’
তালের পিঠে, ইলিশ প্রিয় রঙ বে-রঙের জামা।
ভাদর চলে লদর পদর কেঁদে ভাষায় শুধু,
বুনো ওলে সরষে লেবু লাগে যে তার মধু।
ঘোলা জলে টাঙা ফেলে ধরে যে শোল বোয়াল,
বিশ্বকর্মা-রান্না পূজায় ফেরায় মনের হাল।
ছেলে আশ্বিন খুব বিনয়ী ধুতি পাঞ্জাবি গায়,
আগমনীর সুর ভাঁজে রোজ লুচি আলুর দম খায়।
শিশির ভেজা কাশ-শিউলি-পদ্ম যে তার প্রিয়,
কুয়াশা মাখা শারদ মেলা মানেন তিনি শ্রেয়।
রূপে কার্ত্তিক যত সুন্দর গুনে ততই জড়,
খামখেয়ালিপনায় সবাই কাঁপে থর থর।
কালি পূজায় পটকা ছোঁড়া, ভাই ফোঁটাতে খাওয়া,
মাঝে মাঝে ঠান্ডা মেজাজ কোথায় যেন হওয়া।
অঘ্রান খুব দায়িত্বশীল ফসল তোলায় ব্যস্ত,
ঠান্ডা মাথার, পরিশ্রমী, মাঠেই সূর্য অস্ত।
জগদ্ধাত্রী, নবান্নে তার ভীষণ ভাবে মতি,
সবকে নিয়ে চলতে জানে চায় না কারো ক্ষতি।
জন্মজড় পৌষী শুধু রোদপিঠ হয়ে শোয়,
কখনো খায় পিঠে পুলি কখনো ঘোল মোয়।
বুনো দেবীর পুজো সে যে নিজের হাতে করে,
ঠান্ডা খুবই রাগ জানে না পশম কাপড় পরে।
মাঘের কথা বলবো কি আর গম্ভীর তাও ঠান্ডা,
সরস্বতীর খিচুড়ি চায়, প্রিয় ভীমের মন্ডা।
রুচিশীল আর মেধাবীও প্রেমিক প্রেমিক হৃদয়,
অনায়াসে ষোড়শী মন করতে পারে জয়।
ফাল্গুনী তো সুন্দরী খুব সাজেও পরিপাটি,
হোলি খেলা ভীষণ প্রিয় মনটিও তার খাঁটি।
প্রেম বিরহ সে ই বোঝে খোঁজে প্রিয়র মন,
বাসন্তি মা-র পুজোর তরে ফুলে ভরায় বন।
ছোট্ট মেয়ে চৈতি তাদের ছটফটে আর মিষ্টি,
কাঁচা আমের গন্ধে মাতে লাউ এ খুঁজে পুষ্টি।
গাজন মেলায় রাত্রি জেগে পেলো মনের মানুষ,
সেই মানুষটাই ছেড়ে যেতে বুক ফেটে বে-হুঁশ।
বসুধা আর ভাস্কর বাবুর ছেলে-মেয়েই প্রাণ,
এসো সবাই আমরা করি তাদের জয়গান।