• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক কোয়ার্কো ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব – ৯)

নয়

জায়গাটার ব্যাপারে অনেক শুনেছি। বার কাম রেস্টুরেন্ট। অ্যান্টিসোশ্যালদের আখড়া। অয়ান্টিসোশ্যালদের আখরা। আমরা ঢুকে বসলাম। ডিস্কো লাইটিং হচ্ছে চারিদিকে। এক প্রান্তে একটা আলো ঝলমলে স্টেজ। কান ফাটানো অর্স্কেস্ট্রার আওয়াজ। স্টেজের ওপর, ছটা চেয়ারে লাইন দিয়ে বসে আছে ছটা সুন্দরী। ঝকঝকে সল্পবাসের পোষাকে তাদের দারুন সেক্সি দেখাচ্ছে। আমরা একটা টেবিল নিয়ে বসলাম। রামদা হেঁকে অর্ডার দিল, “ওই আমার একটা রাম আর ঠান্ডা জল সঙ্গে ফুল তন্দুরী”। ওয়াটার কাছে আসতে আমরাও এক পেগ করে হুইস্কি অর্ডার দিলাম। স্টেজে দেখলাম একটা মহিলা গান ধরেছে ‘শিশা হো ইয়া দিল হো টুট জাতা হ্যায়’। দু পাত্র রাম খেয়ে রামদার বেশ আমেজ এসেছে। দুঃখ করেই বলল, “আগে এই সব মাগিদের পেছনে কম টাকা উড়িয়েছি! কয়েকটা মাগি নিয়ে কয়েকবার দিঘাও ঘুরে এসেছি। কিন্তু আমার কচি ছেলেটা মারা যাওয়ার পর আর এসব ভালো লাগে না। সবই হয়তো আমার পাপের সাজা”।
কান ফাটানো বাজনা আর গানের আওয়াজে পাশে বসা লোকের কথা শোনাও দায়। বেশ চিৎকার করে কথা বলতে হচ্ছে। এবার দুজন সুন্দরী উদ্দম নাচ শুরু করল। সঙ্গে কি সব গান হচ্ছিল “ম্যায় তো তন্দুরী চিকেন” সামনের দিকে বসা কিছু লোক বান্ডিল থেকে এক একটা করে নোট মেয়ে দুটির উদ্দেশ্যে ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিচ্ছে। শ্রেয়ান নাচ দেখে বিভোর হয়ে গেছে। আমি চারদিকটা ভালো করে দেখে বুঝলাম আশে পাশের লোকেরা আমাদের ফলো করছে না। আমাদের কোনো কথা শুনতেও পাবে না। রামদাকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “আচ্ছা দুদিন আগে কাউকে কিডন্যাপ করে ধাপায় নিয়ে আসা হয়েছিল?” রামদা শুনল, একটু সময় নিয়ে বুঝল এবং ভাবল। তারপর বলল, “হ্যাঁ শুনেছি। কিন্তু আমি করিনি। এটা জগার কাজ। সত্যি বলতে কি একসময় অনেক খুন করে এই ময়লার ঢিপিতে লাশ গুম করেছি। সেই ন বছর বয়স থেকে লোকের গু, মুত ঘেঁটে আজ আমি এত বড় হয়েছি। আজ আমি কাবারি মাফিয়া। আচ্ছা, আছা লোক আমাকে দেখে চমকায়। কিন্তু এই সব ছ্যাঁচড়া কাজ এখন আর পোষায় না। এটা শালা জগা হারামির কাজ। দাঁড়া ভাই মুতে আসি । আমি তোদের জগার কাছে নিয়ে যাব”। এই কথা বলে উঠল বাথরুমে যাবে বলে। আমি বললাম, “ আমরাও একটা সিগারেট খেয়ে আসি বাইরে থেকে”।
শ্রেয়ান আর আমি বাইরে বেরিয়ে সিগারেট খাচ্ছি। আমি বললাম, “জানিস শ্রেয়ান, আমার এটাই মনে হচ্ছে যে আমায় এখানে মানে এই ধাপাতেই কোথাও রাখা হয়েছিল”। হঠাৎ ভীষন একটা আওয়াজে আমার কথা থেমে গেল। কিসের আওয়াজ? মনে হল বারের ভেতর থেকেই আওয়াজটা এল। আওয়াজটা চকলেট বোমের মতো। হঠাৎ বারের দরজা ঠেলে দুজন লোক দৌড়ে বেরিয়ে এল। একজন বলল, “খুন, খুন। রামদাকো কোই ঠোকা দিয়া”। সঙ্গে সঙ্গে আমি শ্রেয়ানকে বললাম, “রান শ্রেয়ান, কুইক”। বলেই আমি দৌড় লাগালাম বড় রাস্তা ধরে। শ্রেয়ান বোধ হয় কিছু না বুঝেই আমার পিছু নিল। একটা রানিং ট্যাক্সিকে হাত দেখিয়ে স্লো অবস্থাতেই দরজা খুলে ঢুকে পড়লাম। শ্রেয়ানকে বললাম, “শ্রেয়ান, কুইক ফলো মি”। শ্রেয়ানও ট্যাক্সিতে ঢুকে পড়ল। শ্রেয়ান হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল “আরে আমার বাইক তো রয়ে গেল”। আমি বললাম, “কাল পেয়ে যাবি। নাও জাস্ট শাট আপ”। ট্যাক্সি ওয়ালাকে বললাম “দমদম এয়ারপোর্ট চল”।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।