ভয়ে ভয়ে বিজয় ফোনটা রিসিভ করল , “হ্যালো – বিজয় তুমি ভয় পাচ্ছো কেন ?” বিজয় চোখ তুলে চারিদিক দেখতে লাগলো, না, কোথাও কেউ নেই , আবার ফোনের ওদিক থেকে আওয়াজ আসছে “বিজয় তুমি ঘামছো কেন ?” বিজয়ের সারা শরীরে ততক্ষণে ঘামের বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে , শরীরের শক্তি যেন নিমেষে অবলুপ্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল বিজয় । সকাল তখন ৭টা বাজে আবার বন্ধুরা ডাকাডাকি শুরু করলো, “তোর কি হল বলতো? আগে তো রোজ সকালে উঠে যেতিস” , বিজয় – “আচ্ছা তোরা একটা কথা বলতো কাল রাতে আমি বিছানায় কি ভাবে আসলাম? আমি তো বাইরে ছিলাম।” বন্ধুরা হাসতে হাসতে বললো, “তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে ? তুই নিজে তো ফোন করে বিছানায় আসলি।” “সত্যি বলছিস তোরা , কি জানি কিছু মনে করতে পারছি না।” বিজয় উঠে তৈরি হয়ে কলেজে চলে যায়, বিজয়ের আজ পড়াতে মন বসছে না বারবার ফোনটা দেখছে আর ভাবছে নম্বরবিহীন ফোন কি ভাবে আসে? তার ফোনটা খারাপ হয়ে যায়নি তো? বিজয়ের পাশে বসেছিল আরফ, ওকে বিজয় ওর ফোনে একবার কল করতে বললো, আরফ কল করলে বিজয়ের ফোন বেজে ওঠে , ঠিকই তো আছে। ফোন নম্বর উঠছে তো ।
তারপর কেটে যায় একটা দিন , বিজয় মনে মনে ঠিক করে এ বার যদি কল করে আমি ভয় না পেয়ে কথা বলে সব জানবো , যথারীতি আবার ১২ টার দিকে বিজয়ের ফোন আসে বিজয় ফোনটা নিয়ে বাইরে যায়, “হ্যালো- বিজয়? আজ ভয় পাবে না, তুমি আমার ভালোবাসাতে বিশ্বাস করো , আমরা এক স্কুলে পড়তাম , আস্তে আস্তে মেয়েটা সব গল্প করতে থাকল । বিজয়ের এবার যেন কেমন চেনা চেনা লাগতে লাগলো অনেকক্ষণ গল্প করল আজ তার ভয় কেটে গেলো কিছুটা। বিজয় জিজ্ঞাসা করল “তোমার নম্বর কেন দেখায় না ?” “আর তোমার নাম টা কি সেটা তো বলো”,মেয়েটি শুধু বললো, “বলব বলব সব আজ থাক”, এরপরেই ফোনটা কেটে গেলো। এইভাবে চলতে থাকে বেশ কিছু দিন , এখন যেন বিজয় নিজে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করে ,বন্ধুদের সাথে আর বেশি কথা বলেনা । হস্টেলের সব ছেলেরা বিজয়ের রাতে কথা বলার ঘটনা জেনে যায় , বন্ধুরা কিছু জিজ্ঞাসা করলে বিজয় আর বলে না তাই সব বন্ধুরা একটা প্ল্যান করে যে তার ফোনটা নিয়ে রাখবে আজ রাতে কে ফোন করবে সেটা জানবে। বিজয়ের পাশের রুমে আকাশ একা থাকত ওর রুমে ফোনটা রাখল চুরি করে । বিজয় অনেক খু্ঁজলো, সবাইকে জিজ্ঞাসা করলো কেউ কিছু বলল না , ফোন না পেয়ে বিজয় মন খারাপ করে শুয়ে পড়ে । পরের দিন সকালে সবাই উঠে পড়েছে কিন্তু আকাশ ওঠেনি , সকাল সকাল আকাশের রুমে সবাই যায় কাল বিজয়ের ফোনের রহস্য ভেদ করতে।আকাশের দরজাটা না খোলায় সবাই ফিরে যায়। সকাল তখন ৭টা বাজে আকাশের রুম তখনও বন্ধ , জোর করে ডাকাডাকি করে ও দরজা না খোলায় বন্ধুরা দরজা ভেঙে ঘরে ডুকে পড়ে । এ কি অবস্থা আকাশ মাটিতে পড়ে আছে কান এর ভিতর দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে , কোনো কথা বলতে পারছে না সে যেন একটা মৃতপ্রায় লাশ।