সাপ্তাহিক টুকরো হাসিতে কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায় – সাত

টুকরো হাসি – সাত

বিপদের দিনে

খবরের কাগজ দেখে বিতান বলল,যা সব খবর দেয় দেখলে খুবই ভয় করে।ওই মহিলার ছবি দিয়েছে।টিভিতে দেখেছিলাম স্বামী খুন হয়ে যাওয়ায় আছাড়ি পিছাড়ি কাঁদছিল।আর এখন।
গুলেদা বলল,স্বামী রত্ন যদি খুন হইয়া যায় কান্দবো না?আমার তো শুইন্যাই ক্যামন দুক্কু দুক্কু ভাব হইতাছে।
বিতান বলল,পুরোটা শোন।লিখেছে ওই মহিলা আর প্রেমিক দুজনে মিলে লোকটাকে মেরেছে।প্রেমিকের ছবিও দিয়েছে।
হেইয়া তো এতক্ষণ কস নাই।মাইয়াডার ছবি দেইখ্যা মোহিত হইয়া গেছ।দেহা দেহি ছবিডা।দেহি হেইডা মুদিয়ালির টাউক্যা শম্ভুর নাকি।হেইডার তো অপকম্মের শ্যাষ নাই।
গুলেদাকে কাগজটা এগিয়ে দিল বিতান।গুলেদা ছবি দেখে বলল,না হেই চোরডা না,এইডা অন্যডা।
প্রবাল বলল,এ যা খবর দেখলাম তাতে তো বিয়েটা খুব ভয়ের।
তর অত চিন্তা করার কি আছে?তুই তো বিয়া করবি না।ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা কইরা বইসা আছো।পাছে তর বন্ধুরা গিয়া আনন্দ করে।হ্যাগো খাওয়াইতে হয়।
প্রবাল বলল, বিয়ে করছি।সব ঠিক হয়ে গেছে।
ওর কথা শুনে আমরা হৈ হৈ করে উঠলাম।প্রবাল মুখটা ব্যাজার করে বসে আছে।
বললাম,মুখটাকে ওই রকম করে রেখেছিস কেন?
চারিদিকে যা হচ্ছে তাতে বিয়ে করতে ভয়ই করছে।
আরে তর ভয় নাই।পাড়ায় আমরা আছি না।বউয়ের প্রেমিক নাটক শুরু হইলে ঠেঙাইয়া হেইডার পা ভাইঙা দিমু।ও নিয়া ভাবিস না।তবে অন্য অনেক ভয়ের বিষয় আছে হেইয়া নিয়া আমাগো কিছু করার নাই।
সে আবার কি?ভয় ভয় চোখ করে তাকাল প্রবাল।
ধর বিয়া হইলে যদি তর মায় ভাবে বউ আইয়া পোলাডারে পর কইরা দিল।তাইলে সংসারে নিত্য অশান্তি।দেহস না সিরিয়ালে দেহায় একটা অন্য বাড়ির মাইয়ার জীবন কেমন অতিষ্ঠ কইরা তোলতাছে বাড়ির লোকেরা।হ্যাগো সমস্যা হয়ত সিরিয়াল শ্যাষ হইলে মেটবে,কিন্তু আমাগো পাড়ায় পাড়ায় পরিবারের সমস্যা না মরা পর্যন্ত মেটবে না।তারপর ঘরে ঘরে যত বুইনেরা,হেরা তো রায় বাঘিনী হইয়া আছে।পোলাগুলানের অবস্থা হয় পিং পং বলের মতো।এইদিকে গেলে মাইর,আবার অন্যদিকেও মাইর।
প্রবাল বলল,তাহলে বিয়ে করাটা তো খুব বিপদের হল।এতদিন বেশ ছিলাম।
অত ঘাবড়াইলে চলে?এইডাই জীবন।ফুটবল খেলায় দেহস না বল নিয়া এরে ওরে কাটাইয়াই গোল দেতে হয়।ওইরকম আজীবন কায়দা কইরা যাইতে হইবে।না পারলে ভালো খেলোয়াড় হইয়া বাঁইচা থাহার উপায় নাই।
প্রবাল বলল,গুলেদা সবাই আমার বিয়েতে যাবে তো? পাশে থেক।
যামু না ক্যান।আমি তর দাদার মতো।অরা হগলডি তর বন্ধু।হগলডিরই উচিত তর পাশে থাহা।তর এমন বিপদের দিনে।  
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।