পাক্ষিক প্রতিযোগিতা – ২৮
বিষয় – সন্ধিক্ষণ/নতুন আশা
নতুন সূর্য
মনে পড়ে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় গানটি: “নতুন সূর্য আলো দাও, আলো দাও”। নিশ্চই মনে আছে সকলের। গানটির মাধ্যমে ফুঁটে ওঠে এক প্রত্যাশার কিরণ, এক না পাওয়ার যন্ত্রণার সমাপ্তি এবং এক নবদিগন্তের উন্মোচন! কিন্তু এই ‘আলো’ মুখোমুখি হয়েছিল এক ভয়ংকর সংকটের। অস্তমিত হয়েছিল তাঁর সকল স্রোত। তাঁর সকল ঐশ্বর্য। গ্লানি এবং এক অজ্ঞাত আঁধারের মুখোমুখি এই জগৎ। কিন্তু মানুষের অফুরান প্রচেষ্টায় আজ এই নবীন বর্ষে পা দিয়েছি আমরা। লুপ্তপ্রায় এই মনুষ্যজাতি ফিরে পেয়েছে তাঁর ভাষা, তাঁর ইচ্ছ পূরণের চাবিকাঠি!
বিগত বছর ছিল এক অভিশাপ। গ্রহ নক্ষত্রের অবিরাম বিচরণের কারণে হোক বা কোন ষড়যন্ত্র, এক নারকীয় যন্ত্রণায় রূপান্তরিত হয়েছিল এই অস্তিত্ব। গৃহবন্ধন। চারিদিকে শুধু হাহাকার। সমস্ত ভূমণ্ডল এক অভিশপ্ত কালিমায়ে লিপ্ত। তবুও পরাজয় স্বীকার করিনি ওই ক্ষুদ্র কীটের সম্মুখে।সংগ্রাম ছিল অব্যাহত। কালের অমোঘ নিয়মে নতুন বছরের আগমন। নতুনভাবে সবকিছু শুরু করা। বছরের শুরুতেই ইংরেজি বছরের উজ্জাপন। পাশাপাশি ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবের কল্পতরু উৎসবের জোয়ারে ভাসলাম আমরা! আসছে মকর সংক্রান্তির পুণ্যলগ্ন। ভাগীরতির শীতল সলিল এবং ঘরে ঘরে পিঠে পুলির বিপুল আয়োজন যেন উৎসবের এক দ্বিগুন মাত্রায় আনন্দ প্রদান করবে। ধীরে ধীরে সকল গ্লানি মুছে যাবে। বাগদেবীর আরাধনা থেকে শুরু করে, রঙ্গ আবিরের খেলা ও পয়লা বৈশাখের দিবস গুলি মনে করিয়ে দেবে এক অনন্য সত্য “বৈচিত্রের মাঝে মিলন”।
এ কথা সত্য যে নতুন বছরের সূচনা হয়েছে মাত্র। কিন্তু যত সময় অতিবাহিত হবে, আশার আলো হবে আরো দৃঢ়! মন থেকে বিতাড়িত হবে সকল দুশ্চিন্তা। পারস্পরিক মেলবন্ধনে দৃঢ় হবে এই চেতনা। ফিরে পাব সেই পুরোনো দিন, সেই পুরোনো রজনী। জীবন দেখাবে এক নতুন গন্তব্য। থাকবে না কোন দ্বন্দ। থাকবে না কোন ইচ্ছে অনিচ্ছের সংঘাত। থাকবে শুধু মধুসূদনের বাঁশির সমধুর সুর, যেখানে লুকিয়ে আছে শুধুমাত্র প্রেম, যা অজেয়, অমূল্য ও অপরিহার্য!!