Mon 20 October 2025
Cluster Coding Blog

Cafe কলামে - আত্মজ উপাধ্যায় (পর্ব - ২৪)

maro news
Cafe কলামে - আত্মজ উপাধ্যায় (পর্ব - ২৪)

বিবাহঃ নারী পুরুষের যৌনমিলনের অনুমতি? - ১৪

প্রাচীনকালে, বিয়ের বয়েস, প্রায় পৃথিবীর সকল পৌরাণিক সাহিত্যে, বৃদ্ধের সাথে তরুণী স্ত্রী এরকম দেখা গেলেও মোটামুটি,  কণ্যার বয়েস ১০ ও তার ৩ গুণ বয়েস পাত্রের ছিল। অর্থাৎ পাত্রের ৩০ বছর। এই বয়সের বিয়েই কাম্য ছিল। রাজ- রাজারা, ক্ষত্রিয় ও ব্রাহ্মণরা – যারা সমাজে শক্তি শালী ও প্রভাবশালী ছিল তারা একাধিক বিয়ে করতে পারত ও উপহার সামগ্রী হিসাবে কুমারী কন্যা দান উল্লেখ আছে।
মহাভারতে দময়ন্তী, শকুন্তলা, দেবযানী, সত্যবর্তী, অম্বিকা, গান্ধারী, কুন্তী, মাদ্রী, দ্রৌপদী, উপী প্রভৃতি মহিলারা পূর্ণযৌবনে স্বামী পান। পূর্ণ যৌবন অর্থে দেখাযায় ১৪ বছর বয়সেই মেয়েদের স্তন ও শারিরীক গঠন নারীত্ব প্রকাশ করে। কন্যার বিয়ে দিতে না পারলে পড়শীদের সমালোচনা শুনতে হত। এবং মেয়েরা কুড়িতে (২০ বছর) বুড়ি ধরা হত।
অনুশাসনপর্বে দেখা যায়, কন্যা ঋতুমতী হয়ে তিন বছর অপেক্ষা করবে, তাতেও যদি সে বর না পায় তা হলে চতুর্থ বছর নিজেই বর বেছে নেবে।
বিয়েটা একটা প্রতিষ্ঠান হিসাবে ধরা হত। যেমন রাজা, মন্ত্রী, অমাত্য, পারিষদ বর্গ, চাকর- একটা পদ মর্যাদা থাকে, তেমন নারীও সেকালে যেহেতু উপায় করতনা সেইহেতু স্বামীর অধীন ও দাসী হিসাবে মর্যাদা ছিল। কিন্তু বাড়ির কর্তার স্ত্রী হিসাবে অন্যদের থেকে উচ্চ মর্যাদার ছিল। মানে বাড়ির গৃহকর্ত্রীর মর্যাদা ২য় স্তরে।
অল্প বয়সে, সেকালে যাদের বিয়ে হত, তাদের কোন স্বাস্থ্য হানির গল্প আমার নজরে আসেনি। বরং এটা দেখা গেছে, অল্প বয়সে স্বামীর পরিবারে এসে স্বামীর আদব কায়দা বংশের আচার বিচার ইত্যাদির সাথে অনায়াসে নিজেকে মিলিয়ে নিতে সক্ষম হত। মানুষ বয়েসের সাথে সাথে তার অভিজ্ঞতা ও তার পরিবেশের ছাপ তার মধ্যে বসে যায়। ফলে একালে দেখা যায়, ২৫ এর উপরে যে মেয়ের বিয়ে হয় তার সাথে তার স্বামীর বনিবনা প্রায় হয়না। মাঝখানে একটি শিশুর জন্ম হয়ে যায়, ফলে শিশুর জন্য নিজেদের – স্বামী ও স্ত্রীর বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটাতে অনীহা থাকে। এই দুজনের জীবনের সকল সুখ আহ্লাদ ত্যাগ করা কাম্য বলে আমার মনে হয়না। ফলে বিয়ে অল্প বয়সে যেগুলি আগে ঘটত, সেগুলিতে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যেকার বোঝাপড়া ও ঐক্য সুন্দর দেখা যেত।
গ্রামে গঞ্জে আজও অল্প বয়সে বিয়ে হয়, এবং শহরের চেয়ে অধিক সুখী তারা হয়।
আমাদের শহরের শিক্ষিত মহলের ও গ্রামে গঞ্জের অশিক্ষিত মহলের মধ্যে তূলনা করলে, দেখা যাবে, গ্রামীন লোকের সংখ্যা অনেক বেশি ও তারা শহরের শিক্ষিত লোকের চেয়ে অনেক বেশি সুখী। গ্রামের লোকেদের উচ্চাশা কম, শহরের লোকেরা লোভী ও উচ্চাশা অনেক বেশি যা তাদের ক্ষমতার বাইরে। মূলতঃ আপনি বিশাল কেউকেটা হয়ে আপনার কি সুখ? পদমর্যাদা ? সম্মান? আর্থিক ক্ষমতা? ভাবুন এসব অর্জনের জন্য আপনার কত বেশি পরিশ্রম ও ভয় আপনাকে তাড়া করে! আপনার নিরাপত্তার টানাপোড়েনে আপনার বহু রকমের অসুখে ভোগে, আপনি মারা গেলে কি হবে? রাজার মুকুটের তলায় অনেক চিন্তা থাকে, তার জন্য তিনি সুখী নন। গরীব চাষার চিন্তা নেই। তাদের সরল হিসাবের সরল জীবন। অল্প বয়েসে বিবাহ মেয়েদের সরল জীবনকে একটা রূপ দেয়। তাদের জীবনে পূর্ণতা দেয়। শুধু মেয়েদের নয় পুরুষদেরও।
বর্তমান সমাজে মহিলারা মনে করে তাদের নিজেদের জীবনে পূর্ণতা দরকার। ফলে তোইরি হয়েছে ব্যক্তি নারীর জীবন, যা একমাত্র একক হিসাবে। তারা মনে করে তারা যথেষ্ট শক্তিশালী ও পুরুষের অধীনস্থ থাকার প্রয়োজন নেই। তারা এটাও মনে করে বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় পুরুষরা সকল সুবিধে ও সুখের অধিকারী আর মহিলারা পরাধীন ও শুধু লাঞ্ছনার ভাগী।ফলে শহরের নারীরা পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে নারীবাদ বলে এক দর্শনের সৃষ্টি করেছে। ১৯২০ সালের পর থেকেই এর শুরু কিন্তু ১৯৫০/৬০ এর কাছাকাছি তারা মারাত্মক আগ্রাসী নীতি নিয়ে চলেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মহিলারা মিথ্যা ও কপটের ছল নেয়। ও তাদের যৌন অংগগুলিকে অস্ত্র বানিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা নিয়ে আসছে। ফলে সমাজে ধর্ষণ নামক শব্দের অতিরঞ্জিত ব্যবহার ও মহামারী বানিয়েছে।
যেমন একটা উদাহরণঃ বিবাহিতা স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা আনছে। এক্ষেত্রে সে নিজেই অপরাধী। কারণ স্ত্রীর সাথে যৌন সংগম পুরুষ করবে বলেই তাকে ভরণ পোষণ ও দায়িত্ব নিয়েছে। এবার স্ত্রী যদি স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা আনে তাহলে বিবাহের চুক্তি সে ভংগ  করেছে।
২য় কথা স্ত্রী মানেই দাসী সে কোন প্রকারেই স্ত্রীর মানে বন্ধু করতে পারেনা, বা স্বামীর মানে বন্ধু বানাতে পারেনা। স্বামী মানেই প্রভূ।
বিয়ে অর্থ এতদিন ছিল স্ত্রী / অর্ধাংগিনী/ অঙ্কশায়িনীর সাথে যৌথ জীবন ও বংশ রক্ষা। বর্তমানে এই বিয়ের মূল ভিত্তিটুকুই  নড়ে গেছে।
এছাড়া বিয়েতে আগেরকার দিনে কতগুলি নিয়ম ছিল কাকে বিয়ে করা যাবে কাকে বিয়ে করা যাবেনা ইত্যাদি। 
সমাজে যার যে পেশা বা সামাজিক মর্যাদা তেমন দের মধ্যে বিয়ে পাত্র পাত্রীর মধ্যে গ্রহন যোগ্য।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register