Mon 27 October 2025
Cluster Coding Blog

অথ শ্রী উপন্যাস কথায় আরণ্যক বসু (পর্ব - ১৪)

maro news
অথ শ্রী উপন্যাস কথায় আরণ্যক বসু (পর্ব - ১৪)

শালজঙ্গলে বারোমাস ছয়ঋতু

কিছু বনাঞ্চল থাক আকাশের নিচে বনদেবতার হাসি বিভূতিভূষণে কিছুটা সময় যেন বাস থেকে নেমে বিনম্র বিস্ময় শুধু স্বপ্নজাল বোনে...

রাতের খাবার আয়োজনের সময় ওদের সবারই যেন দুচোখ ভরা ঘুমঘুম। ল্যাপটপ বন্ধ করার পর অমলেন্দু যেন খানিকটা উসখুস করছে। গন্ধ-ভুরভুর রান্নাঘরের কাছে চটজলদি খিচুড়ির রেসিপিতে নাক গলাতে গিয়ে , হঠাৎ থেমে উন্মনা ঠিক কী শুনলো ? -- দুই গলায় গলায় বন্ধু অনামিকা আর মেঘলার উচ্ছ্বসিত ফিসফাস আর চাপা গলার হিহি হাসির মৃদু হিল্লোল। অনামিকা বেশ রসিয়ে রসিয়ে মেঘলাকে বলছে--তোর অমলেন্দুকে তো একেবারে বোল্ড আউট করে দিয়েছে উন্মনা । উত্তরে মেঘলার ঠোঁট থেকেও চাপা হাসির সঙ্গে যে শব্দ ছিটকে উঠলো , সেটাও বেশ ঈঙ্গিতপূর্ণ -- যা বলেছিস। একেবারে দশে পনেরো। বেচারা অমলেন্দু এই বয়সে সিওর হোঁচট খেয়েছে । তা নয়তো উন্মনার এক কথায় এতদিনের নেশা ছেড়ে দিলো ? অথচ সন্ধে থেকে লক্ষ্য করছি , অমলেন্দু আঘাটার মাছের মতো খাবি খাচ্ছে । কাজ করতে করতে,আড্ডা মারতে মারতে মাঝে মধ্যেই পকেট হাতড়াচ্ছে বিড়ি দেশলাইয়ের জন্যে । যাস্ সালা ! একেই বলে ম্যাজিক ! অনামিকা ফোড়ন কাটলো । আচ্ছা, উন্মনার ব্যাপারটা কী বলতো ? তুই কিছু আন্দাজ করতে পারছিস? মেঘলা টি- টোয়েন্টির থার্ড আম্পায়ারের মতো দ্রুত সিদ্ধান্ত জানালো -- দু'চোখে স্লাইট মুগ্ধতা আছে ,যে মুগ্ধতা খানিকটা বিপজ্জনক। কিন্তু বাড়ি ফিরেই দেখবি সব সামলে নেবে। কষ্ট পাবে হয়তো বেচারা অমলেন্দু । অনামিকা একটু সিরিয়াস মুখ করে বললো -- আসলে পুরুষ আর মহিলার মধ্যে পার্থক্য এইখানে যে , আমরা বুকের চোরা কুঠুরিতে অনেক ব্যথার কবিতা , সুখ-দুঃখের গান লুকিয়ে রেখে দিতে পারি। অনেক ইরানী গোলাপের গন্ধও সেখানে লুকোনো থাকে। মৃত্যুর পরে সেটা আগুনে ছাই হয়ে যায়‌ অথবা মাটিতে তলিয়ে যায়। সারাজীবন পাশে থাকা মানুষটাও জানতে পারেনা তার কথা। কিন্তু বেশির ভাগ পুরুষই মায়ামৃদঙ্গের উচ্ছ্বাসটুকু খুঁজে বেড়াতে শুরু করে । জানে পাবে না, তবু খুঁজে বেড়ায়। তাই দুঃখ পায়, হোঁচট খায় ,তবু শেখে না । তুই বিলেত যাওয়ার আগে তোর বন্ধুকে অন্তত এইটুকু বুঝিয়ে যাস । কথাগুলো শুনে উন্মনা নিঃশব্দে বসবার ঘরে ফিরে এলো। তার মুখের রেখাগুলো ক্রমশ কঠিন হতে শুরু করেছে।মনে হচ্ছিল -- যদি তার বর এসে এখুনি বাইরে থেকে উন্মনা বলে ডাক দিতো,তাহলে এই মুহূর্তে কবিতা জীবনকে ফেলে রেখে, স্বামী সন্তান আঁকড়ে চার দেওয়ালের জীবনেই ফিরে যেতো। তবুও উন্মনা আবার বিস্মিত হয় , যখন দেখে অনামিকাদির ড্রয়িং রুমের বিশাল সোফায় বসে অভিজ্ঞ অমলেন্দু সস্নেহ শান্ততায় খাতার পাতায় কবিতার লাইন লিখে ছন্দ বিশ্লেষণ করছে দুটি কবিতা উন্মুখ প্রাণ প্রলয়‌ ও শুভব্রতর কাছে ; তখন সেও দুই তরুণ কবির শিক্ষার্থী মনের আকুলতার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করলো-- বাংলা ছন্দের স্তব্ধতার তর্জনীতে। বীজ আগে না তেল আগে , ডিম আগে না হাঁস আগে এই অমীমাংসিত প্রশ্নের সঙ্গে আরও একটা জিজ্ঞাসা যোগ হল -- কবিতার ভাব আগে না ছন্দ আগে ? কোনটা বেশি জরুরি ? কবিতার অনুষঙ্গ, না ছন্দের আকর্ষণ ! উন্মনার মনে হলো -- সেই কোন দূর যুগে,সেই কোন অনাগত বসন্তের উন্মুখ আবেশে, প্রাজ্ঞ কবিগুরু যেন কয়েকটি উন্মুখ প্রাণকে জীবনের অণু পরমাণু ভেঙে ভেঙে ,কাব্যের রহস্য বিশ্লেষণ করছেন! রান্নাঘর থেকে ভেসে আসা খিচুড়ির পাগল করা গন্ধও তাকে কবিতা থেকে বিচ্যুত করতে পারলো না। তার মনে হলো ,যদিও ডাল ভাত তরকারির জীবনটা বড্ড ও ভীষণভাবে সত্যি , তবু শিল্পবোধের আহ্বান যেন মরীচিকার মতো হাতছানিময়।গাছ থেকে আপেল পড়া যেমন সত্যি, প্রতিদিনের স্মৃতি; তবুও সেই আপেল পতনের মুহূর্ত থেকে মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কারের সত্যিটা আরও বেশি তীব্র ও অমোঘ। সবার আড়ালে নিজের খাতার পাতায় লিখে রাখলো --মা,সে ও তার মেয়ে-- এই তিনটি প্রজন্ম যেন শালজঙ্গলের বনজ গন্ধ আর পাতাঝরা কবিতার হাত ধরে শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। ‌ পরদিন খুব ভোরে , মেঘলাদির আশ্চর্য রোমান্টিক গলার গান শুনে ঘুম ভাঙলো সবার । খোলা জানলায় একটা হালকা শাল গায়ে জড়িয়ে ,আশা ভোঁসলের মতো নিঁখুত পরম্পরায় সকালের সুর ছড়িয়ে দিচ্ছে -- কে যেন আবির ছড়িয়ে দিলো ভোরের আকাশে... একটা অফ হোয়াইট টাটা সুমোর পক্ষীরাজ উড়ানে, ছোট্ট একটা কবিতা পরিবার চলেছে ভোর পেরোনো সকাল হয়ে , ডুলুং নদীর দিগন্তে চিল্কিগড়ের হাতছানিতে। মানুষের সভ্যতা আর অরণ্য যেখানে হাত ধরাধরি করে থাকে,তা প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টিশীল মানুষের বাসভূমি হয়ে ওঠে। গাড়ির সামনের সিটে বসে অমলেন্দুর এই কথাগুলো মনে হল। সেই কোন প্রথম যৌবন থেকে অমলেন্দু নাটকের দলের সঙ্গী হয়ে আসছে এই ঝাড়গ্রামে।ওদের মফস্বলী নাটকের দলটার নাম ছিল সমসংযোগ। কলেজ ইউনিভার্সিটির তাজা প্রাণ , নাটক কবিতাকে ভালোবেসে ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। কলকাতার বিখ্যাত দল নান্দীকার , বহুরূপী, সুন্দরম, থিয়েটার ওয়ার্কশপ-- সেই সময় তাদের সেরা প্রযোজনাগুলোকে নিয়ে যখন খড়্গপুর মেদিনীপুরে নাট্যোৎসবে আসতো, তখন তার রেশ থেকে যেত বহুদিন পর্যন্ত। অমলেন্দুর বাবা একজন যাত্রাশিল্পী ছিলেন। একইসঙ্গে খুব সুন্দর ক্ল্যারিওনেট বাজাতেন। থিয়েটারের থার্ড বেল আর যাত্রার ক্ল্যারিওনেটের সুর অমলেন্দুর মননে যেন রামকৃষ্ণদেবের কথা গেঁথে দিয়েছিল--থিয়েটারে লোকশিক্ষা হয় । আবৃত্তি আর থিয়েটার নিয়ে অমলেন্দু বহু জায়গা ঘুরে বেড়িয়েছে।আসলে ওদের ইউনিভার্সিটির বন্ধুদের দল আমেদিবিনা-র তিনজনের মধ্যে ছিল উচ্চাকাঙ্ক্ষা। শুধু মেঘলা আর অমলেন্দুর ছিল জীবনের গভীরে ডুব দেওয়ার মতো রোমান্টিকতা। মেঘলা কলকাতায় সাংবাদিক জীবনে থিতু হলেও , অমলেন্দু চেনা কক্ষপথ থেকে ছিটকে চলে গেছে কবিতা নাটক আর ছোটোখাটো সাংবাদিকতার জীবনে। তার একলা চলার পথে বারবার অনিবার্যভাবে টেনেছে ছড়ানো বাংলার অরণ্যানি আর বিভূতিভূষণের পথের মহাকাব্য অভিযাত্রিক। ‌ কনকদুর্গা মন্দিরের চারপাশের একমুঠো কোলাহল ছাড়িয়ে জঙ্গলের শুঁড়িপথে একটু নিচে নামলেই , মাঠময় পড়ে আছে এঁকেবেঁকে চলা নদী ডুলুং।নদী কোথা থেকে আসে আর কোথায় যায় তার খবর মানচিত্রের পাতায় থাকলেও, মানুষের ছেলেমানুষী বিস্ময়ে সে যেন চিরদিন ঠিকানাহীন! অনামিকার সুন্দর ব্রেকফাস্টের সঙ্গে মন্দিরের উল্টোদিকে দরমার বেড়া দেওয়া হোটেলে সাতসকালে সদ্য ভাজা আলুর চপ , ছোলা সেদ্ধ আর মুড়ির সুগন্ধ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। উন্মনার মনে হচ্ছিল -- এই অদ্ভুত শান্ততা যেন অবন ঠাকুরের আঁকা কন্বমুণির আশ্রমের ছবির মতো উঠে এসেছে। আহা ! পৃথিবীতে এমন সুন্দর জায়গা আছে ? নির্জন ডুলুং নদীর এক জেলে ডিঙি থেকে ঝুপ করে শব্দ তুলে , একলা মাঝির মাছ ধরার জাল গোল হয়ে ছড়িয়ে পড়লো নদীর লাজুক স্রোতে। ওরা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকলো , যেমন করে ঋত্বিক ঘটকের সুবর্ণরেখা ছবির নদীর দিকে তাকিয়ে থাকে নামহীন জেলে ডিঙি... তারপর কত পথ গাড়ির গতিভঙ্গিতে পেরিয়ে গেল ওরা । শিলদা , বেলপাহাড়ি পেরিয়ে শীতের নম্র সূর্যকে দক্ষিনায়ণের মাথায় তুলে , ওরা একসময় জনপদ পেরিয়ে গেল। পেরিয়ে গেল টিলাজঙ্গল , ছোট্ট ঝর্ণা। কয়েকবছর আগেও আতঙ্কে পান্ডুর হয়ে ছিল এইসব জায়গাগুলো। আজ রাস্তা হয়েছে। ভয় পেরিয়ে মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছে , এই নিবিড় টিলা অরণ্যের সৌন্দর্য দু'চোখ ভরে দেখতে! ওরা সবাই লক্ষ্য করছিল‌ ,যতই আমলাশোলের দিকে এগিয়ে চলেছে ,কবি প্রলয়ের দুটো চোখ যেন ক্রমশ চঞ্চল হয়ে উঠছে । দুটো চোখ কী যেন খুঁজছে । হালকা জঙ্গলের মধ্যে ইতিহাস হয়ে যাওয়া সেই আমলাশোল গ্রাম । কিছুটা দূরে ঝাড়খণ্ড রাজ্যের শুরু। প্রলয় চিৎকার করে উঠলো--আমরা এসে গেছি। গাড়ি থামতেই ছেলেমানুষের মতো দৌড়ে দৌড়ে খুঁজে বেড়াতে লাগলো সেই দারিদ্র্যরেখার আস্তানা , সেখানে এখন হয়তো আর অভাবের কান্না লেগে নেই , মৃত্যুর গন্ধও লেগে নেই ; শুধু পড়ে আছে অনাহারে মৃত্যুর মন কেমন করা স্মৃতি। অপুষ্টিতে নয়,অনাহারেই সেই মৃত্যু ঘটেছিল। কবি প্রলয়, সাংবাদিক প্রলয় , অনুভূতিপ্রবণ প্রলয় এক এক করে দেখাতে লাগলো প্রকৃতির অনন্যতায় জেগে থাকা গ্রামগুলোকে। সঙ্গে নেওয়া জল ফুরিয়ে যাওয়াতে রাস্তার ধারে একটা চালাবাড়ির দাওয়ায় শিশু কোলে দাঁড়িয়ে থাকা একজন সমবয়সী মায়ের কাছে জল চাইলো নিরুপায় ও তৃষ্ণার্ত উন্মনা। সঙ্গে সঙ্গে হাসিমুখে জল তো আসলোই, সঙ্গে এলো মাঝারি একটা বেতের ধামায় ঘরে ভাজা মুড়ি, পেঁয়াজ আর কাঁচালঙ্কা। থরথর আবেগে আর ভালোবাসায় ওরা প্রত্যেকেই বিহ্বল তখন। বাচ্চাটাকে আদরে কোলে তুলে নিলো মেঘলা ,আর মুড়ির মাধুকরীটুকু নিজের আঁচল বিছিয়ে যেন প্রাণ পেতে গ্রহণ করলো নারী উন্মনা, এদেশের মেয়ে উন্মনা। সেই অনন্য আস্বাদ কৃতজ্ঞতায় মুঠো মুঠো গ্রহণ করলো ওরা সবাই। অমলেন্দু পকেট থেকে একটা একশো টাকার নোট দিতে যেতেই , হাত জোড় করে লাজুক হাসলেন সেই মা ভারতবর্ষ। বললেন -- এইটুকুর জন্য , সামান্য জল মুড়ির জন্য কেউ পয়সা নেয় দাদা ? আপনারা এসেছেন আমাদের দাওয়ায় , এই তো অনেক সৌভাগ্য। টাকাটা ফিরিয়ে নিতে গিয়ে স্থিরচিত্র হয়ে যাওয়া নিরীশ্বরবাদী অমলেন্দুর মনে হল--এই মায়ের পিছনে দাঁড়িয়ে গুণগুণ স্বরে গান ধরেছেন স্বয়ং রামপ্রসাদ --- ঘরে অতিথি যদি আসে মা,না হয় যেন মুখ লুকাতে,ঘরে কাঁসার থালা কাঁসার বাটি মা,পায় যেন তায় দুটো খেতে,তোর সংসার ধর্ম বড় ধর্ম মা,তাই পারিনা ছেড়ে যেতে। শুধু রামপ্রসাদের এই মিনতি পাই যেন তোর চরণ ছুঁতে,চাই না মা গো রাজা হতে...রাজা হওয়ার সাধ নাই মা গো, দুবেলা যেন পাই মা খেতে... পথে করতোয়ার জন্য কিনে আনা বেশ কতগুলো ক্যাডবেরির একটা নিঃশব্দে বার করে দিল মেঘলা । শিশু কোলে মা , দূরের পাহাড় , জঙ্গলের আভাস, উদাসী হাওয়ার মতো পথ--সব কিছু মোবাইলের ক্যামেরায় বন্দি করে ওরা যখন বেলপাহাড়ির বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়ালো , তখন আদিগন্ত বিকেল যেন হাই তুলে বলছে-- এবার তবে শুভ সন্ধ্যাকে ডাকি ! মেঘলা যখন উন্মনাকে জড়িয়ে ধরলো , প্রলয় শুভব্রত যখন ওর থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিলো যে -- এবার থেকে আরও বেঁধে বেঁধে থাকবে‌ কবিজন্মের ওরা সবাই ; তখন একটু দূরে দাঁড়িয়ে সুন্দর করে হাত নাড়লো অমলেন্দু। বললো -- যোগাযোগ রাখবেন ম্যাডাম। যখন নির্দিষ্ট বাস পরম যত্নে উন্মনাকে বাঁদিকের জানলার ধারের সিটে জায়গা দিলো , যখন মাঝবয়সী কন্ডাকটার মৃদু হেসে বললো--দিদিভাই , এক মিনিট ; তারপর ড্রাইভারকে চেঁচিয়ে বললো--কাকা, তোমার জন্য জর্দা পান নেবো না বিড়ি ? ঠিক তখনই , বিদ্যুৎ চমকের মতো উন্মনার মনে হল-- কিভাবে স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ হবে ? ওয়ার্কশপ শেষে খাতার পাতায় যখন স্যারের অটোগ্রাফ নিয়েছিলাম, সেখানে ওনার ফোন নম্বরটা লেখা আছে তো ? কিছুতেই মনে পড়ছে না তো ! যখন এইসব সাতপাঁচ ভাবছিল উন্মনা , ঠিক সেই মুহূর্তেই অনিবার্য অন্তর্যামীর মতো বাসের জানলার কাছে এগিয়ে এলো অমলেন্দু। বললো -- আপনার ফোন নম্বরটা বলুন ,আমি মনে রাখবো। গতকাল ঝাড়গ্রাম আসার পথে বাসের টিকিটটা উন্মনার পার্সের সামনেই ছিল। লজ্জা পেয়ে খুব তাড়াতাড়ি নিজের ফোন নম্বরটা লিখে, অমলেন্দুর বাড়ানো হাতে দেবার সঙ্গে সঙ্গেই বাসের গায়ে দু'বার অভ্যস্ত চাপড় দিয়ে কন্ডাক্টারের পরিচিত সিগন্যাল -- চলো কাকা... পরিচিত হাতনাড়াগুলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতেই , উন্মনার অন্তর জুড়ে ভেসে উঠলো করতোয়ার কচি মুখটুকু, মায়ের হাসি আর অল্প একটু উদ্বেগ -- ফোন নম্বরটা ঠিকঠাক লিখলাম তো ? স্যারের পকেটে বা সাইডব্যাগে ওই চিরকুটটুকু আদৌ থাকবে তো ?

চরাচরে তখন চরাচরহীন সন্ধ্যা নামছে।

ক্রমশ...
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register