Tue 21 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক টুকরো হাসিতে কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায় - আটত্রিশ

maro news
সাপ্তাহিক টুকরো হাসিতে কল্যাণ গঙ্গোপাধ্যায় - আটত্রিশ

টুকরো হাসি - আটত্রিশ

হাসি দেখতে ভালোবাসি

আজ ২২ শ্রাবণ। তাঁর প্রয়াণ দিবস। তিনি বলেছিলেন, ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ণ এই বাটে।’ তাই বলে কি তাঁর খেয়া তরী এই বাটে বাইছেন না? জীবনের প্রতি পলে তো তাঁরই খেয়া তরীর দিকে তাকিয়ে সেই অনুভবে বেঁচে থাকা। এখনও। অবশ্যই জীবনের শেষদিন অবধি তাঁকে তাঁর ভাবনাকে পাথেয় করেই থাকাই আমার পরম প্রাপ্তি। কবি দিনেশ দাস, ২৫ বৈশাখের দিনটিকে স্মরণ করে ‘প্রণমি’ কবিতায় লিখেছেনঃ- ‘আকাশে বরুণে দূর স্ফটিক ফেনায় ছড়ানো তোমার প্রিয় নাম তোমার পায়ের পাতা সবখানে পাতা কোনখানে রাখব প্রণাম।’ তাই ২৫ বৈশাখ বা ২২ শ্রাবণ এই দু’টি দিনকেই আমার মনে হয় যে নতুন করে কিছু পাওয়ার দিন। কাজেই বিদায় বেদনাকে মনে স্থান না দিয়ে রবীন্দ্রনাথকে নিয়েই প্রতিদিন নিজের যাবতীয় কষ্টকে ভুলে থাকতে চেষ্টা করা। এই আমার রবীন্দ্র প্রণাম। আজ ২২ শ্রাবণের দিনেও ‘টুকরো হাসি’-তে তিনি এলেন স্বমহিমায়। একটা জীবনে রবীন্দ্রনাথ যে শোক ও যন্ত্রণা পেয়েছেন তা ভাবলে মনে হয় আমার যে কষ্ট তা তুলনায় তো কিছুই নয়। অতি ক্ষুদ্র। অনেককিছু যা আমাকে প্রতিনিয়ত কাতর করে তা ভুলে থাকবার জন্য কিছু আঁকিবুকি কাটি। আহত মনে বুঝি এসব কিছুই হচ্ছে না। আর হবেও না। তবু দিনের পর দিন নানা অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক দূষণ অপমান ভুলে থাকবার জন্য। সুখবর পত্রিকার সম্পাদকের প্রশ্রয়ে লিখেছি ‘এক চুমুক হাসি’, দৈনিক টেক টাচ টকের সম্পাদকেরাও আশকারা কম দিচ্ছেন না। এখানেও লিখছি ‘টুকরো হাসি’। আমি জানি এর হয়ত কোন মানে নেই। এসব কিছুই থাকবে না। তবে এতে সাময়িক লাভ হয় আমার। অনেক দূষণ দু’হাতে সরিয়ে আমি একটু সুস্থ হাওয়ার খোঁজ করি। এসব কথা থাক। আজ তাঁর কথাই বলি। রবীন্দ্রনাথ শেষ বয়সে অসুস্থ হয়েছেন। ডাক্তারের পরামর্শে তাঁকে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হল। ফলে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। আসলে যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছিলেন না। এইসময় কবিকে দেখাশোনা করছিলেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে নির্মলকুমারীও ছিলেন। কবির সেবা করতে এসে তাঁর কষ্ট দেখে মন খারাপ। ভাবনায় গম্ভীর হয়ে আছেন নির্মলকুমারী। কবি তখন ঘুমাচ্ছিলেন। ঘুম ভাঙতেই তিনি গম্ভীর মুখে বসে থাকা নির্মলকুমারীকে দেখলেন। অমনি সেদিকে তাকিয়ে চোখ বড়ো বড়ো করলেন। কবির অমন গোল আকৃতির দু’টি চোখের দিকে নজর পড়তেই নির্মলকুমারী হেসে ফেললেন। কবি নির্মলকুমারীকে গম্ভীর হয়ে থাকতে না করলেন। তিনি নিজে যন্ত্রণা পেলেও অন্য কেউ তাঁর জন্য কষ্ট পাক এটা চাইতেন না। কবি বললেন, আমি হাসি দেখতে ভালোবাসি।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register