Wed 29 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে উজ্জ্বল কুমার মল্লিক (পর্ব - ৩৬)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে উজ্জ্বল কুমার মল্লিক (পর্ব - ৩৬)

ষষ্ঠ অধ্যায় ৪র্থ পর্ব---

রাঘবেন্দ্র বাবু, বিকেলে গঙ্গার দিকে বারান্দায় বসে নদীর দিকে তাকিয়ে আছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী থাকা কালে, গূুলজারিলাল নন্দ মশাই, গঙ্গার পশ্চিম পারে ঈশ্বর গুপ্ত সেতু নির্মাণের ভিত্তি স্থাপন করেন; সে কি আজকের কথা! তারপর, দেশের কত উত্থান- পতন ঘটেছে, সেই ভিত্তি স্থাপনের ফলকও পার ভেঙ্গে জলে তলিয়ে গেছে। যাই হোক, নতুন করে আবার সেতুর কাজ সুরু হয়েছ ; সেও প্রায়, তা, কয়েক বছর হয়ে গেছে, নদীর বুকে বসানো কংক্রিটের তিনটে পিলারের মধ্যে, মাঝেরটা হেলে আছে বহুদিন। এখন আবার আধুনিক যন্ত্রপাতি এনে ঐ হেলে যাওয়া পিলারটাকে খাড়া করার প্রক্রিয়া চলছে। হায়! যদি এরকম বিশেষজ্ঞের মত একজন দেশ নেতা এ দেশে জন্মাতো! হেলে পড়া পিলারের মত, নেতিয়ে পড়া জাতটা আবার মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো; না, শুধু হতাশা নয়,হেলে-পড়া থামটা আবার সোজা হয়েছে; রাঘবেন্দ্র বাবুর চোখদুটো চিকচিক করছে,তিনি নতুন দিনের আগমনী সংকেত শুনতে পাচ্ছেন, যদিও, এখনও পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের মত মানুষ জন, রাজনীতির প্রাঙ্গণে পা রাখতে অনীহা প্রকাশ করেন।

রাঘবেন্দ্র বাবু ভাবছেন, এই ব্রীজ হলে, ঘোষালদের ঘাট- পারাপার ব্যবসায় ক্ষতি হবে বটে,তবে, দুই অঞ্চল, বাঁশবাড়িয়া- কল্যাণীর মধ্যে যোগাযোগ হবে সহজসাধ্য, দু'অঞ্চলের মানুষজন, সুখ- দুঃখের আতিশয্যে, আনন্দে শুরু করবে নতুন ভাবে পথ চলা।

"শুনছেন", বলে স্ত্রী রমনী এসে পাশে দাঁড়ালো। চাইতেই দেখলেন, রমনী যেন কিছু বলতে ইতস্ততঃ করছে। " কিছু বলবে", বলে রাঘবেন্দ্র বাবু স্ত্রী'র মুখের দিকে চাহিলেন।

"হ্যাঁ, শিবানীর কোন খবর পেয়েছেন? " রাঘবেন্দ্র বাবু বললেন, "কেন বল তো? এতদিন পরে তোমার মুখে শিবানীর নাম শুনছি। "

"শিবানী আমাকে, ভাবি- মা সম্বোধন করে, একটা লোক মারফৎ চিঠি পাঠিয়ে আশীর্বাদ চেয়েছে; তার ছেলে বিলেত যাচ্ছে, ওরা এসে আপনার কাছে ক্ষমা চেয়ে, আশীর্বাদ নিতে চায়। "

রাঘবেন্দ্র বাবু বিস্মিত সুরে, বললেন, " তুমি কি ক্ষমা করতে পেরেছ! তুমি তো মা'র মৃত্যুর পর, অমর, শিবানীকে কোলে-: পিঠে করে মানুষ করেছ। না, যে অন্যায় সে করেছে, তার ক্ষমা হয় না, তাছাড়া এ বিয়ে তো-----। "

" জানি, তবু বলবো, একটু ভাববেন; ওরা তো সুখী- দম্পতি; ওদের পুত্র- সন্তান আজ প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে; মামার বাড়ি থেকে আশীর্বাদ প্রার্থী। আপনি তো কত ছেলের, কত অন্যায় মাপ করে দেন, এটা কি পারেন না? বিশেষ করে রক্তের সম্পর্ক যখন রয়েছে; আর তাছাড়া, আমার কাছে শিবানী আত্মজা তুল্য, এটা কি করা যায় না? আমরা তো যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আর চলতে পারবো না; নবীন- যাত্রীকে, তার চলার পথে, আশিসটুকু তো দিতে পারি। "

"বেশ, লিখে দাও, তুমি যখন বলছো। " " তাহলে ঐ লোকের হাতে একটা চিঠি লিখে দিই;এই কথাই লিখে দিই, যে তারা যে কোনদিন এখানে এসে দাদার আশীর্বাদ নিয়ে যেতে পারে। "

কয়েকদিন পরেই এক সুদর্শন যুবককে সঙ্গে নিয়ে নতুন বাড়িতে শিবানী এসে দাদা, বৌদি- মা'র আশীর্বাদ নিয়ে গেল। মনোরমাকে দেখে, দাদা অমরের পরিণতিতে সে শোক জ্ঞাপন করার সাথে সাথে মনোরমাকে জীবনযুদ্ধে দাঁতে দাঁত চিপে লড়াই-এ উদ্বুদ্ধ করে গেল; মনোরমা, গ্রাজুয়েশন পরীক্ষায় বসছে শুনে, তাকে শুড- কামনা জানিয়ে ওরা নিজেদের বাড়ি ফিরে গেছে।

চলবে

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register