Tue 28 October 2025
Cluster Coding Blog

প্রবন্ধে তপন মন্ডল

maro news
প্রবন্ধে তপন মন্ডল

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি শান্তির মূলমন্ত্র

মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হলে জগতে শান্তির নিবিড় আশ্রয় তৈরি হতে পারে। সমাজের সমস্ত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগের মাধ্যমে একটি আদর্শ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। একমাত্র ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সমস্ত পরাশক্তিকে পরাজিত করা সম্ভব। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমরা দুমড়েমুচড়ে পড়ি ভিতরে ভিতরে, নেতিবাচকতাকে পরিহারে অক্ষম হয়ে পড়ি। আমাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে নেতিবাচক মানসিকতা। জীবন আত্মহাননের পথে পা বাড়ায়। পরিবার তথা সমাজের প্রতি তৈরি হয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। ভারতীয় প্রাচীন মুনি ঋষিরা তাদের প্রাচীন গ্রন্থ গুলিতে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের স্বপক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন। সামাজিক নেতিবাচকতাকে দূর করে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন।গৌতম বুদ্ধ, মহর্ষি গৌতমের তাদের গ্রন্থ গুলিতে যথার্থ ব্যাখ্যা দিয়েছেন এ বিষয়ে। মহর্ষি পতঞ্জলি তাঁর যোগ দর্শনে মানুষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার পন্থা রূপে বহু যোগা এবং প্রাণায়ামের গুরুত্ব মানুষের সামনে তুলে ধরেছেন। এগুলির মাধ্যমে মানুষের মধ্যে প্রকৃতিগতভাবে শান্তির ভাবমূর্তি তৈরি হয়। বর্তমানে মানুষ আধুনিক। কথাটি সর্বাঙ্গীন ক্ষেত্রে যথার্থতা বিচার করার সময় এসেছে। নেতিবাচকতাকে যতই সে দূরে চলতে চাইছে, ততই নেতিবাচকতা মানুষকে চুম্বকের মত আকৃষ্ট করছে। আসলে নেতিবাচকতা হল একটি মানসিক রোগ। এই রোগ সামান্য বিস্তারের সুযোগ পেলে পুরো সমাজটাকেও গিলে ফেলতে পারে । নেতিবাচকতারই বিভিন্ন রূপভেদ হলো হিংসা, লোভ- লালসা, অভিমান, অপমান, অপরকে তিরস্কার করা, দ্বন্দ্ব, সন্ত্রাসের ছায়ায় লালিত হওয়া, সন্ত্রাসীদের হাত ধরে মানবজাতিকে ধ্বংসের সম্মুখীন করা এসবই। একজন মানুষ মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তার ইতিবাচক মানসিকতা ফেরানোর জন্য বিভিন্ন মেডিসিন সাজেস্ট করেন। কিন্তু পুরো সমাজটাই যদি বিকারগ্রস্ত হয় অধঃপতনের দিকে ধাবিত হয়, তবে সামাজিক শান্তি তো বিনষ্ট হবেই, সঙ্গে সঙ্গে মানব সমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে। প্রগাঢ় অন্ধকারে প্রবেশ করবে মানব সমাজ। আলোর পথে ফেরা অত্যন্ত দুরূহ প্রতীয়মান হবে। তাই মানুষ যদি সকলকে সঙ্গে নিয়ে, সকলের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করতে সক্ষম হয় তবেই সমাজে ফিরবে শান্তি ,আনন্দ, উৎফুল্লতা। মানসিক সুস্থতাই একমাত্র পারে সমাজে শান্তি ফেরাতে। সদার্থক ভাবনাতেই শান্তির বীজ নিহিত। জগতের মঙ্গল চিন্তার মধ্যেই লুকিয়ে শান্তিদূত। পৃথিবীর বিভিন্ন উপযোগবাদীরা প্রতিনিয়ত জগতের মঙ্গলের কথা চিন্তা করেছেন। প্রাচীন বিভিন্ন সাহিত্য ও ধর্মগ্রন্থগুলিতে শান্তির বার্তা প্রেরিত হয়েছে। বিভিন্ন মনিষী তথা রামকৃষ্ণ বা বিবেকানন্দের বাণীগুলিতে নেতিবাচকতাকে পরিহার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তাই বলা যায় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সুশিক্ষাই একমাত্র পারে জগতকে কল্যাণকামী ও শান্তির পীঠস্থান বানাতে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register