- 58
- 0
(সীমান্তে ইসেবানিয়া- তানজানিয়া, টারিম হয়ে মুসোমা- ভিক্টোরিয়া লেক)
যে কোনও সীমান্ত শহর একটু কোলাহল মুখর ও ঘিঞ্জি হয়। ইসেবানিয়ার যত কাছাকাছি যাচ্ছি, বুঝতে পারছিলাম এসে গেছি কেনিয়ার এক সীমান্তে। পথের ধারে বড়ো এক পেট্রলপাম্প দেখলাম, বোর্ডে লেখা ISEBANIA।
তারপর চোখে পড়ল বড়ো এক চার্চ- CHRIST CRUSADERS EVANGELISTIC MINISTERIES ( CCEM). এরপর দেখলাম এক কাফে- SWAHILI DISHES CAFE. খুব লোভ হয়েছিল কাফেতে ঢুকে একটু কফি খেয়ে সোয়াহিলি কোনও ডিশ চেখে দেখার। কেনিয়ার চা-কফি খেয়ে বেশ মেজাজ ফিরে পাওয়া যায়। দেশটাতো চা- কফির জন্য বিখ্যাত।
মাসা এবার সীমান্তের গেটে এসে ল্যান্ড ক্রুজারকে দাঁড় করালো। দেখতে পেলাম গেটের পাশে লেখা - 'ISEBANIA ONE STOP BORDER POST". মাসা আমাদের এখানে ছেড়ে দিয়ে ফিরে যাবে মাসাইমারা। ওপারে অপেক্ষা করছে নতুন গাড়ি, নতুন চালক। সে আমাদের চার রাত পাঁচদিনের সঙ্গী হয়ে তানজানিয়াকে ঘুরিয়ে দেখাবে। তারপর পৌঁছে দেবে তানজানিয়ার সীমান্ত শহর নামাঙ্গায়। সেখান থেকে মাসা আবার আমাদের নিয়ে দ্বিতীয়বার কেনিয়ায় প্রবেশ ও বাকি ভ্রমণ শুরু করবে।
"KARIBU TANZANIA" ( WELCOME TANZANIA). সীমান্তে এমন উষ্ণ সম্ভাষণ চোখে পড়ল তানজানিয়ার বর্ডার চেক পোস্ট অফিসে। সেখানে আমাদের সব লাগেজ মেশিনের মধ্যে দিয়ে স্ক্যান করাতে হলো। আমাদের গোটা শরীরও তল্লাশি হলো একদম এয়ারপোর্টের সিকিউরিটি চেকিং এর মতই। তারপর পাসপোর্ট, ভিসা, ইয়েলো ফিভার ইনজেকশন এর হলুদ কার্ড সব দেখে সবুজ আলোর ইশারা- অর্থ্যাৎ" হে অতিথি, তোমাকে স্বাগত!.."
প্রবেশ করলাম নতুন দেশে- "এলেম নতুন দেশে.../ অচিন মনের ভাষা শোনাবে অপূর্ব কোন আশা.../ বাজবে প্রাণে নতুন গানের তাল..." রবি ঠাকুর পথ চলাকে এমন করেই মধুর করে দেন বারেবার!..
এবার নতুন গাড়ি, নতুন সারথী জুলিয়াস। ছোট করে জুলি। মাসা পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে গেল। ওর সঙ্গে আবার নামাঙ্গায় দেখা হবে চারদিন পর। এবার গাড়ি ল্যান্ড ক্রুজার নয়, ল্যান্ড রোভার। এ গাড়িও ভালো। আমাদের তিনজনের জন্য যথেষ্ট জায়গা।
বর্ডারে কারেন্সি এক্সচেঞ্জ করা হলো। আমি আর সোহম গেলাম টাকা ভাঙাতে। আপাতত পঞ্চাশ( ৫০) আমেরিকান ডলার ভাঙ্গিয়ে পেলাম এক লাখ তিরিশ হাজার ছশো পঁচিশ ( ১,৩০, ৬২৫) তানজানিয়ান শিলিং। তানজানিয়ার কারেন্সি খুব দুর্বল। তুলনায় কেনিয়ান শিলিং রেট ভালো। তানজানিয়ার এক হাজার ( ১০০০) শিলিং আমাদের ভারতীয় টাকায় মূল্য হলো মাত্র তেত্রিশ টাকা আটান্ন পয়সা ( ৩৩.৫৮)!
বর্ডারে চেকিং, কারেন্সি এক্সচেঞ্জ ও মাসাকে গুডবাই করে শুরু হলো আমাদের চার রাত পাঁচ দিনের তানজানিয়া সফর। নতুন একটা দেশ ভ্রমণের আনন্দ অনুভব করছি। জুলিয়াস মাসার মত ছটফটে, চঞ্চল নয়। একটু লাজুক। নম্র স্বভাবের ছোটখাটো মানুষ। খুব আস্তে, বেশ বিনয়ের সঙ্গে কথা বলে। বর্ডার ছাড়িয়ে গাড়ি যখন কিছুটা চলে এসেছে তখন খেয়াল হলো সোহমের মাথার সুন্দর টুপিটা নেই!.. যেটা সদ্য কেনা হয়েছিল গ্রেট রিফ্ট ভ্যালিতে। ১৫০০ কেনিয়ান শিলিং দিয়ে। বেশ সুন্দর ছিল টুপিটা !.. কোথায় গেল!.. গাড়িতে অনেক খুঁজেও পেলাম না। শেষে ওর মনে পড়ল হয় বর্ডারে নয় তো কারেন্সি এক্সচেঞ্জ অফিসের কাউন্টারে তাড়াহুড়োতে ফেলে এসেছে!.. আমরা তখন অনেকটা চলে এসেছি!..আবার ফিরে গিয়ে টুপি পাওয়ার আশা করাটা ছাড়লাম। একটু মন খারাপ হলো সকলের, সখের টুপিটা হারিয়ে গেল এমন করে!..
তানজানিয়া পূর্ব আফ্রিকার এক প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র। ১৯৬৪ সালে " তাঙ্গানিশ" ও "জাঞ্জিবার" থেকে 'তান' ও ' জান' শব্দদুটি নিয়ে নতুন এক দেশ গঠন হয় তানজানিয়া।
তানজানিয়ার উত্তরে কেনিয়া ও উগান্ডা।
পূর্বে ভারত মহাসাগর, দক্ষিণে- মোজাম্বিক, মালাউই ও জাম্বিয়া, পশ্চিমে-কঙ্গো, বুরুন্ডি ও রুয়ান্ডা।
তানজানিয়ার রাজধানী দারুসসালাম। সরকারি ভাষা সোয়াহিলি। এই প্রসঙ্গে একটা অবাক করার মত আশ্চর্য তথ্য হলো- পশ্চিম আফ্রিকার একটা দেশে "বাংলা" স্বীকৃত দ্বিতীয় ভাষা আজও! দেশটার নাম - সিয়েরা লিওন।
১৯৬১ সালের ২৭ এপ্রিল বৃটিশ উপনিবেশ শাসন থেকে মুক্তি লাভ করে স্বাধীন প্রজাতান্রিক দেশের মর্যাদা পায় সিয়েরা লিওন। সেই ষাটের দশকে সিয়েরা লিওনের স্বাধীনতার যুদ্ধে ভারতীয় শান্তিবাহিনীর বহু বাংলাভাষী যোদ্ধাদের অবদান ছিল। সেই ঐতিহাসিক জয়ের আনন্দে এই বাংলাভাষী যোদ্ধাদের সম্মানে বাংলা ভাষাকে সরকারী ভাবে দ্বিতীয় ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল সিয়েরা লিওনে। আজও তা রয়েছে। এটা গর্ব করার মত একটা তথ্য।
তানজানিয়া পূর্ব আফ্রিকার বৃহত্তম দেশ। এতে জাঞ্জিবার, পেম্বা এবং মাফিয়া দ্বীপপুঞ্জ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আফ্রিকার বৃহত্তম পর্বত মাউন্ট কিলিমাঞ্জোর, যার উচ্চতা ৫৮৯৫ মিটার( ১৯,৩৪১ ফুট) তানজানিয়ায় অবস্থিত।
১৯৮৭ সালে কিলিমাঞ্জোর ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের শিরোপা লাভ করে।
তানজানিয়ায় খৃষ্টান ধর্মের মানুষ বসবাস করে বেশি। পরিসংখ্যান বলছে ৫৫ শতাংশ খৃষ্টান, ৩১ শতাংশ মুসলিম, ১২ শতাংশ ঐতিহ্যগত ধর্ম এবং ২ শতাংশ অন্যান্য।
তানজানিয়ায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর আদিবাসী মানুষের বসবাস। মাসাই, সুকুমা, হায়া, চাগ্গা, গোগো, হে হে, মাকোন্দে, মাকুয়া, জিগুয়া, জারামো। এদের মধ্যে বৃহত্তর গোষ্ঠী হলো সুকুমা। এরা এথনিক কালচারে খুবই সমৃদ্ধ।
জুলিয়াস মাসার মত দুরন্ত গতিতে গাড়ি চালায় না। ও একটু ধীর স্থির গতিতে গাড়িকে বশে রেখে চালায়। বর্ডার পেরিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে চলেছি আজকের গন্তব্য মুসোমার দিকে। তানজানিয়ার পথ ঘাট, বাড়ি ঘর, ভূপ্রকৃতি, মানুষজনদের দেখে আমাদের দেশের আদিবাসী অঞ্চল গুলোর সাথে মিল পাচ্ছিলাম। কোথাও কোথাও তো মনেই হচ্ছিল আমরা বুঝি ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া বা বাঁকুড়ায় ভ্রমণ করছি। এখানকার আকাশ কি নির্মল নীল দেখছি। পথে অনেক ছোট ছোট ভগ্ন পাহাড়, টিলা চোখে পড়ল। পাথরের বড় বড় চাঁই এমন সুন্দর করে ছড়িয়ে রয়েছে, দেখে মনে হবে কোনও শিল্পী বুঝি সাজিয়ে রেখে চলে গেছেন। এসব ছড়িয়ে থাকা বড়ো বড়ো পাথরগুলোকে দেখলে পাথরের ভাস্কর্য মনে হবে বারবার। ফলে এই পথ ভ্রমণটা দারুণ উপভোগ্য হয়ে উঠল।
ইসেবানিয়া বর্ডার থেকে প্রথম বড় জনপদ পড়বে টারিম। আমরা ১৭ কিমি পথ পেরিয়ে এসে পেলাম টারিম। টারিমেও একটা দিন থাকা যায়। ছোট্ট সুন্দর জায়গা। আমরা আজ থাকব মুসোমা। ইসেবানিয়া থেকে একশো কিমি দূরের লেক শহরে।
পথে এবার পড়ল মারা নদীর ওপর এক সুন্দর আধুনিক সেতু। জায়গাটা চমৎকার। সাইট সিয়িং হিসেবে দারুণ। আমরা চলন্ত গাড়ি থেকেই মারা নদী ও নদীতটের শোভা দেখলাম। গাড়ি একটু একটু করে আজকের পথের দূরত্ব কমিয়ে আনছে। আমি জুলিয়াসের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে নানান প্রশ্ন করে অনেক কিছু জানছি, তথ্য সংগ্রহ করছি, সমৃদ্ধ হচ্ছি। এ আমার বহুদিনের পুরোনো নেশা। চালকের সঙ্গে দোস্তি করো! তবেই তুমি জানতে পারবে অনেক খবর, আর তোমার তথ্য ভান্ডারও সমৃদ্ধ হবে।
এপথে চাষজমি অনেক দেখা যায়। লাল মাটির কাঁকুড়ে পথ ছড়িয়ে আছে। চাষ জমিগুলোতে আমাদের পরিচিত আখ, মকাই, বাঁধাকপি, টম্যাটো, পেঁপে, ও কলা গাছ বহু দেখলাম। জলাশয়ও চোখে পড়ল কয়েকটা। হরেক প্রজাতির পাখি উড়ে বেরাচ্ছে। একদম গ্রামীণ তানজানিয়াকে দেখতে দেখতে চলে এলাম মুসোমা। পুরো রাস্তাটাই হাইওয়ে। চমৎকার রাস্তা। গাড়ির গতি যতই হোক, পথ চলার আরামে ব্যঘাত ঘটে না।
মুসোমা বিখ্যাত তার লেকের জন্য। বিরাট বিশাল এক লেক ভিক্টোরিয়া। আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম হ্রদ। আর সারা পৃথিবীর মধ্যে ভিক্টোরিয়া লেক হলো তৃতীয়। এই হ্রদের অববাহিকায় আফ্রিকার অনেকগুলো দেশ রয়েছে-তানজানিয়া, উগান্ডা, কেনিয়া, বুরুন্ডি ও রুয়ান্ডা। এর দৈর্ঘ্য হলো ৩৩৮ কিমি, প্রস্থ ২৫০ কিমি।
১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রী জন হানিং স্পেক এই বিশাল নীল জলরাশির সন্ধান পান। তাঁর অভিযানের ফলেই মনে করা হয় এই বিশাল নীল জলরাশি থেকে নীল নদের উৎস। যে নীল নদ মিশরের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। মিশরকে সমৃদ্ধ করেছে। এই নীল জলের নীল নদে মিশর ভ্রমণে গিয়ে আমার সৌভাগ্য হয়েছিল, তিন রাত নীল নদের জলে ক্রুজে করে বেড়ানো ও রাত কাটানোর আনন্দ অভিজ্ঞতা অর্জনের। জীবনের কাছ থেকে পাওয়া এমন সব আশ্চর্য ভ্রমণগুলোর আনন্দ আমাকে বড়ো প্রাণিত করে রাখে সব সময়। আমার এই মুসাফির বাউন্ডুলে জীবনকে বড়ো ভালোবেসে ফেলেছি!..আমি বাউন্ডুলে ঘুড়ি, যে আমাকে ডাকবে, আমি সে দেশেতেই ঘুরি!..
মুসোমার এই নীল জল হ্রদের নাম ব্রিটেনের মহারাণী ভিক্টোরিয়ার নামে নামাঙ্কিত হয়। কারণ তানজানিয়াও ছিল এক ব্রিটিশ কলোনী।
আফ্রিকার আরও পাঁচটি বড়ো হ্রদের নাম হলো - টাঙ্গানিকা, মালাউই, তুর্কানা, আলবার্ট কিভু এবং এডওয়ার্ড।
মুসোমা শহর থেকে ভিক্টোরিয়া লেকের কাছে যেতে সময় লাগল না বেশি। লেকের এক প্রান্তে আমাদের রিসর্ট - "মাতিল ভিলা"। এমন এক অপূর্ব সুন্দর পরিবেশে মাতিল ভিলা অবস্থিত যে প্রথম দেখাতেই মন মুগ্ধ। ইসেবানিয়া থেকে মুসোমা মোটামুটি সোয়া দু' ঘন্টা লেগেছে। বেলা গড়িয়ে অপরাহ্নে এখন। পথে মধ্যাহ্নভোজন হয় নি। মাতিল ভিলায় সে ব্যবস্থা রয়েছে। একটু সময় লাগবে খাবার গুছিয়ে তুলতে, ততক্ষণে ঘরে গিয়ে লাগেজ রেখে ফ্রেশ হয়ে আসা যায়।
মুসোমায় এসে মন প্রাণ তো জুড়িয়ে গেছেই, তার ওপর এমন এক অপূর্ব লেকের প্রান্তে আমাদের দুর্দান্ত রিসর্ট যে সারাদিন শুধু বসে বসেই সময় কাটানো যায়।
ডুলুং-সোহম ঘরে গেল লাগেজ রাখতে ও ফ্রেশ হয়ে নিতে। আমি একটু মাতিল ভিলার চারপাশটাকে ঘুরে ঘুরে দেখছি। সত্যি মন হারানোর এক নতুন ঠিকানা তানজানিয়ার এই লেক ভিক্টোরিয়ার শহর মুসোমা। হ্রদের জলে অনেক জেলে নৌকো ভেসে রয়েছে। এই হ্রদে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। জেলেরা দলবেঁধে জাল ফেলে মাছ ধরে। মাছেদের মধ্যে তেলাপিয়া বেশি পাওয়া যায়। সে সব তেলাপিয়ার সাইজ বেশ বড়ো সড়ো। এক একটা তেলাপিয়া নাকি এক কেজিও হয়। আমেরিকায় গিয়েও তেলাপিয়ার বাজার দর যে বেশ ভালো দেখে এসেছি। সুন্দর ফিলে করা তেলাপিয়া আমেরিকার সব বড়ো বড়ো মল ও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে বিক্রি হয়। আফ্রিকা মহাদেশেও দেখছি তেলাপিয়া জিন্দাবাদ!..
ভিক্টোরিয়া লেকের জলে নৌকো বিহারেরও আয়োজন রয়েছে। এক ঘন্টা ২০ ডলার। মানে তানজানিয়ান শিলিং ৫২,২৫০!..নৌকোর মাঝিরা বেশ সুসজ্জিত। বিকেলে অবশ্যই নৌকো বিহারের মজা নেব, মনে মনে ভেবে ফেললাম।
ভিক্টোরিয়া লেকের চারপাশে আবছা সব পাহাড়ের সারি চোখে পড়ল। হ্রদের জল ছলাৎ ছল করে সারাদিন আছড়ে পড়ে মাতিল ভিলার আঙিনায়। মাতিল ভিলার কটেজগুলো নীলজল ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। চারপাশে পাহাড় ভাঙা বড়ো বড়ো পাথরের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে কেমন এক নান্দনিক সৌন্দর্য তৈরী করে রেখেছে। সাদা বক ও জলপিপির মত পাখিরা মনের সুখে উড়ে বেরাচ্ছে। সব মিলিয়ে মুসোমার লেক ভিক্টোরিয়া যেন তানজানিয়ার রূপসী রাজকন্যা।
আজ ২১ জুন,২০২৪। গতবছর ঠিক এই দিনে ছিল আমার মেয়ের বিয়ে। আমি ছিলাম হাজারো চিন্তার চাপে শশব্যস্ত। মেয়ের বিয়ে বলে কথা! সেদিন আমি ছিলাম একই সঙ্গে ওর বাবা ও মা!..অন্তরা তো দূর থেকে শুধুই দেখেছে!..
আজ আমি কত মুক্ত। একমাত্র সন্তানের জন্য যতটুকু পেরেছি পিতার দায়িত্ব কর্তব্য পালন করেছি। সংসারের সব হিসেব সামলে মুক্তপুরুষ হয়ে বিদেশ ভ্রমণে এসে বিহঙ্গের মত ডানা মেলে দিয়ে না হলেও আমার মনের আনন্দ খানিকটা সেরকমই!
আমার মেয়ের বিয়ের দিন ছিল ঠিক একবছর আগে আজ!.. তাই এটা তো ওদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী!..
নিজের শহর ছেড়ে, চেনামহল ছেড়ে এই দূর বহুদূরের আফ্রিকা মহাদেশের এক সুন্দর দেশে ওরা আজ ঘটনাচক্রে ওদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করবে এমন এক অপূর্ব সুন্দর লেকের প্রান্তে!.. নিভৃত নির্জনে!..এই ছক ভাঙ্গা উদযাপনের মাধুর্য কি কম!..
"স্যার! লাঞ্চ ইজ রেডি। প্লিজ কাম!"... মাতিল ভিলার রেস্টুরেন্টের পথে পা বাড়ালাম!..
ক্রমশ...
0 Comments.