Sat 01 November 2025
Cluster Coding Blog

T3 || স্বাধীনতার খোঁজে || 26য় শর্মিলা ঘোষ

maro news
T3 || স্বাধীনতার খোঁজে || 26য় শর্মিলা ঘোষ

অগ্নিকন্যা কল্পনা দত্ত

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে বাঙালি মেয়েটিকে "অগ্নিকন্যা" নামে ভূষিত করেন,তার সম্পর্কে আমাদের জানার পরিধি বাড়াতেই স্বাধীনতা দিবসে বিপ্লবী নেত্রী কল্পনা দত্ত কে নিয়ে কিছু জানা ,কিছু অজানা কথা। বেথুন কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের এই ছাত্রী পূর্ণেন্দু দস্তিদারের মাধ্যমে মাস্টার দা সূর্যসেনের প্রতিষ্ঠিত "ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি"(চট্টগ্রাম শাখা)তে যোগদান করেন। সম্প্রতি চট্রগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন নিয়ে বডিউডে একটি সিনেমা হয়ে গেছে,যার মুখ্য চরিত্র কল্পনা দত্তের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন, সিনেমাটির নাম 'খেলে হাম জি জান সে'।
তখন চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের নেতৃবৃন্দ গণেশ ঘোষ, অনন্ত সিং, লোকনাথ বল প্রমুখ বিচারাধীন বন্দীদের বিচার চলেছে।কল্পনা দত্ত এই বিচারাধীন বন্দীদের মুক্তির জন্য কোর্ট ও জেলে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেন, এজন্য তিনি কোলকাতা থেকে নিয়ে আসেন বিস্ফোরক।নিজে গান কটন তৈরি করতেও পারতেন। প্রতিদিন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের সাথে গুলি চালনার প্রশিক্ষণ নিতেন। মাস্টারদা সূর্য সেনের সাথে গ্রামে গ্রামে ঘুরে গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করতেন।
বেথুন কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রীসংঘে যোগ দেন।কলেজে ছাত্রী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে থাকেন।বিপ্লবী দলের তৎকালীন নেতারা ছেলে মেয়ে পাশাপাশি আন্দোলন করলে আন্দোলনের নৈতিক চরিত্র খারাপ হতে পারে এই রকম মনোভাব পোষণ করতেন।এই মনোভাবের বিরুদ্ধে কল্পনা দত্ত লিখেছেন,"It was an iron rule for the revolutionaries that they should keep aloof from the women." তখন বীণা দাস ও প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ছিলেন তাঁর ছাত্রী আন্দোলনের সঙ্গী ।মূলত মাস্টারদা সব নিয়ম ভেঙে এই বীরাঙ্গনা নারী বাহিনীকে সক্রিয় বিপ্লবী আন্দোলনের কাজে যুক্ত করেন।
১৯৩১ সালে মাস্টারদা সূর্যসেনের নির্দেশে ছদ্মবেশে ইউরোপীয় ক্লাব আক্রমণ করতে গিয়ে ধরা পড়েন ও গ্রেফতার হন।এরপর জামিনে মুক্তি পেলেও আবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।কল্পনা দত্ত যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হন।১৯৩৯ সালে তিনি মুক্তি পান।এরপর তিনি C.P.I এর হয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন ও মহিলা এবং কৃষক সংগঠনকে নিয়ে কাজ শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে C.P.I নেতা পূরণচাঁদ যোশীর সাথে কল্পনা দত্তের বিবাহ হয়। ১৯৫০ সালে কল্পনা দত্ত "ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিউটে" চাকরি নেন এবং দিল্লীতে থেকে নারী আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা গ্রহন করেন। ভারত ও তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার মৈত্রী সম্পর্কে তাঁর যথেষ্ট অবদান ছিল। "চট্টগ্রাম অভ্যুত্থান" তাঁর প্রণীত গ্রন্থ। এই বাঙালি মহীয়সী নারী ম্যাট্রিকে চতুর্থ হয়েছিলেন, বারো বছর বয়স থেকেই স্বদেশী ভাবনাকে মনে ঠাঁই দিয়েছিলেন।কাকার কাছে নিয়েছিলেন নিজেকে দেশের কাজে উৎসর্গ করার প্রাথমিক বীজমন্ত্র। ১৯১৩ সালে ২৭ শে জুলাই বাংলাদেশের চট্টগ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৯৫ সালে ৮ই ফেব্রুয়ারি নয়া দিল্লীতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে এই বাঙালি বীরাঙ্গনা কে নিয়ে আরো বেশি করে চর্চা হোক, বাঙালি জানুক তাদের ঘরের আটপৌরে মেয়েরা ইংরেজ শাসকদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল।জেলখাটতে, বন্দুক চালাতে, বোমা বাঁধতে তাঁরা ভয় পেতো না।
তথ্যসূত্র-গুগুল ও বিভিন্ন পত্র পত্রিকা
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register