Thu 06 November 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান শ্রীমতি পান্না দাস

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান শ্রীমতি পান্না দাস

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্যিক পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব - ৬৪
বিষয় - বিসর্জন

দীপশিখা

একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের দীপাঞ্জন ও তার পত্নী আলো বহুকাল ধরে একটি সন্তানের জন্য প্রতীক্ষায় তারা রয়েছে। এক বছর শারদীয়া দশমীর বিসর্জনের দিনে সন্ধ্যার সময় তারা মহানন্দা নদীতে দুর্গা মায়ের বিসর্জন দেখতে গিয়েছিল। সেই বিসর্জনের সময় তারা মায়ের কাছে হাত জোড় করে প্রার্থনা করে একটি কন্যা সন্তান দেওয়ার জন্য। বিসর্জনের শেষে নদীর পাড়ের প্রত্যেকটি মানুষ বাড়ি চলে গেল কিন্তু দীপাঞ্জন ও তাঁর পত্নী আলো নদীর পাড়ে বসে মায়ের সেই ভাঙ্গা মূর্তির কাছে তখনও প্রার্থনা করতেথাকে একটি কন্যা সন্তানের জন্য। দীপাঞ্জন তাঁর পত্নী কে কোনরকমে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে ছিল সেই সময় একটি বাচ্চা মেয়ে হাতে জ্বলন্ত প্রদীপ নিয়ে তাদের দিকে আসতে থাকলো। মেয়েটির করুন মুখ দেখে তারা জিজ্ঞেস করল তোমার বাবা-মা কোথা? মেয়েটি ঘাড় নাড়াতে থাকলো কোন কথা বলতে পারল না, তাকে আবার জিজ্ঞেস করলো তোমার নাম কি? কিন্তু মেয়েটি মাথা নিচু করে রইল তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারল মেয়েটি বোবা। নদীর পারে কাউকে দেখতে না পাওয়ায় তারা মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে গেল।
কয়েকদিন অপেক্ষা করার পর মেয়েটির বাবা-মা এর সন্ধান না পাওয়ায় তারা মেয়েটিকে নিজের কন্যা সন্তান ভেবে মানুষ করতে থাকলো।
এইভাবে১৮ বছরের মধ্যে আরো একটি পুত্র সন্তান ও কন্যা সন্তান জন্ম দিল এবং সুখে শান্তিতে সংসার কাটতে লাগলো।
এক বছর দশমীর বিসর্জনের দিন চক্রবর্তীদের মায়ের মুক্তি নদীতে বিসর্জন কিছুতেই হচ্ছিল না। সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেও মায়ের মূর্তি নদীতে নিয়ে যেতে পারল না এই কথা জানতে পেরে দীপাঞ্জন আর তার পত্নী ছেলেমেয়েদের নিয়ে নদীর পাড়ে এল, দীপাঞ্জন সঙ্গে সঙ্গে মায়ের মূর্তি ধরে নদীর জলের দিকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করল কিন্তু মায়ের মূর্তি কিছুতেই নদীর জলে নামতে পারল না, এই দেখে দীপশিখা তাড়াতাড়ি সেও মায়ের মূর্তি ধরতে থাকে সবাই মিলে বলতে থাকলো আমরা ছেলেরাই পারছিনা আর তুই মেয়ে হয়ে কি করে পারবি তৎক্ষণাৎ মায়ের মূর্তি টি নদীর জলের দিকে এগোতে থাকলো, মায়ের মূর্তি বিসর্জন দিয়ে সবাই নদীর জলের থেকে উঠে এলো কিন্তু দীপশিখা আর নদীর জল থেকে উঠে এলো না, সবাই মিলে দীপশিখা কে খুঁজতে লাগল কিন্তু তাকে পাওয়া গেল না, তার মা-ও চিৎকার করে দীপশিখা করে ডাকতে লাগলো কিন্তু নদীর জল থেকে দীপশিখা আর উঠে এলো না, সবাই বাড়ি চলে গেল কিন্তু দীপাঞ্জন আর তার পত্নী আলো ছেলেমেয়েকে নিয়ে নদীর পাড়ে দীপশিখার জন্য কাঁদতে থাকলো হঠাৎ তারা দেখতে পেলো নদীর উপরে একটি জ্বলন্ত প্রদীপ ভেসে উঠেছে, তাদের কাছে সমস্ত ব্যাপারটা পরিস্কার হয়ে গেল।
প্রত্যেক বছর বিসর্জনের শেষে তারা দীপশিখার জন্য কান্না করত আর নদীর জলের ওপর জ্বলন্ত প্রদীপ দেখতে পেত । এইভাবে তারা প্রত্যেক বছর দিপশিখা কে দেখার জন্য প্রতীক্ষায় থাকতো।।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register