Mon 27 October 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৪৬

maro news
ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৪৬

ফেরা

সেদিন কেদারনাথের রাতটা বড়োই ঘটনা বহুল। একটু পরেই তুমুল বৃষ্টি নামলো। ঠান্ডা বাড়লো অনেকগুণে। বলতে নেই, লেপের গরম টা বড়োই উপভোগ করছিলাম। তাল কাটলো একটি চীৎকারে। পাশের ঘরের ডর্মিটরিতে দুই ভদ্রলোকের মধ্যে তুমুল ঝগড়া। একটু কান খাড়া করতেই বোঝা গেল, কেন পার্সোনাল রুম না দিয়ে ডর্মিটরিতে তাঁদের থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। তবে ঠান্ডাতেই হোক, আর অন্য কোনো কারণেই হোক আধা ঘন্টার মধ্যেই সব থিতিয়ে গেলো। আবার চারিদিক নিস্তব্ধ, খালি টিনের চালে বৃষ্টির শব্দ। সেটি শুনতে শুনতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি, খেয়াল নেই।
হঠাৎই ঘুম ভাঙলো আবার। আমরা ছাড়াও ডর্মিটরিতে রেলে কাজ করেন এরকম ৩-৪টে পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল, পরদিন ভোরে তাদের পুজো দিতে যাবার কথা। তাঁদের একজন চেঁচিয়ে সবাইকে ডাকছেন, আরে উঠে পড়,চান কর, পুজো দিতে যাবি না। চারটে বেজে গেলো যে। এত তাড়াতাড়ি চারটে? খটকা লাগলো আমার। ঘড়ি পড়েই শুয়ে ছিলাম, আর ঘড়িতে ইন্ডিগ্লো ছিলো। জ্বালিয়ে দেখি, মোটে পৌনে বারোটা। তাহলে? লেপের তলা থেকে মুখ বাড়িয়ে জানালাম সে কথা। ততক্ষণে ওনাদের দলের কয়েকজন রেডি হতে শুরু করেছে। আমার কথা শুনে যে যার ঘড়ি দেখতে দেখা গেল আমার কথাই ঠিক। সবার কথায় যে ভদ্রলোক সবাইকে ডাকছিলেন, তিনি ভালো করে নিজের ঘড়ি দেখলেন। আগের দিন বিকেল চারটে নাগাদ, সে ঘড়ি বন্ধ হয়ে গেছে, উনি টের পাননি। হঠাৎই ঘুম ভেঙে ঘড়ি দেখেছেন, আর চারটে দেখে চিল চীৎকার লাগিয়েছেন।
কেলেঙ্কারি। ওনার দলের লোক তো ওনাকে এই মারে কি সেই মারে। যাই হোক, ভদ্রলোক লজ্জিত হয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলেন। আমরাও হেসে ফেলে আর কেউ কিছু বলিনি। বাকি রাতটা ভালোই ঘুম হলো, পরদিন ঐ ভদ্রলোকের ডাকেই ঘুম ভাঙলো, তবে ততক্ষণে ওনাদের পুজো দেওয়া কমপ্লিট, আর সকাল সাতটা বাজে। রাতের দূর্যোগ কেটে তখন সোনালী আভায়, গোটা ঘর ঝকঝক করছে।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register