Wed 22 October 2025
Cluster Coding Blog

মার্গে অনন্য সম্মান রাজু কর্মকার (যুগ্ম সেরা)

maro news
মার্গে অনন্য সম্মান রাজু কর্মকার (যুগ্ম সেরা)
অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার পাক্ষিক গল্প প্রতিযোগিতা পর্ব - ১০ বিষয় : ভৌতিক/ রহস্য তারিখ : 04/09/2020

টাটকা ভূতের প্রতিশোধ

তখনো সিলিং ফ্যানে ঝুলে ছিলো বছর দুয়েকের বিবাহিতা প্রমীলার বডি । বীভৎস ভাবে বেরিয়ে ছিলো দুটি চোখ এবং বড় জিভ । টপটপ করে কান এবং মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে তখনও । ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে পুলিশ এসে যাবতীয় নিয়মাদি সম্পন্ন করে বডি নিয়ে চলে গেলো । .মহিলার স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয় ..প্রাথমিক ধারণা, পণের টাকা না পাওয়ায় তারাই শ্বাস রোধ করে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে .. অবশ্য এক নেতার মধ্যস্থতায় এবং মূলত প্রমাণের অভাবে তিনজনই জামিন পান । দুটি ঘরের একটাতে বাবা মা থাকতেন , আরেকটাতে তারা । যাইহোক ঘুম আর কিছুতেই আসছে না । রাত তখন দুটো হবে , চোখদুটো সবে বুজে এসেছিলো মহিলার স্বামী দীনেশবাবুর , হঠাৎ একটা শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো , বেড সুইচ অন করতে উদ্যত হতেই কোনো কিছুতে খোঁচা খান তিনি । এবার পাশে রাখা মোবাইলের টর্চ জ্বালতেই আঁতকে ওঠেন ..তখনো তার স্ত্রী ঝুলছে , এবং একই রকমভাবে জিভ , চোখ বেরিয়ে আছে , কী ভয়ংকর সে দৃশ্য । চিৎকার করতে গিয়ে গলার স্বর অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে , কিছুতেই আর আওয়াজ বেরোচ্ছে না । কোনোরকমে পাশ ফিরে লাইট অন করেন , কিন্তু কিছুই আর দেখতে পান না । ধড়ে প্রাণ ফিরে পান তিনি । নিজেকে সান্ত্বনা দেন চোখের ভুল বলে । লাইট অফ করে পুনরায় শুয়ে পড়েন , কিন্তু ঘুম আর আসে না । বাম হাতটা মাথার উপর থেকে নামিয়ে পাশে রেখেই একটা ঠান্ডা অনুভূতির আতঙ্ক থেকে তৎক্ষণাৎ হাতটি তুলে নেন ..মোবাইলের আলো জ্বালতেই ভয়ে লাফিয়ে পড়েন খাট থেকে ... একটা হাত পাঁচেকের মতো লম্বা পিচ কালো সাপ । অতি দ্রুত সিটকিনি খুলে বাইরে আসেন তিনি । পাশের ঘরের থেকে বাবা মাকে ডেকে তোলেন । কিন্তু ঘরে গিয়ে আর কিছুই দেখতে পেলেন না ।তিনজনই একটা অপরাধজনিত আতঙ্কে ভুগতে থাকেন । মায়ের পরামর্শে তারা এক ঘরে থাকতে সম্মত হন । কিন্তু আতঙ্ক পিছু ছাড়ে না । বাথরুম থেকে জল পড়ার শব্দ কানে আসে তাদের । কিন্তু আপাতত বাড়ির তিনজনই তো ভিতরে । তাহলে কল কে খুললো ! ! তারা ভিতর থেকে আওয়াজ তোলে .. বাথরুমে কে ? ? আশ্চর্যজনকভাবে কলটি নিমেষেই বন্ধ হয়ে যায় । ওরা পুনরায় জিজ্ঞাস করে ..কে ? উত্তর না পেয়ে তিনজনই সাহস করে বাইরে বেরিয়ে বাথরুমের দিকে এগোতে থাকে , আচমকা লোড শেডিং হয়ে যায় । ঘনান্ধকারের মধ্যে বাথরুম থেকে একটা বেশ বড় মাপের কালো রঙের বিড়াল বেরিয়ে রাস্তার দিকে ছুটে যায় । ওদের মনে কু গায় , দৌড়ে ঘরে গিয়ে হাক দেয় । প্রবল আতঙ্ক নিয়ে এবার চেষ্টা করে ঘুমানোর । বিপদ তখন শিহরে । ঘরের ভিতরে অদ্ভূত সব আওয়াজ হতে থাকে । ঘন অন্ধকারের মধ্যে বিদ্যুতের আলোর মতো থেকে থেকে ঝলসে উঠছে বহু কঙ্কাল সর্বস্ব দেহ । চিৎকার করে ওঠে তারা ... শোনা যায় গোঙানি .. এখন চিৎকার করে কী হবে ..তিনজন মিলে আমাকে যখন নৃশংসভাবে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলে ঝুলিয়ে দিয়ে ছিলি , তখন খেয়াল ছিলো না ..? পণের টাকা দিতে পারিনি বলে আমার জীবনটাকে কেড়ে নিলি ..নেতাদের দয়ায় ছাড়া পেলেও আমি তোদের কাউকে ছাড়বো না .. এগিয়ে আসে নখরযুক্ত লম্বা লম্বা হাত । ওরা ভয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায় । বাইরে বেরোনোর জন্য দ্রুত হাক খুলতে যায় , কিন্তু ঠান্ডা পরশে হাড় হিম হয়ে যায় তাদের ..হাকের স্থানে দেখা যায় ,সেই ভয়ঙ্কর কুচকুচে কালো সাপটি । পরেরদিন ঘরের মেঝে থেকে তিনটে লাশ উদ্ধার করা হয় ।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register