Wed 22 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৩৭)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (পর্ব - ৩৭)

সোনা ধানের সিঁড়ি

৬৯
রাত গভীর হলে বাইরে একটা ঠাণ্ডা হাওয়া দেয়। বদ্ধ ঘরের ভেতর যখন দমবন্ধ হয়ে আসে তখন আমি জানলা খুলে দিই। শুধু কি ঠাণ্ডা হাওয়ার জন্যে ? একেবারেই না। জানলার পাশে বসে অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে থাকি। রাতপাখিদের ডানা ঝাপটানো, পেঁচার ডাক, দূরের কোনো অঞ্চল থেকে ভেসে আসা কুকুরের চিৎকার ছাড়া আর কোনো শব্দ থাকে না। ফেলে আসা দিনের রাস্তা ধরে কত মানুষ এসে মনের ঘরে দাঁড়ায়। এক এক সময় মনে হয় এদের সবাইকে মনে রাখি। কিন্তু পারি না হয়তো সবসময়। পুরোপুরি ভুলেও কি যাই ? কখনই না। এক একজনকে তো প্রায়ই মনে পড়ে। আবার এক একজনের ক্ষেত্রে কোনো অনুষঙ্গের হাত ধরে অনেক বছর পরে মনে পড়ে। তখন মনে হয় কতদিন পরে একে মনে পড়ল। অথচ এমনও দিন গেছে তাকে ছাড়া আমার একমুহূর্তও চলত না। তার ক্ষেত্রেও তাই। তাহলে আজকের এই বিচ্ছেদ হল কিভাবে ?
এক একসময় ভাবি এগুলোকে কি সত্যিই বিচ্ছেদ বলে? তবে কোনোরকম যোগাযোগ না থাকাকে যদি বিচ্ছেদ বলে ধরে নেওয়া হয় তাহলে এটা অবশ্যই বিচ্ছেদ। ঠিক আছে তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই এটা বিচ্ছেদ তাহলে সেটা আসে কিভাবে ? দেখা না হওয়ার মধ্যে দিয়ে কথা না হওয়া অথবা চলতে চলতে হঠাৎ করেই যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়া কি সবসময় খারাপ কিছুর মধ্যে দিয়ে ঘটে? মোটেই না। আমি অন্তত বিশ্বাস করি না। আমার জীবনে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিন কোনো যোগাযোগ নেই। কিন্তু শেষ দিন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু তবুও কেমন করে যেন এসব হয়ে যায়। আমার চাওয়া না চাওয়ার সঙ্গে যার কোনো সম্পর্ক নেই। হয়ত দেখা যাবে এক সপ্তাহ অন্তর অন্তর কথা হতো। তারপর প্রায় একমাস পরে ফোন। অনেক কথা গল্প হাসি ঠাট্টা কিন্তু তখনও জানি না তার সঙ্গে আমার আর কোনোদিন দেখা হবে না। অথচ দুজন দুজনকে কত ভালোবাসতাম। আমি কাউকেই দোষ দিই না। এসব কিছুই হঠাৎ করেই যেন ঘটে যায়।
ক্রমশ...
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register