Tue 28 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ১৫)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ১৫)

কেমিক্যাল বিভ্রাট

কেন এমন হচ্ছে? জবালা তাঁর বাবাকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক প্রথিতযশা ডাক্তারের কাছে। কয়েকটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তারবাবু জানিয়েছিলেন, ওঁর সোডিয়াম কমে গেছে। পটাসিয়ামও। ওঁকে ভাতের সঙ্গে রোজ বেশ কিছুটা করে লবণ খেতে হবে। ও ভাবে খেতে না-পারলে ভাতের গোল্লা পাকিয়ে তার মধ্যে যতটা পারা যায় লবণ ভরে জল দিয়ে টুক করে গিলে ফেলতে হবে। কিংবা উনি যখন জল খাবেন তখন জলের সঙ্গে লবণ গুলে খেতে হবে। তার সঙ্গে আরও বলেছিলেন, নিয়মিত অন্তত দুটো করে ডাব খেতে। কারণ, মানুষের শরীরে সোডিয়াম আর পটাসিয়ামের ঘটতি রোধে ডাবের জলই নাকি খুব ভাল কাজ করে। তাই মাঝে মাঝেই স্কুল থেকে ফেরার পথে বাপের বাড়িতে ঢু মারেন তিনি। যাওয়ার সময় বাস স্টপেজের গায়ের এই ডাবওয়ালার কাছ থেকেই রিকশা করে নিয়ে যান বেশ বড় বড় মাপের কখনও চারটে, কখনও ছ’টা, আবার কখনও আটটা করে ডাব।

কিন্তু ডাব বাছতে বাছতে জবালার দম বেরিয়ে যায়। কোনও ডাবই তাঁর পছন্দ হয় না। ডাবের গাগুলি কেমন যেন পোড়া-পো়ড়া। ফাঁটা-ফাঁটা। শুকনো শুকনো। দেখলেই মনে হয়, ভিতরে এক ফোঁটাও জল হবে না। গাছ থেকে পাড়ার পর বোধহয় বহু দিন কোথাও ফেলে রাখা হয়েছিল। এমন চেহারা যে নিতেই ইচ্ছে করে না। কিন্তু না-নিয়েই বা উপায় কী! ডাক্তার বলেছেন। তাই ডাবগুলোকে দেখে একটু বিরক্ত হয়েই এই ডাবওয়ালাকেই উনি একদিন বলেছিলেন, ভাল ডাব আনতে পারো না? ডাবগুলি এ রকম মড়া-মড়া কেন গো?

তখন ডাবওয়ালা বলেছিলেন, মড়া মড়া কি এমনি হচ্ছে? আপনারা যে মোবাইল ব্যবহার করেন, তার টাওয়ারের জন্যই তো এ সব হচ্ছে। এই তো সে দিন কে যেন বলছিল, মোবাইল থেকে যে রে বেরোয়, তার জন্য নাকি এগুলো হচ্ছে। উনিই বলেছিলেন, এখন ডাবের গায়ে হচ্ছে। এর পর আম-জাম-কাঠালের গায়ে হবে। তার পর মানুষের শরীরে। আস্তে আস্তে দেখবেন এই রে-র প্রভাব আরও নীচে নেমে আসবে। তখন বেল-জুঁই-দোপাটিও বাদ যাবে না।

ডাবওয়ালার কথা শুনে জবালা ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ছিলেন। বাবা, এরাও এখন রে-ফে বলতে শিখে গেছে! আর ক’দিন পর তো, ‘গামা-রে’, ‘এক্স-রে’, হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওয়েবলেন্থও বলতে শুরু করবে!

উনি জানেন, উনিশশো আশি সালে যখন সেলুলার ফোন চালু হয়, তখন এ সব সাইড এফেক্ট নিয়ে কেউ অত মাথা ঘামায়নি। এর ক্ষতিকারক দিক যে কত ভয়ানক হতে পারে, কত সুদূর প্রসারী হতে পারে, নিশ্চয়ই কেউ তা কল্পনাও করতে পারেনি। তাই আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গেই কোনও সেফটি টেস্টিং ছাড়াই এই ফোন বাজারে ছাড়া হয়েছিল।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register