Mon 20 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ২২)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে সোনালি (পর্ব - ২২)

পুপুর ডায়েরি

সে বছর আমি পড়তে শিখেছিলাম। দুই পেরিয়ে আড়াই বছর। সেই বছরই বা মশাই পুরো কাগজ দিয়ে সরস্বতী ঠাকুর বানিয়েছিলেন। সাদা কালো ফটো রয়েছে মায়ের অ্যালবামে। আশ্চর্য সুন্দর, দাঁড়ানো বীণাপানি প্রতিমা। প্রায় এক মানুষ সমান। হলুদ কাইট পেপারের শাড়ি, বীণা। পায়ের কাছে কমলা ঠোঁটের সাদা হাঁস। ঘরখানার সামনের দেয়ালের গায়ে কালো লোহার শিক দেয়া জানালা ছিলো। শিকের বাইরে বরফি বরফি লোহার জাল। তার বাইরে লম্বা সিমেন্ট করা রোয়াক। সেই জানালাখানাকে কাগজ দিয়ে মুড়ে,ছোট্ট পুজোর ঘর বানিয়ে সেই প্রথম আমরা সরস্বতী পুজো করলাম। মানে আমি হবার পরে প্রথম বার। অনেক বড়ো হয়ে শুনেছি আগে বাবা আমাদের বাড়িতে মস্ত করে পুজো করতেন। গান বাজনার জগতের মানুষেরা আসতেন সে পুজোয়। সারা দিন, রাত গড়িয়ে গান, আবৃত্তি, শ্রুতি নাটকের জোয়ারে ভাসত বাড়ি। কিন্তু সে গল্প অনেক পরে জেনেছি। আমার ছোট্ট তিন জনের পাখির বাসায়, এই অবাক বীণাবাদিনী মূর্তি আমারই বাবা মশাইয়ের হাতের মুঠোয় গড়ে উঠতে দেখে সে যে কি রোমাঞ্চিত হচ্ছিলাম, বলার না। গঁদের আঠা, কাগজ, কাঁচি, আর পুপুর বাবা। ছোটো পুপু গোল গোল চোখে দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত অবধি বসে দেখছে। মা কোথাও গেছিলেন। নাকি অফিসেই। সঙ্গে মায়ের কেউ বান্ধবী এসেছিলেন সে দিন। দেখতে এসেছিলেন কাণ্ডটা। আর সেকি মুগ্ধ হয়েছিলেন দেখে। মা কিছু বলতেন না, খালি চাপা গর্বের আলোয় উজ্জ্বল একখান মিটিমিটি হাসি ফুটে উঠত ঠোঁটে। পরের দিন বাবা পুজো করলেন। সেই আশ্চর্য গায়ে কাঁটা দেয়া মন্ত্রোচ্চারণের পুজো। রঙিন ফোটো ত তখন ছিলো না। তাই সাদা কালো ছবিই রইল।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register