Wed 22 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ২৭)

maro news
সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব - ২৭)

কেমিক্যাল বিভ্রাট

নয়

ফোনের ঠেলায় একেবারে নাস্তানাবুদ হয়ে উঠেছেন জবালা। না। মোবাইলে নয়। যত দরকারই থাক, রাত দশটা বাজলেই তিনি নিজেরটা তো বটেই, স্বামীর মোবাইলটাও অফ করে দেন। ওঁরা মনে করেন, ওঁরা অতটা ভি আই পি নন যে, রাত দুপুরেও ওঁদেরকে কেউ ফোন করবে। তা ছাড়া, ফোন খোলা রাখলে ফোন আসবেই। আর ওঁরা ফোন খোলা রাখছেন, এটা চেনাজানাদের মধ্যে একবার জানাজানি হয়ে গেলে নিস্তার নেই। ফোন আসতেই থাকবে।

ফোন কেনার পর প্রথম প্রথম চব্বিশ ঘণ্টা খোলা রেখে দেখেছেন, যত না কাজের ফোন আসে, তার থেকে বেশি আসে ফালতু ফোন। ধরলেই খোশ গল্প শুরু করে দেয়। আর তার প্রত্যুত্তরে কোনও কিছু বললে তো হয়েই গেল। সারা রাত কাবার হয়ে যায়। উনি আরও দেখেছেন, ইদানীং গল্পের চেয়েও লোকে বেশি ফোন করে পরনিন্দা পরচর্চা করার জন্য।

আজকাল লোকেদের বুঝি ঘুমই আসে না। সারাক্ষণ টকাটক টকাটক কী যে এত মোবাইলের বোতাম টেপে কে জানে! নিজের ঘুম না এলেই যে অন্যের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে হবে, এটা কে বলেছে! যাকে ফোন করছে, ঘুম ছাড়া তারও তো অন্য কাজকর্ম থাকতে পারে। দিনের বেলায় বেশির ভাগ লোকই কাজে ব্যস্ত থাকে। নিজের মতো কাটানোর জন্য হাতে থাকে শুধু রাতটুকু। সে সময় পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে তারও তো কথা বলতে ইচ্ছে করতে পারে। সারাক্ষণ যদি ফোনই ধরতে হয়, তা হলে অন্য কাজটা করবে কখন শুনি?

জবালার মাঝে মাঝেই মনে হয়, এই প্রজন্মটাকে ‘কোথায়’ প্রজন্ম বলা উচিত। কারণ, এরা বন্ধুবান্ধবদের ফোন করেই ‘হ্যালো’ ‘ট্যালো’ নয়, প্রথমেই যেটা জিজ্ঞেস করে, সেটা হল— কোথায়? যেন কারওরই বাড়ি থাকার কথা নয়।

আর যাকে ফোন করছে, সে যদি বা়ড়িতেও থাকে, কেন বলছে সে হয়তো নিজেও জানে না। তবু বলে ওঠে— একটু বাইরে আছি রে। বাইরে মানে পাড়ার রকে নয়। রক কালচার তো অনেক দিন আগেই উঠে গেছে। এমনকী চায়ের দোকানের আড্ডাও উঠব উঠব করছে। বাইরে মানে সে যদি গড়িয়ায় থাকে তো হান্ড্রেড পারসেন্ট কনফিডেন্সের সঙ্গে সে অনায়াসে বলে দেয়— এই তো দমদমে...

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register