Sun 26 October 2025
Cluster Coding Blog

T3 || ঘুড়ি || সংখ্যায় রঞ্জনা বসু

maro news
T3 || ঘুড়ি || সংখ্যায় রঞ্জনা বসু

স্মৃতি তুমি

আমার ঠাকুমার লম্বা চুলের ঢাল নিয়ে যেমন গর্ব ছিল তেমনই সংসারের চার-চৌহদ্দিতে তাঁর হাতের রান্নার সুখ্যাতির অন্ত ছিল না। সেই ঠাকুমা তাঁর কবিতার খাতা লুকিয়ে রেখেছিল হয়তো ইচ্ছে করেই, হয়তো মেয়ে হিসেবে এই পরিচিতি স্থান পাবে না একথা ভেবেই। ঠাকুমার এই আপন স্বত্ত্বাটি আমাদের কাছে প্রকাশ পেয়েছিল তাঁর মৃত্যুর পরে। তাঁর এই স্বাধীন চেতনা আমার কাছে ছিল অনেকটা জায়গা নিয়ে। সামান্য সংগ্রহ থেকে তেমন করে জানা যায়নি তাঁর সমস্ত কাব্য চেতনাকে। সবটুকু তিনি রেখে যাননি হয়তো রাখতে চাননি। যেটুকু ছিল তাতে প্রকাশ পেয়েছে দেশভাগের কারণে সমস্ত জীবন জুড়ে যন্ত্রনার ছবি। সেই সময়ের বালিকা বধূটি সংসার চিনে উঠতে না উঠতে অকস্মাৎ যে জীবন সংগ্রামের মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন সেখানে রোমান্সের আশা করা একেবারে বিড়ম্বনা। ধীরে ধীরে তা ছুঁয়ে গেছে আমাকে। তাঁর ফেলে যাওয়া ইচ্ছেগুলো ঘুড়ির মতো উড়িয়ে দিতে চেয়েছি কতবার ঐ আকাশে, কিন্তু, পেরেছি কই? সত্যি বলতে কি রমণীর যন্ত্রনা তো একরকম নয়! তার কত কত স্তর। শারীরিক ও মানসিক চাপ কত টানাপোড়েন। এতকিছুর পরেও যখন সম্পাদক মহাশয়/মহাশয়া লেখা চেয়ে ফোন করেন তখন দীর্ঘশ্বাস ঝেড়ে ফেলে কলমকে হাতে তুলে নিই। মনে মনে বলি ঠাকুমা, আমি তোমার বিশ্বাসকে চিরকাল শ্রদ্ধা করে এসেছি। তোমাকেই ভালোবেসেছি। এখন আগুন সময় জুড়ে সিঁড়ি ভাঙা খেলা। একটি দুটি চারটি লেখা। আকাশের নীচে জীবন আর জীবন জুড়েই মায়া। সেই মায়ায় জড়িয়ে গিয়ে আনন্দময় কিছু তুলে নেব বলে, এসে বসি কবিতার মাঠে। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখি, ঘুড়িটা যেন উড়ছে। তোমারই এঁকে রাখা রঙে, বিশ্বাসের ঢঙে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register