Sun 26 October 2025
Cluster Coding Blog

T3 || ঘুড়ি || সংখ্যায় সুস্মিতা পাল

maro news
T3 || ঘুড়ি || সংখ্যায় সুস্মিতা পাল

ইচ্ছেঘুড়ি

রবিঠাকুর কি কখনো ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন?তাঁর 'ছেলেবেলা ' তো সাধারণ আর পাঁচটা বাঙালির তুলনায় আলাদা ।পড়া,খেলা,কুস্তিচর্চা,সঙ্গীতসাধনা-যা কিছুই হোক না কেন, সবই বাহ্য।কারণ,তা ছিল নিয়মের নিগড়ে বাঁধা।তার অন্তর 'আপনাতে আপনি বিকশিত'।ঘুড়ি র সুতোয় ভর করে ভেসে যাওয়ার প্রয়োজন ঘটেনি - "এই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়"। আমাদের ছেলেবেলা তো তেমনটি নয়।নিজের হাতে লাটাই ধরিনি,তবে আমাদের শৈশব-কৈশোরে পাড়ার ছাদে ঘুড়ি ওড়ানো ছেলেদের দেখা পাওয়া যেত।শরত যখন আকাশের নীল ক্যানভাসে সাদা তুলোট মেঘের আলপনা আঁকত,তখন তাতে রঙিন প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়াতো সেইসব ঘুড়ি।পেটকাটির সুতোর টানে নেমে আসত চাঁদিয়াল ।সেই চোরা টান চারিয়ে যেত আরেক ছাদের কোনো কিশোরী-মনে। লেখা শুরু হতো চিরপুরনো তবু চিরনতুন সেই মন-কেমনের কবিতা।চোরাচাহনি বেপথু হলেই লাটাইয়ের সুতো বেহিসেবী ছাড় পেয়ে দিকশূন্যপুর পাড়ি জমাত । কিন্তু দৌড় তার ঐটুকুই।শরতের" মাঝামাঝি, উঠিল বাজনা বাজি" - বিশ্বকর্মা হাজির দুয়ারে।চারপাশে ঘুড়ি আর মন উড়ু উড়ু দিনের শুরু ।প্রতি বছর তা এত নরম, সুগন্ধী হবেই,তার কোনো মানে নেই।ন্যাড়া ছাদে সুতো আলগা করতে করতে পিছু হটা- কখনো কখনো সব গল্পের শেষটুকু বড় অসময়ে লেখা হতো।কিছু ঘুড়ি পৃথিবীর সীমানা ছাড়িয়ে হারিয়ে যেত প্রিয়জনের আশা,আনন্দ নিয়ে। নাগরিক জীবনে সবকিছুতে বড় অবিশ্বাস,বড় ভয়।এখন আর ছোটরা তেমন ঘুড়ি ওড়ায় না।মোম-ই তেমন চেনে না, তো মোমবাতি ঘুড়ি।'ময়ূরপঙ্ক্ষী' হোক বা 'মুখপোড়া' - সব ঘুড়ি তাদের কাছে এক। তার সঙ্গে খবরের কাগজে মাঞ্জা শুকোবার সুতোয় আটকে কিছু খুচরো, কিছু মারাত্মক দুর্ঘটনার হেডলাইন। স্মৃতির ঘুড়িগুলো এখনও ফিরে আসে শরতের আকাশে।সাদামাটা জীবনের আকুলতা উড়াল দেয়, স্বপ্নের ঘুড়ি দু একটা বহুদূর পাড়ি দেয়, বাকিদের সুতো অন্য কারো 'ভেড়িয়াল' র সুতোয় কাটা পড়ে। কারা যেন ছাদ থেকে জোরে চেঁচিয়ে ওঠে: " যা:,ভোকাট্টা" !
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register