T3 || আমার উমা || 26য় প্রিয়াঞ্জলি দেবনাথ
ডুব
ঝিমলি আর মান্তু ছুটে চলেছে। ছুটেই চলেছে। স্কুলের ঢং ঢং ঘন্টার পরেই কে আর তাদের আটকায়। চারিদিকে ঝরছে শ্রাবণধারা। তবুও, ছুট ছুট। মোড়াম রাস্তার লাল রঙে মাঝেমাঝে ভরে উঠছে ওদের সাদা স্কুলড্রেস। এরপর কাদামাখা মাটির রাস্তা। কলাবাগান। আমবাগান। জোড়াপুকুর পেরিয়ে সরু আলপথ। দু'পাশে কচি ধানের শিস। ওরা দুই বোন ছুটেই চলেছে। ঝিমলি এগিয়ে গেছে। মান্তুর ছোট্ট পাদুটো কাদায় জড়িয়ে ধরছে মাঝে মাঝে।
-- দিদি, এই দিদি--- একটু আস্তে চল না! বড্ড কাদা...
-- আয় তাড়াতাড়ি।
-- জুতো যে কাদায় আটকে গেছে।
-- আয় আয়, চল পা ধুই।
-- পেত্নীপুকুরে যাবি! ভয় করছে যে...
-- চলই না।
দুই বোনে এগিয়ে যায় পেত্নীপুকুরের দিকে।
-- দেখিস বড্ড পেছল।
ঝিমলির কথা শেষ হতে না হতেই নিমেষের মধ্যে পা পিছলে যায় মান্তুর। পেত্নীপুকুরের উত্তাল জলে তখন শুধু একটাই ডাক---
-- দি---দি---
ঝিমলি দেখে মান্তু তলিয়ে যাচ্ছে পুকুরের গহ্বরে। আরো গভীরে!
-- বু---নু--- আমি আসছিইইই---
শৈশব- কৈশোর- যৌবন পেরিয়েও ঝিমলি এখনও এক গভীর অসুখে ডুবে আছে। থার্মোমিটারে মান্তু দেখল জ্বর ১০৪।
-- দিদি, এই দিদি, কী রে, কী বলছিস!
প্রায় জ্ঞানশূন্য ঝিমলি ক্রমাগত অদ্ভুত এক ঘোরের মধ্যে ডুববে ডুবতে বিড়বিড় করে বলে চলেছে, 'বুনু, আমি আসছি, আমি আসছি...'।
0 Comments.