Wed 22 October 2025
Cluster Coding Blog

ক্যাফে গুচ্ছ কাব্যে রূপক চট্টোপাধ্যায়

maro news
ক্যাফে গুচ্ছ কাব্যে রূপক চট্টোপাধ্যায়   ১) সেরম হিসেব জানলে বিগত তিনটে শতাব্দী তোমায় ফেরত দিয়ে দিতাম। আমার তো কোনো শতাব্দী লাগে না বেঁচে থাকার। আঙুল গুনে দেখেছি চাতালে শুয়ে থাকা একটি মাত্র জীবন ভোর হলে দুঃখ কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। পরিক্রমণে। ট্রেনে ট্রেনে গান বিক্রি করে। চাগিয়ে ওঠা খিদের ওপর পা দিয়ে উঁচিয়ে ধরতে চায় জীবদ্দশা! এরপর ভুল ভাঙলে আর টসে অংশ নেয় না। খেলা ছেড়ে চলে যায় নিঝুম জলাশয়ের পাশে যেখানে তার আদিম ছায়া স্নান করে ভাত রাঁধে। হতভাগা মনে মনে আবার ভালোবেসে ফেলে পরের দিনের খেলাটাকেই! ২) একপিঠে বসন্ত এলো অন্য পিঠে চণ্ডালিনী মুদ্রায় দাঁড়িয়ে বর্ষাকাল! কার জন্য অরণ্য আঁকবো? কার গলায় গেঁথে দেবো অর্ধপাচ্য পৃথিবীর হাড়! মুদ্রাস্ফীতির চাতালে বসে মনোহর গোয়ালার বৌ ঘুঁটে দেয়। গোল বৃত্ত! বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আমরা কতবার টসে জিততে চেয়েছি, বর্ষা বসন্ত কেউ আমাদের খেলায় প্রতিপক্ষ নয়। তবুও জিতে যাওয়া খুব দরকার ছিলো। ফুঁ দিয়ে দিয়ে জীবন গুলো নিভিয়ে দিচ্ছে যারা তাদের থাবার নীচে বসেও জিতে যাওয়াটা খুব দরকার ছিলো! ৩) আবহাওয়া সঙ্গীত বাজছে, কস্টিউমস নেই বলে মঞ্চস্থ হতে পারছে না দ্রৌপদীরে বস্ত্রহরন পালা! কেউ কারো পাঠ মনে রাখেনি সবাই হাতপা ছুঁড়ে মুন্ডু হিলিয়ে, আত্মপরিচয় জানান দিচ্ছে। যে যার মতো হ্রেষা ধ্বনি তুলে ছুটছে মঞ্চের বৃত্তাকার পথে। অলক্ষ্যে বেজে যাচ্ছে একঘেঁয়ে আবহাওয়া সঙ্গীত! ৪) সবাই ফিরে গেছে একে একে, দুটি মানুষ এখনো চাঁদ উঠবে বলে বসে আছে চাতালে! মৃদু ফুল গুলি জ্বলে দূরে! দাঁতে ইচ্ছে মতো রাত কাটছে ঝিঁঝি! মানুষ দুটি ডানা ভাঙা শরীরে পরস্পরকে জড়িয়ে আছে। ঠান্ডা আগুন। নীল হয়ে আসছে দুটি শরীর। তার আলো চারপাশে ছিটকে পড়ছে পাথুরে চাঁদ আর উঠলো না বিকল রাতের ঘাড়ে! ৫) খুব অস্থির লাগছে। একটা স্থিতধী জলচৌকি দাও। বসি গিয়ে! ব্রজবুলি না জেনে মান ভঞ্জনের শ্যাম আর ঘরে ফিরে আসেনি, যে যার মতো শোকের পোষাক পরে মিছিলে হাঁটে। বাসের গায়ে গন্তব্য লেখা নেই। তবুও উঠে পড়া। ভাতের গায়ে প্রেম নেই তবুও গিলে ফেলা গোগ্রাস! যৌনতায় পিঠে আদর নেই তবু্ও প্রত্ন নিদর্শনের ঝাঁকুনি! খুব অস্থির লাগছে এই হেঁটে যাওয়া ও প্রান্তে একটা সরাইখানা রাখো, চন্দনের বনে অঢেল মদ আর রুটি রাখো টলমল শরীরে আছাড় খেয়ে পড়ার মতো অবলোহিত আদিম নেফারতিতি রাখো বেদনার চাতাল করে! ৬) সহজ হোক তীক্ষ্ণ নদীতীরে চিতার নিভু নিভু শোক। থমকে থাকা শ্লোকের চরণে হেঁটে যাক পদকর্তা স্বয়ং। নেচে উঠুক হাঁটু জলে নদীর নিয়তি ঢলঢলে অকূল পাথারে! এই শোক প্রস্তাব ভুলে আকন্দের ফুলে জ্বেলে দাও চলে যাওয়া পথের দুই পাশ। ভালেবাসা যত্নকরে শ্বেত পাথরে তুলে রাখো আজন্ম মানুষটাকে দোষ দেওয়ার ছলনা সকল!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register