- 6
- 0
মাতৃভাষা যে কোন জাতীর মাতৃদুগ্ধের সমতুল্য এটা সবাই উপলব্ধি করে। বহু রত্নখচিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে একটি মূল্যবান রত্ন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমরা জানি না আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কতটা উপলব্ধি করতে পারি বা পেরেছি এ পর্যন্ত। হয়তো আরও এক শতাব্দী গবেষণা চলবে। জল পড়ে পাতা নড়ে এটা যেমন বাস্তব সত্য রবীন্দ্রনাথের প্রতিটি শব্দ উচ্চারণ, শব্দ চয়ন, ছন্দবিন্যাস এক একটি সত্যের প্রকাশ। পদ্ম গদ্য নাটক আলেখ্য সবক্ষেত্রেই উনার অবদান অসামান্য বললেও কম বলা হয়। কি প্রতিভা ছিল উনার মধ্যে শুধু উনি বোধহয় উপলব্ধি করতে পেরেছেন। উনার প্রকাশিত প্রতিভা থেকে যেটুকু বুঝতে পারি তাতে বাংলা সাহিত্য পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সাহিত্য গুলির সমকক্ষেস্থান পেয়েছে এটা বলা বাহুল্য তবে বাস্তব সত্য এটাই। আমাদের শৈশবে রবীন্দ্রনাথ কৈশোরে রবীন্দ্রনাথ যৌবনে রবীন্দ্রনাথ বার্ধক্যে রবীন্দ্রনাথ সারা জীবনে রবীন্দ্রনাথ।
ভাষা বিকাশের বিভিন্ন বিভাগে সমভাবে এগিয়ে চলতে না পারলে কোন ভাষা মাধুর্যতা এর শ্রেষ্ঠত্ব পায়না। এক কথায় বলা যায় রবীন্দ্রনাথ হয়তো এটা উপলব্ধি করেছিলেন বলেই ১৭ হাজারের বেশি গান রচনার পরেও কবিতা নাটক ইত্যাদি বিভাগে দক্ষতার সঙ্গে লিখে আমাদের ভাষাকে ,সাহিত্যকে অমৃত সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছেন। সংস্কৃত ভাষা থেকে উৎপন্ন এই বাংলা ভাষা কে সহজ সরল বোধগম্য করে তোলার জন্য রবীন্দ্রনাথের প্রচেষ্টা ছিল নিরন্তর। তাই কোথাও শব্দচয়নের মাধ্যমে কোথাও ছন্দ আনয়নের মাধ্যমে এই ভাষা কে মাধুর্যতার শিখরে নিয়ে গিয়েছেন। সাধু চলতি উভয় ভাষাতেই সমান পারদর্শী লেখা পাওয়া যায় তার লেখা তে। কোথাও বর্ণনার ছটা, কোথাও ঘটনার ঘনঘটা এনে রস মিশ্রণ করতে সমর্থ হয়েছেন তাই এত মধুর তার লেখা তার গান তার ছন্দ। ছোটগল্পেও অদ্বিতীয় তিনি। ছোটগল্পে প্রাণসঞ্চার তার মত আর কেউ পারেননি নিশ্চিতভাবে বলা যায়। অবশেষে বলা যায় বাংলা ভাষা মানেই রবীন্দ্রনাথ আর রবীন্দ্রনাথ মানেই বাংলা ভাষা । একে বাদ দিলে এ ভাষা সাহিত্য অন্তঃসারশূন্য হয়ে যাবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গানের ছন্দ আনয়নে তার সমান পারদর্শী আর কেউ হতে পারেননি। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সমন্বয়ের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদানই ছিল তার লক্ষ্য। অন্য ভাষায় দখল না থাকলে এটা সম্ভব নয় তার প্রমাণ আমরা গীতাঞ্জলি র অনুবাদের নোবেল পাওয়ার মধ্য দিয়ে সারাবিশ্ব উপলব্ধি করতে পারি। কালজয়ী আমাদের বাঙ্গালীর গর্ব রবি ঠাকুর চিরকাল থাকবে আমাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় আর আমরা তার রস আস্বাদন করে বিশ্বকে দেবো শান্তির বার্তা সহমর্মিতার বার্তা । তার ভাষাতেই শেষ করি "দিবে আর নিবে, মিলিবে মিলাবে যাবে না ফিরে, এই ভারতের মহামানবের সাগর তীরে"
0 Comments.