Sun 26 October 2025
Cluster Coding Blog

সাপ্তাহিক রম্য সাহিত্যে ইন্দ্রাণী ঘোষ (পর্ব - ১৩)

maro news
সাপ্তাহিক রম্য সাহিত্যে ইন্দ্রাণী ঘোষ (পর্ব - ১৩)

ঠিকানা

একটা তিরতির করে বয়ে চলা নদী, না নদী বলা চলবে না, একটা স্বচ্ছ জলের স্রোত | তার নিচে বালি নেই, আছে রং বেরং এর পাথর আর লাল, নীল মাছ. জলে পা ডুবিয়ে রাখলে তারা এসে ঠুকরে দিয়ে যায় বা আদর করে | সেই জলে স্নান করতে আসে সবুজ পিঠ, লাল গলা, নীল ডানার পাখিরা.| সুর্যের রং ভোরের হাল্কা লাল থেকে দুপুরের সোনালি হয়ে মুখ দেখে তার জলে, আর মেঘলা দিনে মেঘের ছায়া পড়ে ছোট্ট, ছোট্ট ঢেউয়ের উপরে | তারপর আসে মেঘের দল, বর্ষাকালে রাগী মেঘের দল আসে জলে ভর্তি হয়ে, সব জল ঢেলে দেয় ওই স্বচ্ছ তোয়ার বুকে.| আকুল হয়ে ধারা স্নান করে সে | লাল, নীল মাছেরা আনন্দে লুকোচুরি খেলে লাল, নীল নূড়ির আড়ালে আবডালে | আর সেই স্বচ্ছ তোয়ার পাড়ে আছে একটা বাড়ি, বাড়ীটা ছিমছাম, দুই কামরার, বাড়ীতে অনেক জানালা,তারা শিকবিহীন, তা দিয়ে মেঘের প্রবেশ অবাধ, জানলার সামনে লেখার টেবিল, টেবিলে অবিন্যস্ত লেখার পাতারা, মেঘের আদরে তারা আত্মহারা| এক চিলতে রান্নাঘর, তাতে শিকেয় তোলা সামান্য আহার্য, এই যেমন জল ঢালা ভাত, ছোট মাছের ঝাল, ঝাল ঝাল আলুর তরকারি, লংকার আচার. বাড়ীর সামনে এক চিলতে বাগান, তাতে রেইন লিলি, জুঁই, পাহাড়ি ফুলের ঝার. বাড়ির পেছনে সব্জির বাগান, তাতে অল্প স্বল্প সব্জির চাষ করে দিয়ে যায় গ্রামের পাহাড়ী মানুষেরা| নীল প্রজাপতির ঝাঁক এসে বসে উজ্জ্বল গোলাপী ফুলের উপর. | বাড়ীটাতে বন্ধুরা আসে মাঝে মাঝে. কফির সুবাসের, চায়ের লিকারের, সোনালি তরলের খুশির বিন্দু বিন্দু বাস্প জমে বাড়ীটার জানলার কাঁচে, সমস্ত খুশির বাস্প , ভোরের শিশির, স্বচ্ছতোয়ার বুকে পড়ে থাকা জ্যোৎস্নার রং এক এক করে পরম যত্নে তুলে এনে একসাথে মিলিয়ে রং বানায় সেই ছোট্ট বাড়ীর মালকিন, তারপর সেই রঙ কলমে ভরে টেবিলে পরে থাকা অবিন্যস্ত পাতায় লিখে যায়, লিখেই যায়, সে বাড়ীর মালকিন |

এমন একটা বাড়ী কয়েকদিন ধরেই স্বপ্নে আসা যাওয়া করছে । কে জানে কেন ।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register