Sun 26 October 2025
Cluster Coding Blog

ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৭৫

maro news
ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন - ৭৫

ফেরা

জয় কেদার, জয় হিমালয়। দেবাদিদেবের নামে জয়ধ্বনি দিয়ে বাস ছাড়লো। ঘড়ি বলছে ভোর ছটা তখন। কিন্তু ঘন কালো মেঘের অন্তরালে সূর্য তখন ঢাকা পড়ে আছে। ট্যুর ম্যানেজার ডাবলাদার কথায় সবাই যে যার বর্ষাতি হাত ব্যাগে রেখে দিল। মেজর যা যা লাগেজ ছিলো সব গুপ্ত কাশীর হোটেলে রেখে আসা হয়েছে। ফাঁকা রাস্তা পাওয়ার ফলে মিনিট পয়তাল্লিশের মধ্যেই গৌরীকুন্ড পৌঁছে গেলাম। কপাল গুনে দেখা গেল মেঘ কাটছে। সবার মনে সেটা বেশ একটা স্বস্তির চিহ্ন বয়ে আনলো। কিন্তু গৌরীকুন্ডের ভিড় দেখে সেটা বেশীক্ষণ টিকলো না। বেশ ভালো ভক্তসমাগম হয়েছে। এখন তাড়াতাড়ি যাত্রা শুরু করতে পারলে হয়। মনে ইচ্ছা থাকলেও এবার আর উষ্ণ প্রস্রবণে অবগাহন করা হলো না। কারণ একটাই, সময়ের অভাব। মনে ভেবে রাখলাম, ফেরার সময় এক ডুব মেরে যাবো। ঘোড়া স্ট্যান্ড থেকে দরদস্তুর করে ঘোড়া নিয়ে এগোই। সেই পুরনো চেনা রাস্তা। মন বারবার ছুঁতে চাইলো সাত বছর আগের স্মৃতি। সেই একা একা সবার আগে চলে গিয়েছিলাম। এবারও দেখলাম প্রায় তাই, আমি সবার আগে, একটু পিছনেই ডাবলাদা, অনেক পিছনে বাকি সবাই। সহিসের সাথে গল্প করতে করতে চললাম। সহিস নিতান্তই বাচ্চা ছেলে। ধারে কাছেই কোন পাহাড়ি গ্রামে থাকে। গাইডের পাশাপাশি ক্ষেতি বাড়ি করে। মাঝে একবার চা খেতে নেমে ছিলাম, তারপর আর দাঁড়াইনি। ঘোড়া নিয়ে সিধা রামওয়াড়া। ঘড়ি বলছে সকাল সাড়ে নয়টা। অর্ধেকের বেশি রাস্তা চলে এসেছি। রামওয়াড়া অতি প্রাচীন জনপদ। কথিত আছে মহাপ্রস্থানের পথে পান্ডবরা এখানে এক রাত ছিলেন। আমি আর সহিস একটি দোকানে ঢুকে কিঞ্চিৎ জলযোগ করলাম, ঘোড়াটিকে চানা খাওয়ালাম। একটি সিগারেট ধরিয়ে ভালো করে দেখতে লাগলাম চারপাশের পরিবেশ। বেশ ব্যস্ত জায়গা। অধিকাংশ তীর্থ যাত্রী যাওয়া আসার মাঝে এখানে বিশ্রাম নিচ্ছেন। কেদারনাথ যাত্রার এ এক অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এই বেড়ানোর তিন বছরের মধ্যে বন্যায় রামওয়াড়া পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়। নতুন রুটে এখন লোকেরা যাতায়াত করেন। জানিনা আমার দেখা সেই জনপদ আবার নতুনভাবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে কি না।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register