Wed 05 November 2025
Cluster Coding Blog

T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় মৃত্তিকা মুখোপাধ্যায়

maro news
T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় মৃত্তিকা মুখোপাধ্যায়

মাতৃকা

নিরঞ্জন পালরা চার পুরুষ ধরে ঠাকুর বানান।তাঁর ছেলেদের মধ্যে ছোট ছেলে কলেজ শেষ করেছে ।সে আর এই কাজে আসতে চায়না।নিরঞ্জনও উচ্চ মাধ্যমিক অব্দি পড়েছিলেন,যদিও পরীক্ষা টা দেওয়া হয়নি।অনেক কষ্ট মেনে নিয়েও এক চিলতে ঘরে থেকেই এই কাজ করেছেন সারাজীবন।আসলে খুব ছোট বয়স থেকে বাবার হাতে হাতে কাজ করতে করতে কাজটাকে কেমন ভালোবেসে ফেলেছিলেন নিরঞ্জন।একটু একটু করে মূর্তিগুলো যখন তৈরী হয়,অদ্ভুত ভালোলাগা তিরতিরে নদীর মতো মনটাকে ভিজিয়ে দেয়।ক্রমে একটা সৃষ্টির আনন্দ পেয়ে বসে নিরঞ্জনকে।আর এই কাজ ছেড়ে তাঁর বেরোনো হয়নি।মূর্তিগুলো যেন প্রাণ পাওয়া চরিত্রের মতো মায়ায় বেঁধে ফেলতে থাকে।ধীরে ধীরে দুর্গাপুজোর প্রতিমাও বানাতে শুরু করেন নিরঞ্জন।এক সময় এমন হয় যে মূর্তি বানাতে বানাতে তাদের সঙ্গে মনে মনে কথা বলতে থাকেন নিরঞ্জন।এখন বয়স হয়েছে ।চোখের জোর কমেছে।ছেলেরা বারণ করে।তাও তিনি মূর্তি বানাবেনই।এ বছর জোরজার করে একটিই দুর্গা প্রতিমা বানানোর অনুমতি পেয়েছেন নিরঞ্জন।রোদের রঙে যেই একটু করে সোনার আভা ধরে,নিরঞ্জনের হাতে মায়ের রূপও সেজে উঠতে থাকে।ছানি অপারেশন করেও চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এসেছে।আর মূর্তি বানাতে পারবেননা তিনি।মায়ের মূর্তি তৈরী করতে করতেই দুই চোখ বেয়ে জল পড়তে থাকে নিরঞ্জনের।দেখতে দেখতে পুজো একেবারে কাছে এসে গেলো।নিজের মেয়ের মতো করে তিল তিল করে মা'কে সাজিয়ে তুলতে থাকেন নিরঞ্জন। চতুর্থীর সন্ধে।প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে আলোর রোশনাইয়ে পুজোর উদ্বোধনের আয়োজন হচ্ছে ।এরপরই জনগণের জন্যে খুলে দেওয়া হবে মন্ডপ।মৃৎশিল্পীদের পাড়ায় লরি,ম্যাটাডোরের ভিড়।মহানগরের রাস্তা ভেসে যাচ্ছে আলো আর খুশীর জোয়ারে।বৃদ্ধ নিরঞ্জন সাশ্রু নয়নে দেখছেন মেয়ের চলে যাওয়া...
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register