Tue 04 November 2025
Cluster Coding Blog

T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় শমিত কর্মকার

maro news
T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় শমিত কর্মকার

বিনে পয়সার আম

মন্টু আজ শরীরটা ভালো লাগছে না বলে স্কুলে যাইনি। মা অনেক বার বলেছেন আজ স্কুলে গেলি না কেন? আমার শরীরটা ভালো লাগছে না তাই যাইনি। আমি তো তোর শরীর খারাপের কোন লক্ষন দেখছি না, শুধু শুধু স্কুল কামাই করলি। সামনেই পরীক্ষা আসছে এটা কি ঠিক করলি? মন্টু মার মুখের উপর বলল করেছি বেশ করেছি। ঠিক আছে কেমন বেশ করেছিস সেটা আজ আমি দেখেছি। শরীর খারাপ যখন সারা দিন বাড়িতেই থাকবি। কোথাও আজ বেড়িয়ে দেখ। মন্টুর বাবা বাজার থেকে ফিরে ওর মাকে ডাকলো, কি গো শুনছো? কি বলছো, তুমি কি বাজার থেকে চলে এলে। হ্যা গো হ্যা, আমি বাজার থেকে ফেরার সময় রজত আর রন্টু কে দেখলাম বাজারের কাছে একটা দোকানে দাঁড়িয়ে। ওরা কি আজ স্কুলে যাইনি, বাবু তো বলছিল কিছুদিন বাদে ওদের টেস্ট পরীক্ষা। তা এই সময় ওরা স্কুল কামাই করছে কেন। তাছাড়া এখন ওরা এগারো ক্লাস এ পড়ছে এটা তো ঠিক নয়। মন্টুর মা চেঁচিয়ে উঠে বলল, তুমি পরের ছেলে কেই দেখছো? নিজের ছেলে যে ঘরে বোসে আছে সেটা কি দেখেছো। কেন বাবু স্কুলে যাইনি? না, তার নাকি শরীর খারাপ। বললাম বলে বলল সে নাকি বেশ করেছে বলল। আমিও দেখছি। হ্যাঁ তুমি দেখো, এ ছেলে বড় বেশি বাড়াবাড়ি করছে কিছু দিন হলো। মন্টু দুপুর বেলায় খেয়ে দেয়ে ধাঁকিমেরে শুনে থাকল। মা যেই ঘুমিয়ে পরলো সেই মাত্র বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পরল। মা যাতে দেখতে না পারে সেই জন্য পেছনের দরজা দিয়ে বেড়ল।বেড়িয়ে সোজা রজতের বাড়ি। অন্যদিকে রন্টু স্কুলের ব্যাগ নিয়ে সাইকেলে চেপে রজতের বাড়ি চলে এসেছে। ওরা তিন জনেই স্কুলে ঠিক করেছিল আজ স্কুলে যাবে না। আর দুপুরে ওরা মধুসূদন বাবুর বাগান থেকে আম চুরি করবে। যা ভাবা আর তাই কাজ। ওরা তিনজন ই এখন মধুসূদন বাবুর আমের বাগানে। রন্টু আর রজত ভালো করে দেখে নিলো চারধারে কিউ আসছে কি না। এরপর মন্টু কে গাছের নিচে দাঁড় করিয়ে রজত আর রন্টু সোজা গাছে উঠে গেল। টপাটপ আম ছিড়ছে আর নিচে ফেনছে।মন্টু সাথে করে একটা চটের বস্তা নিয়ে এসেছিল। গাছ থেকে আম পরতেই সোজা বস্তায়। কিছু পরে কেউ আসার আওয়াজ পেতেই রজত রন্টু কে ইসারা করে জানাল ভাগ ভাগ কে যেন আসছে। দুজনে গাছ থেকে নেবে চুরি করা আমের বস্তা সাইকেলে তুলে পালাতে লাগলো। কিছু পরে মধুসূদন বাবু বাগানে ঢুকলেন। উনি রোজ দুপুরে বাগান গুলো দেখেন। কারন ঐ সময় আম বেশি চুরি হয়। সধুসূদন বাবু প্রায় আম গাছের আম গোনা। আজ যে গাছের নিচে দাঁড়িয়েছেন তার প্রায়ই আম পেলেন না। নিশ্চিত কেউ আজ আম চুরি করতে এসেছিল। এতো আম আজ কোথায় গেল, প্রায় ফল নেই বললেই চলে। এদিকে এতো কাঁচা আম পেয়ে ওরা তিনজন খুশি হলেও মনে মনে ভয়, কারন ওরা এই আম চুরি করেছে। এরপর বাড়ির লোক জানতে পারলে ওদের শেষ করে দেবে! মন্টু যতোটা চালাক তার দ্বিগুণ তার মা। মন্টু বাড়ি থেকে বেড় বার পরপর তার মা ঘুম থেকে উঠে পরেন। আর দেখে নেন তার ছেলে ঘরে নেই। তার কথাই ছিল শরীর খারাপ যখন তখন তুই আজ সারাদিন বাড়ি থাকবি। ওর মা একটা বড় লাঠি হাতে নিয়ে গেটের সামনে বোসে থাকলো। মন্টু বাড়ি এলেই তার আজ যা করার তাই করবেন। সন্ধ্যা হবে হবে এমন সময় পেছনের দরজায় থেকে আওয়াজ আমি বাইরে দরজা খোলো। মা ছুটে এসে বলল, তুই আজ সারারাত ওই খানেই দাঁড়িয়ে থাক ঘরে ঢোকা বন্ধ। তোর তো শরীর খারাপ বাইরে গেলি কি করে? আমি একটু রন্টুদের বাড়ি গিয়েছিলাম পড়া জানতে। পড়া জানতে, না আম চুরি করতে। না মা না, আমি ওসব করিনি বিশ্বাস করো। করোনি তো তা ভালো আজ তুমি ঐ বাইরেই থাকো। তোমার তো শরীর খারাপ ওখানেই শুয়ে থাকো। আর কতো মিথ্যা বলা শিখবি, তোর জন্য আজ আমাদের মাথা হেড। তুই পড়াশোনা ছেড়ে আম চুড়ি করে খাগে। এটাই তো চরম শাস্তি!
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register