Tue 04 November 2025
Cluster Coding Blog

T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় রূপক চট্টোপাধ্যায়

maro news
T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় রূপক চট্টোপাধ্যায়

অবরুদ্ধ রাশিমালা

১) ধর্ম এলো, অনাহার এলো, বিষাদ বিন্দু থেকে কাম এলো উষ্ণ নীল দেহে। আলগোছে রাজনৈতিক মৃতদেহ ভেসে এলো দুপুর শরীরে। মনে হলো এরা আরও কতো জন? তবু কাউকেই ফিরিয়েদি নি আমি। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত ছিলো, তবু টিনের দরজা ঠেলে চলে এলো ঘরের ভেতর। জাঁকিয়ে বসলো সব। টেবিল ঠুকে আমায় নিয়ে দান ধরলো। উল্টো গুঠিতে চাল দিতে আমায় নামিয়ে আনলো চতুর্বর্গ ঘরের মেঝেতে। কৃতদাস করে টানল শেকল। আমার ক্রোমোজোমাল গোপনীয় প্রতিবেদনগুলো উড়িয়ে দিল উত্তপ্ত হাওয়ায়। মিডিয়া মিডিয়ায় তখন ধ্বনিত হচ্ছিল আলোর বেণু। আকাশে উড়ছে ধর্ম পতাকা, নীচে রাজনৈতিক তরঙ্গ। আমার কবন্ধ দেহ তখনও মুন্ডু সন্ধানী! ২) পর্ণমোচী ঘুমের ভেতর জেগে আছি। চমৎকার একটা বৃষ্টি এইমাত্র দূরের ডাকে ফ্রক উড়িয়ে চলে গেলো। দুপুরের কিনারায় বাঁধা ক্লান্তির নৌকা দল দুলে দুলে জেগে থাকে অপসারিত সম্পর্কের ঘোলাজলে! নির্জলা মাছি এসে বসে অসমাপ্ত সংলাপের ঠোঁটে । ভনভন করে। অপরিচিত দ্বিপের কাছে ফেলে আসা সময় ও সুজন বুননের জলপিপি ঠোঁটে কি যে সারাদিন বুনে যায়, দিশাহারা নিয়েমের তালে কে জানে! শুধুই জেগে ওঠো পুরুষালী বুকে গাঁদার বাগান হলুদ বিদ্ধ হৃদয় নিয়ে। ৩) মুন্ডু বিক্রি হয়েগেছে অনেকদিক আগেই। এখন এই অবিক্রিত ধড় নিয়ে বিপাকে পড়েছি। ধড়ের পাতার পর পাতা উল্টে দেখি কোথায় কোথায় ইগোর হলুদ দাগ, চাঁদ দগ্ধ বয়সের চর্যাপদ আর আভূমি জংলা ঘাসের আড়ালে লুকানো আলোক প্রমাণের জোনাকিপোকা! থামভেঙে নরসিংহ অহংকার বেরিয়ে এসেছিস, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ধড়ের লোমকূপে সেই শিশির জমানো সকাল আর নেই, নেই নৌকা ভাসান নাবিকদের কোলাহল। রঙিন মাছের ঝাঁক, ঝামেলার বাজারে দরদাম করে টেনে আনা আনাহার ঢেকে খড়ের চলায় হলুদ শাড়ি মেলার পোট্রের্ট রূপসীও আর নেই। তাই সস্তায় নৌকা যোগ্য দেহটাকে নদীর কাছে বিক্রি করে আমিও জলবাসি হতে চাই। ৪) হৃদয়ে ভূমধ্যসাগর বেঁধে ঝাঁপ দেবো তোমার অতলে। দুরন্ত আইরিশ যুবতী দেহ থেকে খুলে নিয়েছে আত্মরক্ষার কবজ কুন্ডল! তার রূপটানে পড়ে আছে ভাঙা জাহাজ, মাস্তুলে সিগাল, লবন মাখানো ঝাউবন লৌহ নোঙর দিয়ে বিঁধেছে কাদা মাখা হৃদস্থল! মেঘলা টুপির আড়ালে নীলাদ্রি চোখ, কুয়াশার কোট থেকে বহুকষ্টে লম্বা পকেট হাতড়ে বার করি ঠান্ডা গোল চাঁদ সহ খুচরো মুদ্রা গুলি। এই শেষ সম্বল দিয়ে আর একবার দান ধরবো নিঃস্ব হবো ফকির নেশায়! ৫) তুমি চৌকাঠ পর্যন্ত এসে, আমি অশ্রু পর্যন্ত একটা নদীর গন্ডি টেনে বিদাই নেব, এই আর কি। বিগত ক্ষত গুলি ছোটো ছোটো লবন হ্রদের মতো জেগে থাক, পিঙ্গল সময়ের জানালায় বাজুক ঘুঘুর একলা রিংটোন! হ্রদের জলে বিলুপ্ত পানকৌড়ির কঙ্কাল ভাসে তার অস্থিমালায় রোদ পড়লে এখনো রামধনু শিউরে ওঠে, তরবারি হয়। এসব কাহিনী শৈবাল আড়ালেই রঙিন হয়ে থাক। তুমি বরং ব্যস্ত হাতে উনুন জুড়ে রন্ধন শৈলী সাজাও। মগ্নতা চিরকালই দহনের ওপর বর্ষা কালিন আবেশ আনে।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register