Tue 04 November 2025
Cluster Coding Blog

T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায়

maro news
T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায়

তসবি

হরিহর ঘাট থেকে প্রতিমার কাঠামো তুলে নিয়ে পোটুয়া পাড়ায় বিক্রি করে মকবুল। ওর বাবাও একাজ করত। খড়ের কাঠামো থেকে পাটের চুল, ফুল, শোলার গয়না মকবুল এত যত্নে পরিষ্কার করে যে এক্কেবারে নতুন মনে হয়। এমন কি ভেজা খড়ও শুকিয়ে থাকে, শুধু ভেজা দাগটা থেকে যায়। নামাজে গিয়ে বসলে মকবুল এক অচিন ঘোরের ভেতর তলিয়ে যায়। কাউকে কিছুই বোঝাতে পারেনা। মৌলবী সাহেব গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন ওর দিকে। মনে পড়েনা এমন কাউকে এযাবৎকালে দেখেছেন, নামাজ শেষে যার দু গাল বেয়ে গড়িয়ে নামছে আকুল অশ্রুধারা। সন্ধের পর মকবুল হরিহর ঘাটে বসে থাকে একা, ওপাড়ের আলোগুলো কালো জলে লম্বা আঁকাবাঁকা রেখায় গলে যেতে থাকে। এই জলেই তো কদিন পর প্রতিমা বিসর্জন হবে। এটা ভেবেই ও চনমনে হয়ে ওঠে। এই সময়টা ওর বড় প্রিয়। হঠাৎ ওর চোখে পড়ে গেল একটা কাঠামো ভেসে আছে আলোয় অন্ধকারে। ছোট্ট এক কৃষ্ণের মূর্তি। রং লেপেপুঁছে গেছে, তবু বংশীধারীর স্মিতহাসিটি কি স্পষ্ট দেখতে পেল মকবুল! বাড়িতে এসে কাঠামোটা রেখে জলটল মুছে বেরোতে যাবে, মা বলল – খেয়ে যা কিছু। আসছি। একটা ছোট্ট বাঁশি এনে লুকিয়ে রাখল। সেদিন রাতে দুধ জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে চতুর্দিক। সবাই ঘুমিয়ে। মসজিদের ছায়া বিরাট হয়ে উঠেছে। মকবুল বাঁশিটা নিয়ে মূর্তির হাতের মুদ্রার ফাঁকে এমনভাবে রাখল যেন তার ঠোঁট ছুঁয়ে থাকে। এরপর...সুরের প্লাবনে মকবুল ভেসে যায়...
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register