Tue 04 November 2025
Cluster Coding Blog

T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় রাজদীপ ভট্টাচার্য

maro news
T3 শারদ সংখ্যা ২০২২ || তব অচিন্ত্য রূপ || 26য় রাজদীপ ভট্টাচার্য

অসুরদলনী এক নারীর আখ্যান

১. তারপর অন্ধকার ও আলো নেমে এলো রহস্যময় শূন্যতার ভিতর থেকে ধূমায়িত অগুরু ও গুগগুল চোখ খুলেও আমরা তখন অন্ধ হয়ে আছি ব্রহ্মাণ্ড ফেটে গিয়ে প্রতিটি বিচ্ছিন্ন অঙ্গ ছিটকে সরে যাচ্ছে নীলিমার দিকে এর শেষ কোথায় কেউ জানে না নিঃসীম কালোর বুকের ভিতর থেকে উঠে এলো বিন্দুবৎ আলোর কণিকা কণা কণা আলো ছুটে গেল একে অপরের দিকে মহাকাশের তীব্র ধারালো সুপারসনিক নাদে তখন কেঁপে কেঁপে উঠছে চরাচর আলো জমে জমে কখন পুঞ্জ হয়েছে একটা অবয়ব ফুটে উঠছে ধীরে ধীরে মহাশূন্যে তখনও কোথাও দাঁড়াবার জায়গা নেই তীব্র উষ্ণতা ছুঁড়ে দিচ্ছে বিষাক্ত বাষ্প অসহায় হয়ে আমরা শুধু ভাবছি পৃথিবী বলে কাকে ডাকবো তবে! ২. একটা লাল নক্ষত্র মরার আগেও কী জীবন্ত হয়ে ওঠে! তাকে ঘিরে পাক খায় উদাস বাষ্পীয় তরল লাল শিখার ভিতর থেকে উঠে আসে ঝাঁঝালো বিষ আমাদের উজ্জ্বল নীল তারা তখন আত্মসম্ভূত তেজে ভরপুর অপরিসীম খিদে তার পেটে একটা প্রৌঢ় লাল নক্ষত্র তখন লুব্ধ খাবার কোটি কোটি গ্যালন অমৃত নিযুত বছরের অফুরান জ্বালানি মরার আগেও মরতে চায় না লৌহতপ্ত জ্যোতিষ্ক তীক্ষ্ণ দহে ভরে রাখে চৌম্বকীয় আবেশ নীলাভ নক্ষত্র তবু কাছে সরে আসে ছুঁড়ে দেয় বিভ্রম, লাস্য ও কটাক্ষ কয়েক মুহূর্তের জন্য লাল তারা ভাবে কোথাও প্রেম আছে, আগুনে ফুঁ দেয় ফুলকি উড়ে যায়, মহাজাগতিক ধুলো বেগুনি আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে আসে। ৩. মহাকাশের অলিন্দে তখন লুকোচুরি খেলছে নীলাম্বরী তারা প্রতিটি পদক্ষেপে তার তীব্র আত্মবিশ্বাস বিশ্বচরাচর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে যেন মহামায়া মৃদু হাসির মতো ছুঁড়ে দিচ্ছে ইন্দ্রজাল আপন দেহজাত তেজ রশ্মিমালা থেকে থেকে সঞ্চারিত হচ্ছে ঘন কৃষ্ণ প্রেক্ষাপটে লুব্ধ লাল তারা বারবার ধূম্রজালে নিপুণ আড়াল করছে নিজেকে আবারও প্রকাশিত হচ্ছে দিগন্তরেখায় নীলাভ নক্ষত্রের মায়া তাকে টানছে ক্রমশ মুছে যাচ্ছে স্থান ও কালের ব্যবধান লোলজিহ্বার মতো আকাশে চলকে উঠছে আলো ও আলেয়া মহাশূন্যের আর্তনাদে ভরে যাচ্ছে অনন্ত ও অসীম তীব্র তেজপুঞ্জে ধীরে ধীরে ডুবে যাচ্ছে লাল তারা পুষ্পবৃষ্টির মতো ছিটকে পড়ছে জ্বলন্ত তরল ও বাষ্প একটা গ্লব্ গ্লব্ ধ্বনি, একটা তীক্ষ্ণ সাইরেন, একটা ট্রেন চলে যাওয়ার ঘাতক ঝনঝনি একটা শ্রীল বাঁশির শব্দ ফালাফালা করে কাটছে একটা দিগন্তবিদারী ওঁ ধীরে ধীরে নিবে আসছে আর প্রশান্তি ছড়িয়ে পড়ছে ছায়াপথ ও নক্ষত্রলোকে ৪. তারপরও অযুত অযুত বছর ধরে সৃষ্টি চলেছিল তবু সেই নক্ষত্র বিনাশের গল্প প্রাগৈতিহাসিক ছায়ার মতো রয়ে যায় আণবিক ভ্রূণে, জিনের ইশারায় তার ছায়ায় শ্বাস নিতে নিতে আমাদের পূর্বপুরুষেরা লিখে ফেলে অসুরদলনী এক নারীর আখ্যান।
Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register