বড় দীঘিটার ঈশান কোণে
যেখানে মধু মোড়ল বাড়ি বানিয়েছে
সেখানে প্রতি বছর শীতের সময়
খেজুর গুড়ের মহল বসতো----
দিলদার চাচার মহল।
সারা এলাকা ম ম করতো
ফুটন্ত রসের গন্ধে ;এখন সে দিন গেছে,
হু হু করে বেড়িয়ে আসে নর্দমার
পচা গন্ধ।
সাঁওতাল পাড়া থেকে ভেসে আসতো
মাদলের একটানা শব্দ---- বাদনা পরব ।
গোলার পর গোলা দেশী মদে জেগে উঠতো
মরদের হাতের খেলা, মেয়েদের কোমর ধরে
তালে তালে ধীতাঙ ধীতাঙ নাচ ;
ও পাড়ার তিনটে মেয়ে স্কুলে পড়ায়
ভারত নাট্যম, কুচিপুড়ি তাদের পায়।
পৌষ সংক্রান্তিতে কাঁদর পাড়ে পৌষলা,
বিয়ে হওয়া মেয়েরা ভিন গাঁ থেকে গাঁয়ে
ফেরে পৌষলা করতে ;কয়েকটি পরিবার
মিলে ছোট ছোট দল ---
অজস্র প্রজাপতির মেলা
কেটে নেওয়া ধানের নাড়ার উপর
শতরঞ্জি বিছিয়ে রবীন্দ্র সংগীতের
অন্ত্যাক্ষরী।
সে পার্বণ গেছে; ডিজের গগন ভেদী চিৎকার
----- কুড়িটি টাকা।
গোবর নিকানো উঠোনে
লতা পাতা ফুলের আলপনা
শুকনো কাঠে আগুন ধরিয়ে
আগুন পোহাতে পোহাতে টুসু গান,
হিমেল হাওয়ায় সারা রাত জাগে বাগদী পাড়া,
আজ ও টুসু আমার রাজ রানী......
ভোর বেলা নদী-স্নান, রোদের সাথে মাখামাখি
তারপর সন্ধ্যায় ঘরে ফেরা , নুইয়ে পড়ে
সূর্য মুখীর পাপড়ি।
0 Comments.